জম্মু–কাশ্মীরের রাজৌরির বাধাল গ্রামে অজানা জ্বরের আতঙ্ক। এখর্যও পর্যন্ত এই অজানা জ্বরে মৃত্যু হয়েছে ১৭ জনের। আক্রান্তের সংখ্যাও বাড়ছে লাফিয়ে। এখনও পর্যন্ত ৩৮ জন এই রোগে আক্রান্ত হয়েছেন বলে খবর পাওয়া গেছে। এখনও পর্যন্ত ঠিক কোন রোগের কারণে মৃত্যু হচ্ছে বা মানুষ আক্রান্ত হচ্ছেন, তা বুঝতে পারছেন না চিকিৎসকরা।
ডিসেম্বর মাসের শুরুর সময় থেকে এই অজানা জ্বরের প্রাদুর্ভাব দেখা যায়। এখনও এই জ্বরে আক্রান্তের খবর আসছে। এই ঘটনায় ইতিমধ্যেই উচ্চ পর্যায়ের কমিটি তৈরির নির্দেশ দিয়েছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। রবিবার কমিটির প্রতিনিধিরা বিষয়টি সরেজমিনে খতিয়ে দেখতে কাশ্মীরের রাজৌরিতে পৌঁছন। এই জ্বরের কারণ অনুসন্ধানে রয়েছে পিজিআইএমইআর চণ্ডীগড়, ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অফ ভাইরোলজি এবং ন্যাশনাল সেন্টার ফর ডিজিজ কন্ট্রোল। কিন্তু এখনও পর্যন্ত জ্বরের কোনও সদুত্তর মেলেনি। গোটা রাজৌরি জেলা জুড়ে সতর্কতা জারি করেছে প্রশাসন।
রাজৌরির এক সরকারি আধিকারিক বলেন, ‘আমরা সামগ্রিক পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করছি। আশা করছি আগামী ৮ থেকে ১০ দিনের মধ্যে এই রোগ এবং মৃত্যুর কারণের একটি প্রাথমিক রিপোর্ট পাওয়া যাবে। চিকিৎসার পাশাপাশি ডোর–টু–ডোর কাউন্সেলিং এবং নজরদারিও চলছে। সম্প্রতি আইসিএমআর নমুনা সংগ্রহ করে নিয়ে গিয়েছে।’ জেলা প্রশাসন ছাড়াও স্বাস্থ্য দপ্তর এবং পুলিশও ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে।
স্থানীয় প্রশাসনের তরফে জানানো হয়েছে, এলাকা থেকে পানীয় জলের নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছে। তা ন্যাশনাল সেন্টার ফর ডিজিজ কন্ট্রোল, পুনের ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অফ ভাইরোলজিতে পরীক্ষাও করা হয়েছে। কিন্তু সেখানে কোনও ব্যাকটেরিয়া বা ভাইরাসের হদিশ পাওয়া যায়নি। তবে নমুনায় নিউরোটক্সিন মিলেছে। চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, সাপ, বিছের বিষে নিউরোটক্সিন থাকে। এর প্রভাবে মস্তিষ্ক, মেরুদণ্ড এবং স্নায়ুকোষ ক্ষতিগ্রস্ত হয়।
উদ্বেগের বিষয় হল, মৃতদের মধ্যে ৭ জনের বয়সই ১৪ বছর বা তার কম। ঠিক কী রোগ হয়েছিল তাদের সেটা কেউই নিশ্চিত করে বলতে পারছে না। নতুন কোনও ভাইরাসের প্রকোপে এমন ঘটনা ঘটছে, নাকি এর পিছনে জঙ্গিদের কোনও যড়যন্ত্র রয়েছে, সেই প্রশ্নও উঠতে শুরু করেছে।