ভারতের ব্যাংকগুলির ৭ হাজার কোটি আত্নসাৎ করতেই সেন্ট কিটসের নাগরিকত্ব নেন যতীন  

আট-ঘাট বেঁধেই ফ্রডের ব্যবসা পাতেন যতীন। যতীন ক্যারিবিয়ান দ্বীপরাষ্ট্র সেন্ট কিটস অ্যান্ড নেভিসের নাগরিক।দেশের সঙ্গে ভারতের বন্দি প্রত্যর্পণ চুক্তিও নেই।

Written by SNS Delhi | August 1, 2022 10:44 pm

প্রতীকী ছবি(Photo: IANS).

ফের উঠে এলো গুজরাটি সোনা-হিরে ব্যবসায়ী যতীন মেহতার নাম। একদা বিজেপির সহায়তায় কোটি কোটি টাকা ব্যাঙ্ক থেকে ঋণ নিয়ে, সেই টাকা সোনা রপ্তানির ছলে আত্মসাৎ করে ভারত থেকে পালিয়ে যাওয়া গুজরাটি সোনা-হিরে ব্যবসায়ী যতীন মেহতা ক্যারিবিয়ান দ্বীপপুঞ্জ সেন্ট কিটসের নাগরিকত্ব নিলেও তিনি নাকি আসলে লন্ডনে বহাল তবিয়তে রয়েছেন সপরিবারে।

এই দ্বীপরাষ্ট্রে বাসিন্দার সংখ্যা খুব কম। তবে এদের মধ্যে অধিকাংশই অতি ধনী। বাংলো, দামি গাড়ি, প্রাইভেট সি-বিচ, এমনকী প্রাইভেট জেট প্লেনও আছে তাঁদের।

বছরে নামমাত্র কর জমা দিতে হয়। বিনিময়ে দেশটি কোনও নাগরিকের ব্যক্তিগত জীবন অথবা রোজগারের রাস্তা নিয়ে মাথা ঘামায় না।

জানা গিয়েছে, আট-ঘাট বেঁধেই ফ্রডের ব্যবসা পাতেন যতীন। খাতায় কলমে যতীন ক্যারিবিয়ান দ্বীপরাষ্ট্র সেন্ট কিটস অ্যান্ড নেভিসের নাগরিক। এই দেশের সঙ্গে ভারতের বন্দি প্রত্যর্পণ চুক্তিও নেই।

ফলে চাইলেও কেউ আর এই প্রতারককে দেশে ফিরিয়ে আনতে পারবে না। জেনেই ভারতের বিভিন্ন ব্যাঙ্ক থেকে ঋণ নেন ও পালিয়ে যান।

জানা গিয়েছে, যতীনের স্ত্রী সোনিয়া, দুই ছেলে বিশাল এবং সুরজ তিনটি আলাদা বাড়িতে থাকেন। সেন্ট জনস উড, মাইদা ভ্যালে এবং হ্যাম্পস্টেড গার্ডেনে তাঁদের বাড়ি রয়েছে।

যতীনদের পারিবারিক সংস্থা হল উইনসাম ডায়মন্ডস। আর সেই কোম্পানির নামেই খাতা তৈরি করে যতীন ২০১৪ থেকে ২০১৮ সালের মধ্যে ভারত থেকে মধ্যপ্রাচ্যের বিভিন্ন দেশে পাচার করেছেন প্রায় ৭ হাজার কোটি টাকা মূল্যের হীরে এবং হীরের গয়না।

এই টাকার গোটাটাই তিনি পেয়েছিলেন ভারতের বিভিন্ন রাষ্ট্রায়ত্ত ও বেসরকারি ব্যাঙ্ক থেকে ঋণ হিসাবে। বিজেপি সরকারের মন্ত্রীদের সৌজন্যেই এই ঋণ পাওয়া অত্যন্ত সহজ হয়ে যায়।

আবার বিজেপি-র পরোক্ষ মদতেই টাকা আত্মসাৎ করে এক সময়ে ভারতের পাট চুকিয়ে সপরিবার সরে পড়তেও কোনও সমস্যা হয়নি।

নরেন্দ্র মোদি প্রধানমন্ত্রী হওয়ার পর থেকেই যতীন নিজের কারবার শুরু করেন বলে জানা যায়। যতীন কেন্দ্রীয় সরকারের কাছে নথি দেখাতেন যে তিনি ভারতের হীরে এবং সোনার গয়না শিল্পকে সমৃদ্ধ করছেন।

আসলে সোনা আমদানি করার পরে তার সঙ্গে হীরে মিলিয়ে গয়না বানিয়ে রপ্তানি করার নাটক সাজাতেন। গয়না তাঁর ইশারায় পৌঁছে যেত বিদেশে বিভিন্ন ভুয়া নামে খোলা নিজেরই কোম্পানিতে।

সাত হাজার কোটি টাকার সম্পত্তি বিদেশে পাচার করার পরে টাকা দিয়ে ক্যারিবীয় এলাকার সেন্ট কিটস অ্যান্ড নেভিসের নাগরিকত্ব নেন যতীন মেহতা।