কাঠুয়া মামলায় গঠিত সিটের বিরুদ্ধেই এবার এফআইআরের নির্দেশ

জম্মু-কাশ্মীর পুলিশের যে স্পেশাল ইনভেস্টিগেশন টিম বা সিট চাঞ্চল্যকর কাঠুয়া ধর্ষণ মামলার তদন্তে ছিল, তার বিরুদ্ধেই এবার এফআইআর দায়েরের নির্দেশ দিল আদালত।

Written by SNS Jammu | October 24, 2019 2:26 pm

কাঠুয়া কাণ্ডের মূল অভিযুক্ত সাঞ্জি রাম (File Photo: AFP)

জম্মু-কাশ্মীর পুলিশের যে স্পেশাল ইনভেস্টিগেশন টিম বা সিট চাঞ্চল্যকর কাঠুয়া ধর্ষণ মামলার তদন্তে ছিল, তার বিরুদ্ধেই এবার এফআইআর দায়েরের নির্দেশ দিল আদালত। মঙ্গলবার এই মর্মে নির্দেশ দেয় জম্মু আদালত।

কাঠুয়ার আট বছরের গুজ্জর বালিকাকে ধর্ষণ করে নৃশংসভাবে খুন করা হয়েছিল। কাশ্মীর পুলিশের ছয় সদস্যের একটি টিম গঠন করা হয়েছিল চাঞ্চল্যকর এই ধর্ষণ-খুনের মামলায়। সিটের এই ছয় সদস্যের রুিদ্ধেই এদিন এফআইআর করার নির্দেশ দিয়েছে আদালত।

জম্মুর মুখ্য বিচার বিভাগীয় আদালতের বিচারক মঙ্গলবার, ২২ অক্টোবর নির্দেশ দেন ছয় পুলিশকর্মীর বিরুদ্ধেই মামলা দায়ের করতে হবে। এই ছ’জন হলেন আর কে জল্লা (প্রাক্তন এসএসপি, অপরাধ দমন শাখা, জম্মু), পিরজাদা নাভিদ (অপরাধ দমন শাখার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার, জম্মু), শ্বেতাম্বরী শর্মা (ডেপুটি পুলিশ সুপার, অপরাধ দমন শাখা, জম্মু), নাসির হুসেন (ডেপুটি পুলিশ সুপার, অপরাধ দমন শাখা, জম্মু), আরফান ওয়ানি (সাব-ইনসপেক্টর, অপরাধ দমন শাখা, জম্মু) ও কেওয়াল কিশােরে (অপরাধ দমন শাখা)।

সিটের এই পুলিশ অফিসারদের বিরুদ্ধে অভিযােগ, কাঠুয়ায় অভিযুক্ত বিশাল জঙ্গোত্রার বিরুদ্ধে মিথ্যে সাক্ষ্য দিতে সাক্ষ্যদানকারীদের উপর তারা বলপ্রয়ােগ করেন। জোর করে মিথ্যে বলতে বাধ্য করেন। শারীরিক অত্যাচারও করা হয়।

দু’পাতার রায়ে, আদালত জম্মুর এসএসপিকে এফআইআর দায়েরের নির্দেশ দেন। ৭ নভেম্বর এই মামলার পরবর্তী শুনানি রয়েছে। তার আগে এই আদালতের নির্দেশ কার্যকর করতে বলা হয়েছে আদালতের এই নির্দেশ জম্মু পুলিশের জন্য অবশ্যই অস্বস্তির কারণ। কাশ্মীরে কন্যাশিশু ধর্ষণ ও হত্যা মামলায় চলতি বছরের ১০ জুন ছ’জনকে দোষী সাব্যস্ত করে আদালত। ঘটনার শিকার আট বছরের শিশুটি যাযাবর উপজাতির। ২০১৮ সালের জানুয়ারিতে কাঠুয়া শহরের কাছে জঙ্গলে তার মৃতদেহ পাওয়া গিয়েছিল।

এই ঘটনায় যে আট জনের বিরুদ্ধে অভিযােগ আনা হয়েছিল, কট্টর ডানপন্থী হিন্দুগোষ্ঠীগুলি তাদের মুক্তি দাবি করার পর এ নিয়ে ব্যাপক হইচই শুরু হয়েছিল। অভিযুক্ত আটজনের কেউই তাদের বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ স্বীকার করেনি। এদের মধ্যে ছিল একজন অবসরপ্রাপ্ত সরকারি অফিসার, চার পুলিশ অফিসার এবং একজন বালক।

ঘটনার শিকার শিশুটির মা দু’জন আসামির সর্বোচ্চ সাজা ফাসি দেওয়ার দাবি জানিয়েছে। এই দু’জন হল অবসরপ্রাপ্ত সরকারি অফিসার সানজি রাম এবং পুলিশ অফিসার দীপক খাজুরিয়া। এই দু’জনকেই ঘটনার মূল পরিকল্পনাকারী বলে তিনি দাবি করেন। কাঠুয়া ভারতের সবচেয়ে আলােচিত একটি মামলা। এই ঘটনা নিয়ে যে শােরগােল শুরু হয়, তার জেরে ভারতে একটি নতুন আইন করা হয়, যাতে বারাে বছরের কম বয়সী শিশু ধর্ষণের ঘটনায় দোষীদের মৃত্যুদণ্ডের সাজার কথা বলা হয়েছে। কাইয়ায় আট বছরের মেয়েটিকে যে নৃশংসতার শিকার হতে হয়েছিল, তার বিরুদ্ধে তীব্র ধিক্কার ওঠে দেশজুড়ে। ঘটনার ব্বিরণ প্রকাশিত হওয়ার পর, মানুষ শিউরে উঠেছিল।

বিজেপির দুই মন্ত্রী এই ঘটনায় গ্রেফতার হওয়া আসামিদের সমর্থনে সমাবেশে যােগ দিলে, সমাজের সর্বস্তরে বিষয়টি নিয়ে তীব্র ক্ষোভ দানা বাঁধে। মামলার তদন্তে জানা যায়, অভিযুক্তদের সঙ্গে যাযাবর মুসলিম উপজাতির জমি নিয়ে দ্বন্দ্ব ছিল। তদন্তকারীরা আদালতে জানান, গুজ্জর সম্প্রদায়কে ভয় দেখানাের জন্যই আট বছরের নিস্পাপ মেয়েটিকে টার্গেট করা হয়েছিল।