আমেরিকার প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প আমেরিকায় অবৈধ অভিবাসী ভারতীয় নাগরিকদের বিমানে তুলে দিয়ে নিজেদের দেশে ফেরত পাঠিয়েছেন। বাংলাদেশি অনুপ্রবেশকারীদের ক্ষেত্রে এই একই পদক্ষেপ করতে ভারতের অসুবিধা কোথায়?
বিচারপতি এ এস ওকা এবং বিচারপতি উজ্জ্বল ভূইঞার বেঞ্চ দু’সপ্তাহের মধ্যে অসমের ট্রানজিট ক্যাম্পে আটক ৬৩ জন বাংলাদেশি নাগরিককে বাংলাদেশে ফেরত পাঠানোর জন্য প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ করার নির্দেশ দিয়েছে কেন্দ্র এবং অসম সরকারকে। বেঞ্চের প্রশ্ন, ‘ট্রাম্প যদি অবৈধ অভিবাসীদের ক্ষেত্রে এমন দ্রুত পদক্ষেপ করতে পারেন, তবে মোদী সরকার পারছে না কেন?’ অসমের ট্রানজ়িট ক্যাম্পে আটক ৬৩ জন বাংলাদেশি নাগরিকের প্রত্যর্পণ সংক্রান্ত মামলায় শুক্রবার এই প্রশ্ন তোলে সুপ্রিম কোর্ট। কেন্দ্রীয় সরকারের তরফে ২০০৯ সালে এক বিজ্ঞপ্তি জারি করা হয়। সেখানে অনুচ্ছেদ ২-এর ৫ নং ধারায় বলা হয়েছে, বিদেশি সন্দেহে কোনও ব্যক্তিকে আটক করার পর তার পরিচয় যাচাই করতে হবে এবং তার ভিত্তিতে প্রত্যর্পণের প্রক্রিয়া শুরু করতে হবে। ৩০ দিনের মধ্যে এই প্রক্রিয়া শেষ করতে হবে। বিজ্ঞপ্তি জারির পরও গত কয়েক বছর ধরে ৬৩জন বাংলাদেশি নাগরিককে অসমের ট্রানজিট ক্যাম্পে আটকে রাখা হয়েছে বলে শীর্ষ আদালতে অভিযোগ দায়ের করা হয়েছিল। সুপ্রিম কোর্ট অসম সরকারকে মনে করিয়ে দিয়েছে যে, বিনা বিচারে অনির্দিষ্ট কাল ধরে আটকে রাখার ঘটনা ভারতীয় সংবিধানের ২১ নম্বর ধারার পরিপন্থী।
অসমের ট্রানজিট শিবিরে আটক ৬৩ জনকে কেন্দ্র বাংলাদেশি বলে চিহ্নিত করা হলেও তাঁরা যথাযথভাবে কোন দেশের, তা প্রমাণের অভাবে জানতে পারেনি সরকার। যাঁদের বাংলাদেশি বলা হয়েছে, ঢাকা তাঁদের বাংলাদেশের নাগরিক বলে মানতে অস্বীকার করেছে। আটকদের ঠিকানাও জানা সম্ভব হয়নি এখনও। সুপ্রিম কোর্ট এই প্রসঙ্গে বলেছে, কাউকে বিদেশি হিসেবে চিহ্নিত করা হলেও তাঁকে দ্রুত নিজের দেশে ফেরানোর দায়িত্ব সরকারের। ঠিকানা না জানাটা কোনও কারণ হতে পারে না। আটক অবৈধ অভিবাসী যে দেশের নাগরিক, সেখানকার রাজধানীতে ফেরত পাঠানো হোক। বুধবার আমেরিকায় অবৈধ অভিবাসী ভারতীয় নাগরিকদের মোট ১০৪ জনকে নিজের দেশে ফেরত পাঠানো হয়। তাঁদের হাতকড়া ও শিকল পরিয়ে বিমানে তোলা হয়েছিল বলে অভিযোগ। সুপ্রিম কোর্টে বাংলাদেশি অনুপ্রবেশকারীদের নিয়ে মামলার শুনানিতে এবার উঠে এল ট্রাম্প সরকারের পদক্ষেপের প্রসঙ্গ।
উল্লেখ্য, আগামী ১২ তারিখ বুধবার মার্কিন সফরে উড়ে যাচ্ছেন নরেন্দ্র মোদী। দু’দিনের সফরে প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে সাক্ষাৎও করবেন তিনি। ভারতের উপর শুল্ক চাপানো নিয়ে ট্রাম্পের হুমকি, অবৈধ ভারতীয়দের শিকল ও হাতকড়া পরিয়ে দেশে ফেরত পাঠানোর প্রসঙ্গ তুলবেন কি না সে প্রশ্ন ঘুরছে রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞ মহলে।