• facebook
  • twitter
Friday, 5 December, 2025

নিজ্জর খুনে কানাডার দাবির পর সে দেশের ৬ কূটনীতিককে বহিষ্কার করল ভারত

খালিস্তানি জঙ্গি হরদীপ সিং নিজ্জরের মৃত্যুর ঘটনায় জড়িত কানাডায় ভারতের হাইকমিশনার। কানাডার প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডো এমন অভিযোগ করার পর পদক্ষেপ করল দিল্লি। ফের অবনতি ঘটল কূটনৈতিক সম্পর্কে।  ট্রুডোর অভিযোগ খারিজ করার পাশাপাশি ভারতের কর্মরত কানাডার ৬ শীর্ষ আধিকারিককে ডেকে পাঠানো হয়েছে। সোমবার সন্ধ্যায় ভারতীয় বিদেশ মন্ত্রকের তরফে জানানো হয়েছে, কানাডা থেকে ভারতীয় হাইকমিশনারকে ফিরিয়ে আনা হচ্ছে।

খালিস্তানি জঙ্গি হরদীপ সিং নিজ্জরের মৃত্যুর ঘটনায় জড়িত কানাডায় ভারতের হাইকমিশনার। কানাডার প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডো এমন অভিযোগ করার পর পদক্ষেপ করল দিল্লি। ফের অবনতি ঘটল কূটনৈতিক সম্পর্কে।  ট্রুডোর অভিযোগ খারিজ করার পাশাপাশি ভারতের কর্মরত কানাডার ৬ শীর্ষ আধিকারিককে ডেকে পাঠানো হয়েছে। সোমবার সন্ধ্যায় ভারতীয় বিদেশ মন্ত্রকের তরফে জানানো হয়েছে, কানাডা থেকে ভারতীয় হাইকমিশনারকে ফিরিয়ে আনা হচ্ছে। সেইসঙ্গে যে ভারতীয় কূটনীতিবিদদের নিশানা করা হয়েছে, তাঁদেরও ফিরিয়ে আনা হচ্ছে বলে জানিয়ে দিল ভারতীয় বিদেশ মন্ত্রক।  ভারত ভবিষ্যতে আরও কঠোর পদক্ষেপ করতে পারে, এমনটাও জানিয়ে দিয়েছেন এস জয়শংকর।
 
ভারতীয় হাইকমিশনার-সহ যে সমস্ত আধিকারিকদের বিরুদ্ধে অভিযোগের আঙুল উঠেছে তাদের সে দেশ থেকে প্রত্যাহার করে নেওয়া হবে। বিদেশমন্ত্রকের দাবি, কানাডার বর্তমান সরকার ভারতীয় কূটনীতিকদের নিরাপত্তা সুনিশ্চিত করতে পারবে এমন আস্থা আর নেই। দিল্লির অভিযোগ, নিজের রাজনৈতিক সুযোগ চরিতার্থ করতে খালিস্তানি জঙ্গিদের সুযোগ করে দিয়েছেন ট্রুডো। শুধু তাই নয়, গত সেপ্টেম্বরে সংসদে দাঁড়িয়ে ট্রুডো দাবি করেছিলেন, ‘বিশ্বস্ত গোয়েন্দা সূত্রে অভিযোগ’ মিলেছে যে নিজ্জরের খুনের ঘটনায় ভারতের যোগ আছে।  কানাডা সরকারের ওই আধিকারিককে ভারতের তরফে স্পষ্ট বলে দেওয়া হয়, এই ধরণের মন্তব্য মেনে নেওয়া হবে না। ভারত সরকার আগামীদিনে এই মন্তব্যের পরিপ্রেক্ষিতে কী পদক্ষেপ নেওয়া যায় তা দেখছে। 
 
