রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোস ‘ জার্নি অব মেইলস’ নামে এক প্রদর্শনীরও উদ্বোধন করেন। যা আজ শুক্রবার থেকে আগামী মঙ্গলবার পর্যন্ত সাধারণ মানুষ ঘুরে দেখতে পারবেন। যেখানে উঠে আসবে প্রাচীন সময়ে চিঠি আদান-প্রদানে পালকি, গরুর গাড়ি, রেল কোচ এবং প্রথম চিঠি পরিবহনকারী উড়োজাহাজের সচিত্র কাহিনি। তাছাড়া চলন্ত ট্রামে প্রদর্শনীর আয়োজন করেছে কলকাতা জিপিও। পাশাপশি, এদিনের অনুষ্ঠানে রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোস কলকাতা জিপিও’র একটি গোল্ড প্লেটেড রেপ্লিকা উন্মোচন করেন সাধারণ মানুষের জন্য।  এদিনের অনুষ্ঠানে উপস্থিত ভারতীয় ডাক বিভাগের সচিব স্ত্রীর বিনীত পান্ডে ভারতীয় ডাক বিভাগের ঐতিহ্যকে তুলে ধরেন। নিজের স্মৃতিচারণা করেন রাজ্যপালও। তাঁর কথায়, “আমার সাথে ডাক বিভাগের রক্তের সম্পর্ক রয়েছে। পশ্চিমবঙ্গে রাজ্যপাল হিসেবে আমি অনেক জায়গায় আমন্ত্রণ পায়, কিন্তু আজকের এই অনুষ্ঠান আমার কাছে খুবই তাৎপর্যপূর্ণ। কারণ আমার মা একজন পোস্ট মিস্ট্রেস ছিলেন। তখন আমাদের ওখানে (কেরালা) নারীশিক্ষার বিস্তারের উপর জোর দেওয়া হতো না। কিন্তু আমার মা পড়াশোনা চালিয়ে যান। তিনি মাত্র ১৮ বছর বয়সে পোস্ট অফিসে চাকরি পান”। পাশাপাশি, তাঁর মা পদ্মাবতী আম্মার নাম অনুসারে পদ্মা পুরষ্কার দেওয়ার কথাও জানান তিনি। পশ্চিমবঙ্গ পোস্ট সার্কেলের মধ্যে থাকা প্রথম ১০টি পোস্ট অফিসকে ১ লক্ষ টাকা করে দেওয়ার ঘোষণা করেন রাজ্যপাল।
 
প্রসঙ্গত, কলকাতা জিপিও এর যাত্রা শুরু হয়েছিল ১৭৭৪ সালের ৩১ মার্চ, তৎকালীন গভর্নর জেনারেল ওয়ারেন হেস্টিংসের হাত ধরে ফোর্ট উইলিয়ামে। তারপর ঠিকানা বদলেছে বহুবার। অবশেষে ১৮৬৮ সালে স্থায়ী ঠিকানা পায় কলকাতা জিপিও বা জেনারেল পোস্ট অফিস। সেই ১৮৬৮ থেকে ২০২৪ একই ভাবে সাধারণ মানুষকে পরিষেবা দিয়ে আসছে ঐতিহ্যশালী এই ভবন। সামনে ৩১ মার্চ তারই ২৫০ বছর পূর্তি। চিঠি আদান-প্রদান থেকে শুরু করে মানি অর্ডার সব দিকেই এগিয়ে রয়েছে ভারতীয় ডাক বিভাগ। যদিও সময়ের সঙ্গে অবশ্য আগের থেকে অনেকটাই কমে এসেছে চিঠি আদান-প্রদানের প্রবণতা। সাধারণ মানুষ এখন মুঠো ফোনে মুহূর্তের মধ্যে বিশ্বের যেকোনো প্রান্তে পৌঁছে যেতে পারে। কিন্তু তাতেও নিজের ঐতিহ্য ধরে রেখেছে ঐতিহাসিক এক বিল্ডিং। শুরু করা হয়েছে পার্সেল ভেলিভারি এবং পোস্ট পেমেন্ট ব্যাঙ্কের মতো পরিষেবাও।