পহেলগামে ভয়াবহ হামলার জেরে এবার পাকিস্তান থেকে সমস্ত ধরনের আমদানি নিষিদ্ধ করল ভারত সরকার। সরাসরি হোক কিংবা ঘুরপথ, কোনওভাবেই পাকিস্তানি পণ্য এ দেশে প্রবেশ করতে পারবে না, স্পষ্ট জানিয়ে দিল বাণিজ্য মন্ত্রক। কেন্দ্রের বাণিজ্য মন্ত্রকের তরফে এক বিজ্ঞপ্তি মারফত একথা জানানো হয়েছে। বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, ‘পাকিস্তানে তৈরি কোনও পণ্য সরাসরি বা ঘুরপথে ভারতে আমদানি করার ক্ষেত্রে অবিলম্বে নিষেধাজ্ঞা জারি করা হচ্ছে। পরবর্তী নির্দেশিকা জারি করা পর্যন্ত এই নিষেধাজ্ঞা কার্যকর থাকবে।’ বিজ্ঞপ্তিতে ডিরেক্টর জেনারেল অফ ফরেন ট্রেড জানান, দেশ তথা দেশবাসীর নিরাপত্তা এবং সরকারি নীতির স্বার্থে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। যদি কোনও জরুরি প্রয়োজনে পাকিস্তান থেকে আমদানি করতে হয়, তাহলে ভারত সরকারের আগাম অনুমতি নিতে হবে।
পহেলগামে সন্ত্রাসবাদী হামলায় ২৬ জন নিরীহ মানুষের প্রাণ চলে গিয়েছে। এই সন্ত্রাসবাদে মদত দেওয়ার অভিযোগে পাকিস্তানের নিন্দা করে ভারতের পাশে দাঁড়িয়েছে বিশ্বের বহু দেশ। এই হামলার পাল্টা পাকিস্তানের বিরুদ্ধে একাধিক পদক্ষেপ করেছে ভারত। স্থগিত করে দেওয়া হয়েছে সিন্ধু জলবন্টন চুক্তি। এই পরিস্থিতিতে আরও কড়া পদক্ষেপ করল ভারত। আন্তর্জাতিক বাণিজ্য সম্পর্কের বিশেষজ্ঞদের একাংশের মতে, পাকিস্তান থেকে সরাসরি খুব বেশি পণ্য ভারতে আসে না। তবে ঘুরপথে দুবাই হয়ে কিছু পণ্য ভারতে আসে। বিশেষ করে পোশাক, মশলা বা ছোট যন্ত্রাংশের মতো কিছু পণ্য ঘুরপথে ভারতীয় বাজারে প্রবেশ করে থাকে। কারও কারও মতে, ঘুরপথেও যাতে কোনও পাকিস্তানি পণ্য ভারতে প্রবেশ না করে, তা নিশ্চিত করতেই এই নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে মোদী সরকার।
এই নির্দেশিকা জারির পর দুই দেশের বাণিজ্যিক সম্পর্ক স্থগিত হওয়ার পথে। তথ্য মাফিক, ২০২৪-২৫ অর্থবর্ষে পাকিস্তানে প্রায় ৪৫০ মিলিয়ন ডলারের পণ্য রপ্তানি করেছে ভারত। অন্যদিকে, গত বছরের এপ্রিল থেকে চলতি বছরের জানুয়ারির মধ্যে পাকিস্তান থেকে মাত্র ৪ লক্ষ ২০ হাজার ডলারের পণ্য আমদানি করেছিল ভারত। এপ্রিল থেকে জানুয়ারি মাস পর্যন্ত পাকিস্তান থেকে ফল, বাদাম, বেশ কিছু তৈলবীজ, ঔষধি গাছ, এবং জৈব রাসায়নিক আমদানি করেছে ভারত। এবার সেই আমদানির উপর নিষেধাজ্ঞা জারি করল মোদী সরকার।
প্রসঙ্গত, ২০১৭-১৮ অর্থবর্ষে ভারতে প্রায় ৪ হাজার ১৩১ কোটি টাকার পণ্য রপ্তানি করে ইসলামাবাদ।সেই তালিকায় ছিল ফল ও সিমেন্ট। কিন্তু ২০১৯ সালে পুলওয়ামায় জঙ্গি হানার পর থেকে ভারত এবং পাকিস্তানের বাণিজ্যিক সম্পর্কে ক্রমশ অবনতি হতে শুরু করে। ওই সময়ে ফল, সিমেন্ট, পেট্রোপণ্য, আকরিক-সহ পাকিস্তান থেকে আসা বেশ কিছু পণ্যের উপর আমদানি শুল্ক ২০০ শতাংশ পর্যন্ত বৃদ্ধি করেছিল ভারত। এরপর পাঁচের পৃষ্ঠায়