কানাডার প্রধানমন্ত্রী এর আগে দাবি করেছিলেন যে, নিজ্জরের মৃত্যুর ঘটনায় জড়িত রয়েছেন ভারতীয় হাইকমিশনার। এই অভিযোগ নস্যাৎ করে বিদেশমন্ত্রকের তরফে বলা হয় কানাডার দাবি সম্পূর্ণ মিথ্যা। সেই অভিযোগের পরে এক বছর কেটে গেলেও সেই দাবির স্বপক্ষে ভারতকে কোনও প্রমাণ দিতে পারেননি ট্রুডো। ভারতের দাবি, ভোটব্যাঙ্কের রাজনৈতিক স্বার্থই এই ধরণের মন্তব্যের মূল কারণ। এখন নির্বাচন চলে আসায় নিজের ভোটব্যাঙ্ককে নতুন করে চাঙ্গা করতেই ফের এই ধরণের  অভিযোগ করা হচ্ছে। 
 
নিজ্জরের খুনের ঘটনায় কানাডায় নিযুক্ত হাইকমিশনার এবং কয়েকজন ভারতীয় কূটনীতিবিদকে ‘পারসন অফ ইন্টারেস্ট’ করা হয়েছে। অর্থাৎ তাঁদের কাছে এমন কোনও তথ্য থাকতে পারে, যা জঙ্গির হত্যাকাণ্ডের তদন্তে সাহায্য করতে পারে বলে দাবি করেছে কানাডা। এরপরেই তুমুল ক্ষোভ প্রকাশ করে ভারত। সোমবার দুপুরে কড়া ভাষায় বিবৃতি জারি করা হয়। 
 
এস জয়শঙ্করের মন্ত্রকের আরও দাবি, ২০২৩ সালের সেপ্টেম্বর মাসে প্রধানমন্ত্রী ট্রুডো ভারতের বিরুদ্ধে অভিযোগ তোলার পর থেকে ভারত সরকার বারবার অনুরোধ করে এসেছে এই সংক্রান্ত প্রমাণ দেওয়ার জন্য।  কিন্তু একাধিকবার অনুরোধ করা সত্ত্বেও ভারত সরকারের হাতে কোনও তথ্যপ্রমাণ তুলে দেওয়া হয়নি। এখন আবার তারা ভারতীয় হাইকমিশনারকে অভিযুক্ত করছে যা কোনও ভাবেই বরদাস্ত করা যায় না।  
 
ভারতীয় বিদেশ মন্ত্রকের তরফে জানানো হয়েছে, কানাডায় উগ্রপন্থা এবং হিংসার পরিবেশ তৈরি হয়েছে। ভারতীয় কূটনীতিবিদদের সুরক্ষা নিয়েও প্রশ্ন উঠছে। এই পরিস্থিতিতে তাঁদের ফিরিয়ে নেওয়া হচ্ছে।
 
ভারতের কাছে হরদীপ সিং নিজ্জর একজন জঙ্গি। ভারত তাকে আগেই জঙ্গি হিসেবে ঘোষণা করেছিল। দিল্লির অভিযোগ ছিল, কানাডায় বসে ভারতে একাধিক নাশকতামূলক কার্যকলাপকে অতীতে ইন্ধন জুগিয়েছে নিজ্জর। এর প্রতিবাদও করেছে ভারত।
 
২০২৩ সালের জুন মাসে হরদীপ সিং নিজ্জরকে খুন করা হয়। সেই ঘটনায় ভারতের গুপ্তচর সংস্থা জড়িত বলে দাবি করে কানাডা। পাল্টা ভারত জানায়, কানাডা প্রমাণ দিলে অবশ্যই খতিয়ে দেখা হবে। কিন্তু এখনও পর্যন্ত কানাডার তরফে কোনও প্রমাণ দেওয়া হয়নি বলে জানিয়েছে দিল্লি। ফলে ফের এই দুই দেশের কূটনৈতিক সম্পর্কে ফাটল ধরল ।  
 
সোমবার দিল্লিতে কানাডার কার্যনির্বাহী হাইকমিশনার স্টুয়ার্ট হুইলার-সহ ৬ কুটনীতিককে বহিষ্কার করা হয়েছে বলে ভারতের বিদেশ মন্ত্রকের তরফে জানানো হয়েছে। অন্যদিকে কানাডাও ৬ ভারতীয় কুটনীতিককে বহিষ্কার করেছে বলে দাবি।  
 

Advertisement

Advertisement