• facebook
  • twitter
Wednesday, 7 May, 2025

নির্বাচন কমিশন ‘আপস’ করেছে, আমেরিকা থেকে ফের তোপ দাগলেন রাহুল গান্ধী

দু'দিনের আমেরিকা সফরে রাহুল গান্ধী রোডে-তে ব্রাউন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক-পড়ুয়াদের সঙ্গেও এক অনুষ্ঠানের মিলিত হবেন।

ফাইল ছবি

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের বস্টন থেকে ফের বিস্ফোরক মন্তব্য রাহুল গান্ধীর। এবার তাঁর নিশানায় ভারতের নির্বাচন কমিশন। রবিবার লোকসভার বিরোধী দলনেতা তথা কংগ্রেস সাংসদ রাহুল গান্ধী বস্টনে প্রবাসী ভারতীয়দের উদ্দেশ্যে ভাষণ দেওয়ার সময় অভিযোগ করেন যে, নির্বাচন কমিশন ‘আপস’ করেছে। তাঁর আরও দাবি, ‘ব্যবস্থায় বড়সড় ভুল কিছু আছে।’ 

মহারাষ্ট্র বিধানসভা নির্বাচনের উদাহরণ তুলে ধরে রাহুল বলেন, ‘মহারাষ্ট্রে মোট মানুষের চেয়ে বেশি মানুষ ভোট দিয়েছেন। তাঁর অভিযোগ, নির্বাচনের দিন বিকেল সাড়ে পাঁচটা নাগাদ যে ভোটার সংখ্যা কমিশনের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছিল, রাত সাড়ে সাতটার মধ্যে সেই সংখ্যার সঙ্গে হঠাত যুক্ত হয়ে যায় আরও ৬৫ লক্ষ ভোট, যা শারীরিকভাবে অসম্ভব। এটা আমাদের কাছে খুব স্পষ্ট যে নির্বাচন কমিশন আপস করেছে, ব্যবস্থায় খুব ভুল কিছু আছে। ‘ রাহুল বলেন, ‘একজনের ভোট দিতে ন্যূনতম ৩ মিনিট সময় লাগার কথা। আপনার যদি সামান্য অঙ্কের জ্ঞান থাকে, তাহলেই বুঝতে পারবেন, ভোট শেষ হতে রাত ২টো বেজে যেত। কিন্তু, তা হয়নি।’

রাহুলের অভিযোগ, ‘আমরা যখন ভোটদানের ভিডিওগ্রাফি চেয়েছিলাম, তখন নির্বাচন কমিশন তা দিতে অস্বীকার করে। শুধু তাই নয়, ওরা আইনই বদলে দিয়েছে যাতে আমাদের ভিডিও চাওয়ার কোনও রাস্তা আর খোলা না থাকে।’

এদিকে রাহুল এবং বিরোধীরা এর আগেও এই একই অভিযোগ নিয়ে সরব হয়েছিল। তবে সেই কারচুপির অভিযোগ উড়িয়ে দিয়েছে নির্বাচন কমিশন। কমিশনের তরফে জানানো হয়েছে, রাহুলের অভিযোগগুলি ভিত্তিহীন এনও প্রক্রিয়াগত ভিত্তিতে নয়।

রাহুল গান্ধী এর আগেও বিদেশের মাটি থেকে ভারতের গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠান নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন। নির্বাচন কমিশনের ভূমিকা নিয়ে সরাসরি এই ধরণের মন্তব্য করায় রাজনৈতিক মহলে ফের বিতর্কের সৃষ্টি হয়েছে। বিশেষ করে যখন দেশে লোকসভা নির্বাচন আসন্ন, সেই সময় তাঁর এই ধরণের মন্তব্যকে বিজেপি দেশবিরোধী প্রচার বলে চিহ্নিত করেছে।বিরোধী দলনেতার বর্তমান মার্কিন সফরকে বিজেপি ‘ভারত বদনাম যাত্রা’ নাম দিয়েছে। 

রাহুলের এই অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে মহারাষ্ট্রের মুখ্যমন্ত্রী দেবেন্দ্র ফড়ণবীশ বলেছেন, ‘এটা খুবই দুঃখজনক। রাহুল গান্ধী বিদেশে গিয়ে এমন প্রতিষ্ঠানগুলি সম্পর্কে মিথ্যা প্রচার করেন যা দেশের সংবিধান দ্বারা সৃষ্ট। তাদের অপমান করার চেষ্টার পাশাপাশি রাহুল গণতন্ত্র নিয়ে প্রশ্ন তোলার চেষ্টা করেছেন। আমার মনে হয় বারবার নির্বাচনে হেরে যাওয়ায় তাঁর উপর যে চাপ পড়েছে, তার জেরেই তিনি এই ধরনের কাজ করছেন। এই ধরনের কাজ করার বদলে তিনি যদি জনগণের কাছে যান এবং জনগণের আস্থা ফিরে পান, তাহলে তিনি নির্বাচনে জিততে পারবেন।’

বিজেপি নেতা সম্বিত পাত্র বলেন, দীর্ঘদিন ধরে তিনি এই একই কাজ করে চলেছেন। ইডি ইতিমধ্যেই রাহুল ও প্রাক্তন কংগ্রেস সভানেত্রী সোনিয়া গান্ধীর বিরুদ্ধে চার্জশিট দিয়েছে। দেশের টাকা লুটের জন্য তাঁদের জেলেও যেতে হতে পারে।

পাল্টা কংগ্রেস শিবিরের দাবি, গণতন্ত্রকে রক্ষার স্বার্থেই প্রশ্ন তোলা জরুরি। কংগ্রেসের বক্তব্য, বিদেশে গিয়ে বিজেপি-আরএসএসের সমালোচনা আর ভারতের নিন্দা আলাদা। বিজেপি-আরএসএস মানেই ভারত নয়। তা ছাড়া রাহুল কোনও দিনও বিদেশে ভারতের নিন্দা করেননি। 

দুদিনের আমেরিকা সফরে রাহুল গান্ধী রোডে-তে ব্রাউন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক-পড়ুয়াদের সঙ্গেও এক অনুষ্ঠানের মিলিত হবেন। এছাড়াও প্রবাসী ভারতীয় কয়েকটি সংগঠনের সদস্য, পদাধিকারী এবং ইন্ডিয়ান ওভারসিজ কংগ্রেসের সদস্যদের সঙ্গেও মতবিনিময় করবেন বলে জানা গিয়েছে।