স্বচ্ছতা নিয়ে প্রশ্ন তুলে নির্বাচন কমিশনকে সিসিটিভি ফুটেজ প্রকাশ করার দাবি জানিয়েছিলেন লোকসভার বিরোধী দলনেতা রাহুল গান্ধী। তাঁর দাবি ছিল, মহারাষ্ট্রের সব বুথে পাঁচটার পর কী হয়েছিল তার ফুটেজ প্রকাশ করা হোক। নির্বাচন কমিশনের বক্তব্য, সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ মাফিক বুথের সিসিটিভি ফুটেজ প্রকাশ করা যায় না। প্রসঙ্গত, গত মাসেই নির্বাচন কমিশন ভোটকেন্দ্রের সমস্ত সিসিটিভি, ওয়েবকাস্ট এবং ভিডিও ফুটেজ ৪৫ দিনের মধ্যে মুছে ফেলার নির্দেশ দিয়েছিল। সেই প্রসঙ্গ টেনে শনিবার ফের সরব হন রাহুল। তিনি বলেন, তথ্যপ্রমাণ মুছে ফেলে আদতে ‘ম্যাচ ফিক্সিং’ করছে নির্বাচন কমিশন।
কমিশনের যুক্তি, সিসিটিভি ফুটেজ প্রকাশ করলে কে কাকে ভোট দিচ্ছেন তা জানা না গেলেও, কে কে ভোট দিচ্ছেন আর কে কে ভোট দিচ্ছেন না তা রাজনৈতিক দলগুলির কাছে পরিষ্কার হয়ে যাবে। সুপ্রিম কোর্টের রায় অনুযায়ী ভোট দেওয়া যেমন নাগরিকের অধিকার, তেমনি ভোট না দেওয়াও নাগরিকের অধিকারের মধ্যে পড়ে। ফলে এই তথ্য প্রকাশ করা যায় না। তাছাড়া কোনও ব্যক্তির অনুমতি না নিয়ে তাঁর কোনও ফুটেজ প্রকাশ করা যায় না। ভোটকেন্দ্রের সিসিটিভি ফুটেজ প্রকাশ্যে আনা সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ লঙ্ঘন করবে বলে জানিয়েছে কমিশন। রাহুল কেন এ বিষয়ে কোনও আনুষ্ঠানিক অভিযোগ দায়ের করছেন না, তা নিয়ে পাল্টা প্রশ্ন তোলেন কমিশনের কর্তারাও। তাঁরা বলেন, এত সংবেদনশীল ও গুরুতর অভিযোগ নিয়ে রাহুল কেন কমিশনের শীর্ষ কর্তাদের সঙ্গে বৈঠক করছেন না।
শনিবার রাহুল নিজের এক্স হ্যান্ডলে লেখেন, ‘ভোটার তালিকা? মেশিনে পড়া যায় এমন তালিকা দেওয়া হবে না। সিসিটিভি ফুটেজ? প্রয়োজনে আইন বদলে গোপন রাখা হবে। ভোটের ছবি, ভিডিও ? এখন আর এক বছর নয়, বরং মাত্র ৪৫ দিনের মধ্যে সে সব মুছে ফেলা হবে। এ সব থেকেই স্পষ্ট বোঝা যাচ্ছে যে আগে থেকেই ‘ম্যাচ ফিক্সিং’ করে রাখা হয়েছে। আর যে নির্বাচনের ফলাফল আগে থেকেই নির্ধারিত, তা গণতন্ত্রের কাছে বিষের মতো।’
মহারাষ্ট্র বিধানসভা নির্বাচনে বিজেপি জোটের বিপুল জয়ের পর থেকেই ভোটার সংখ্যায় গরমিল, ভূতুড়ে ভোটার এবং নির্বাচন কমিশনের ভূমিকা-সহ একাধিক বিষয়ে অভিযোগ তুলে সরব হন বিরোধীরা। বিশেষত কংগ্রেস নেতৃত্ব এ নিয়ে বারবার প্রশ্ন তোলেন। রাহুলের দাবি, লোকসভা ভোটের মাত্র কয়েক মাসের মধ্যে মহারাষ্ট্রে প্রায় ৪০ লক্ষ ভোটার বেড়ে গিয়েছে, যা সন্দেহজনক। এ ব্যাপারে তিনি নির্বাচন কমিশনের ভূমিকার দিকেই অভিযোগের আঙুল তোলেন। তিনি বলেন, সবটাই করা হয়েছে শাসকদলকে সাহায্য করতে। শুধু তা-ই নয়, একই পদ্ধতিতে আসন্ন বিহার বিধানসভা নির্বাচনেও বিরোধীদের হারানোর পরিকল্পনা করা হয়েছে বলে দাবি করেন রাহুল।
বিরোধী দলনেতার দাবি ছিল, যদি কোনও কিছু গোপন করার না থাকে তবে ডিজিটাল ভওটার তালিকা, মহারাষ্ট্রের সব কটি বুথে পাঁচটার পর কী হয়েছিল তার সিসিটিভি ফুটেজ প্রকাশ করুক কমিশন। সুপ্রিম কোর্টের রায়ের উল্লেখ করে তারই পাল্টা জবাব দিল নির্বাচন কমিশন।