ফের বিজেপির ডবল ইঞ্জিন রাজ্য গোয়ার প্রশাসনিক ব্যর্থতায় শেষ হল একাধিক প্রাণ। গোয়ার শিরগাঁও লাইরাই দেবী মন্দিরে পদপিষ্ট হয়ে ফের প্রাণহানি! অন্তত ছ’জনের মৃত্যুর কথা নিশ্চিত করেছে প্রশাসন। শুক্রবার গভীর রাত থেকে ওই মন্দিরের বার্ষিক শোভাযাত্রা উপলক্ষে বহু মানুষ জমায়েত হয়েছিলেন। সেখানেই ভিড়ের চাপে পদপিষ্টের পরিস্থিতি তৈরি হয়। ভোরের দিকে অনেকে ভিড়ের ঠেলায় মাটিতে পড়ে যান, আর উঠতে পারেননি। ঘটনায় আহতের সংখ্যা ৮০-এর বেশি। এবার সংশ্লিষ্ট রাজ্যের প্রশাসনিক ব্যর্থতার দিকে আঙ্গুল তুলে তোপ দাগলেন তৃণমূল কংগ্রেসের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক তথা সাংসদ অভিষেক বন্দোপাধ্যায়। এই ঘটনাকে ‘নিয়মমাফিক গাফিলতি’ বলে কটাক্ষ অভিষেকের। পাশাপাশি ঘটনায় ‘নিরপেক্ষ তদন্ত’-এর দাবিও তুলেছেন তিনি। শনিবার এক্স হ্যান্ডেলে ঘটনায় দুঃখপ্রকাশ করে সাংসদ লেখেন, ‘গোয়ার শ্রীদেবী লাইরাই মন্দিরে ছ’জনের মর্মান্তিক প্রাণহানির ঘটনায় আমি গভীরভাবে শোকাহত। এই শোকাহত পরিবারগুলির প্রতি আমার আন্তরিক সমবেদনা রইল। আহতদের দ্রুত আরোগ্য কামনা করছি।’
এরপরই আক্রমণের ধার শানিয়ে অভিষেক লেখেন, ‘হাথরস থেকে গোয়া, ডবল ইঞ্জিন রাজ্যগুলিতে এই একই ধরনের দুঃখজনক ঘটনার বারংবার পুনরাবৃত্তি! এই ধরনের ঘটনার পুনরাবৃত্তি প্রশাসনিক উদাসিনতাকেই প্রতিফলিত করে।’ এই ঘটনায় অভিযুক্তরা যেন কোনওভাবেই ছাড় না পায়, সেই দাবি তুলেছেন অভিষেক। তাঁর স্পষ্ট বক্তব্য, ‘আমি গোয়া সরকারকে নিরপেক্ষ তদন্ত পরিচালনা করার এবং এই প্রাণহানির জন্য জবাবদিহিতা সুনিশ্চিতকরণের আবেদন করছি।’ নাগরিকদের নিরাপত্তা নিয়মমাফিক অবহেলার কারণে বারংবার ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে না, এমনই দাবি অভিষেকের। পাশাপাশি গোয়া তৃণমূলও ঘটনায় শোকপ্রকাশ করে এক্স হ্যান্ডেলে লিখেছে, ‘গোয়া সরকারের কাছে এই মর্মান্তিক দুর্ঘটনার জন্য অবিলম্বে তদন্ত শুরু করার এবং অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার আবেদন জানাচ্ছি।’
প্রসঙ্গত, গোয়ার শিরগাঁও গ্রামের লাইরাই দেবী মন্দিরে প্রতি বছর বার্ষিক শোভাযাত্রা হয়। একে ‘শিরগাঁও যাত্রা’ বা ‘দেবী লাইরাই যাত্রা’ও বলা হয়ে থাকে। এখানে পুণ্যার্থীরা খালি পায়ে জ্বলন্ত অঙ্গারের মধ্যে দিয়ে হেঁটে যান। শতাব্দীপ্রাচীন এই যাত্রায় যোগ দেওয়ার জন্য প্রতি বছর দূরদূরান্ত থেকে মানুষ শিরগাঁওয়ে ভিড় করেন। শুক্রবার রাত থেকে হাজার হাজার মানুষের জমায়েত হয়েছিল সেখানে। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন, ভিড়ের মধ্যে একাংশ নিয়ন্ত্রণ হারায় এবং হঠাৎ হুড়োহুড়ি শুরু হয়। ঘটনায় মন্দির কর্তৃপক্ষ এবং পুলিশ প্রশাসনের বিরুদ্ধে গাফিলতির অভিযোগ উঠেছে। অভিযোগ, এত মানুষের জমায়েতের জন্য পর্যাপ্ত নিরাপত্তা ব্যবস্থা ছিল না সেখানে। এবার সেই সুর চড়িয়েই ঘটনার নিরপেক্ষ তদন্তের দাবি জানিয়েছেন অভিষেক।