সন্ত্রাস দমনে একযোগে কাজ করবে ভারত ও চিন

উগ্রবাদ ও জঙ্গি তৎপরতা প্রতিরােধে ভারত-চিন যৌথভাবে কাজ করবে বলে চিনের প্রেসিডেন্ট ও ভারেতর প্রধানমন্ত্রী এক যৌথ বিবৃতিতে জানিয়েছেন।

Written by SNS Mamallapuram | October 13, 2019 11:40 am

প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ও চিনের রাষ্ট্রপতি শি জিনপিং। (Photo: IANS/PIB)

উগ্রবাদ ও জঙ্গি তৎপরতা প্রতিরােধে ভারত-চিন যৌথভাবে কাজ করবে বলে চিনের প্রেসিডেন্ট ও ভারেতর প্রধানমন্ত্রী এক যৌথ বিবৃতিতে জানিয়েছেন। অন্যদিকে চিনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং জানিয়েছেন, ভারত-চিনের মধ্যে বাণিজ্য, বিনিয়ােগ ও পরিষেবা সংক্রান্ত বিষয়ে নতুন পরিকল্পিত ব্যবস্থা রূপায়িত করা হবে। নতুন উদ্যোগের দায়িত্বে থাকবেন কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারমণ ও চিনের উপপ্রধানমন্ত্রী বলে বিদেশ মন্ত্রকের পক্ষে জানানাে হয়েছে।

প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মােদি ও চিনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংয়ের মধ্যে দুই দিনের আলােচনার পর মােট দশটি বিষয়ে দুই দেশের মধ্যে সিদ্ধান্ত হয়েছে। ‘চেন্নাই কানেক্ট’ শীর্ষক আলােচনায় দুই দেশের প্রধান একান্তে বৈঠক করেন। তাজ ফিসারম্যানস কোভ রিসর্ট অ্যান্ড স্পা তে এই বৈঠক হয়। দুই নেতা গলফ কার্টে সমুদ্রবেলায় ভ্রমণ করেন। দুই দেশের মধ্যে যাবতীয় মতপার্থক্য আলােচনার মাধ্যমে মিটিয়ে নেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়। কোনও কারণেই কোনও অসন্তোষ সৃষ্টি হয় এমন পরিস্থিতি পরিহার করা হবে।

উভয়েই উভয় দেশের প্রতি শ্রদ্ধাশীল হয়ে শান্তি ও স্থায়িত্বের বিষয়ে কাজ করবে ২০১৮ সালের উহান সম্মেলনের সনদ অনুযায়ী। উভয় নেতাই উভয় দেশের আতিথেয়তায় মুগ্ধতা প্রকাশ করেছেন। চিনের প্রেসিডেন্ট সদ্যসমাপ্ত বৈঠকের পর ভারতের আতিথেয়তা সম্পর্কে বলেন, এটা এক স্মরণীয় ঘটনা হয়ে থাকবে।

শুক্রবার প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মােদি চিনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংকে মল্লারপুরমের ঐতিহ্যমন্ডিত স্থানগুলি পরিদর্শনে নিয়ে যান। এসময় উভয় নেতাকে তামিলনাড়ুর সুস্বাদু সব পদ পরিবেশন করা হয়। সেখানে ভারতের বাণিজ্য ঘাটতি নিয়ে আলােচনা হয়। চিনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং চিনের সত্তরতম প্রজাতন্ত্র উদযাপন উপলক্ষে ভারত-চিন সম্পর্কের কুটনৈতিক সম্পর্ক আরও সুদৃঢ় করার ক্ষেত্রে উদ্যোগ নেওয়ার কথা বলেন। এক্ষেত্রে সীমান্ত সমস্যা এবং সাংস্কৃতিক বিষয়টিকেই অধিক গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে। এসময়ে দুই দেশের সাধারণ মানুষের মধ্যে ব্যক্তিগত সম্পর্ক আরও নিবিড় করারও একটা উদ্যোগ নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছে।

চিনের সরকারি সংবাদ মাধ্যম জিংহুয়া নিউজ এজেন্সি প্রেসিডেন্টের এই বার্তা প্রচার করেছে। এর আগে শুক্রবার চিনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং বিকেলে এয়ার চায়না বােয়িং ৭৪৭ বিমানে চেন্নাই বিমান বন্দরে অবতরণ কনে। তাঁকে লাল কার্পেট স্বাগত জানানাে হয়। শনিবার তিনি দুই দিনের ভারত সফর শেষে নেপালের উদ্দেশ্যে রওনা হয়ে যান। যাওয়ার আগে চিনের প্রেসিডেন্ট প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মােদিকে পরবর্তী আলােচনার জন্য চিনে যাওয়ার আমন্ত্রণ জানান। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মােদি চিনের প্রেসিডেন্টের আমন্ত্রণ গ্রহণ করেছেন বলে বিদেশ মন্ত্রকের পক্ষে জানানাে হয়েছে। তবে দিনক্ষণ এখনও ঠিক হয়নি বলে জানিয়েছেন বিদেশ মন্ত্রকের মুখপাত্র।

এর আগে পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের চিন সফরকালে চিনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং এক যৌথবিবৃতিতে জানিয়েছিলেন, পাকিস্তানের যেকোনও গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে চিন সর্বতােভাবে সাহায্য করবে। কাশ্মীর নিয়ে রাষ্ট্রসংঘের সনদ অনুযায়ী মীমাংসা হওয়া উচিত বলেও তিনি মন্তব্য করেছিলেন। এতে ভারত-চিনের মধ্যে কুটনৈতিক সম্পর্কে একটা ঠাণ্ডা লড়াই শুরু হয়ে যায়। কিন্তু ভারত তার উত্তরে জানায়, কুটনৈতিক ভারতের অবিচ্ছেদ্য অঙ্গ। চিন সংশ্লিষ্ট বিষয়ে সম্যকভাবে অবগত আছে। তাই ভারতের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে অন্য দেশের মন্তব্য করা ভারত সহ্য করবে না।

এছাড়া, ভারত তার রাজ্যগুলির পুনর্বিন্যাসে কী ব্যবস্থা গ্রহণ করবে তাও অভ্যন্তরীণ ব্যাপার সেখানে অন্য কোনও দেশের মতামতের কোনও প্রশ্নই নেই। দুই দিন পরেই ভারত সফরে এসে চিনের প্রেসিডেন্ট ভারতের সঙ্গে কূটনৈতিক সম্পর্কের উন্নতির বিষয়ে দৃঢ় মত প্রকাশ করেছেন। তবে কাশ্মীর প্রসঙ্গে দুই নেতার মধ্যে কোনও আলােচনা হয়নি বলে জানা গিয়েছে।