• facebook
  • twitter
Friday, 5 December, 2025

বর্ষায় মৃত্যুপুরী! হিমাচলে ধস-বন্যায় একমাসে মৃত ১১৬

বন্যায় রাজ্যে প্রাণ হারিয়েছেন ১৪ জন, মেঘভাঙা বৃষ্টিতে মৃত্যু হয়েছে ১৪ জনের, জলে ডুবে প্রাণ হারিয়েছেন ১২ জন। আবার বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে মৃত্যু হয়েছে ৫ জনের। ভূমিধসে মৃত ১ এবং পাথর পড়ে বা সাপের কামড়ে মৃত্যু হয়েছে আরও ২২  জনের।

প্রবল বৃষ্টি হিমাচল প্রদেশকে ক্রমশ মৃত্যুপুরী করে তুলেছে। ধস ও বন্যার জেরে মাত্র এক মাসের কম সময়েই এই রাজ্যে মৃত্যু হয়েছে ১১৬ জনের। এ বিষয়ে গত ২০ জুন থেকে ১৮ জুলাই– এই ২৮ দিনে কত মৃত্যু হয়েছে এবং কীভাবে মৃত্যু হয়েছে তার একটি পরিসংখ্যান তুলে ধরেছে রাজ্যের বিপর্যয় মোকাবিলা দপ্তর। সেই রিপোর্টে জানা গিয়েছে, এই সময়সীমার মধ্যে রাজ্যে প্রাকৃতিক বিপর্যয় যেমন– বন্যা, মেঘভাঙা বৃষ্টি, ভূমিধস, বাজ পড়ে মৃত্যু হয়েছে ৬৮ জনের। আবার ধসের জেরে পিচ্ছিল ও ঢালু রাস্তায় সড়ক দুর্ঘটনার জেরে মৃত্যু হয়েছে আরও ৪৮ জন ব্যক্তির। এর মধ্যে সোলান (৮), কুলু (৭), চম্বা (৬), শিমলায় (৪) মৃত্যু সবথেকে বেশি।

এই পরিসংখ্যানের বিস্তারিত রিপোর্টে জানা গিয়েছে, হঠাৎ বন্যায় রাজ্যে প্রাণ হারিয়েছেন ১৪ জন, মেঘভাঙা বৃষ্টিতে মৃত্যু হয়েছে ১৪ জনের, জলে ডুবে প্রাণ হারিয়েছেন ১২ জন। আবার বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে মৃত্যু হয়েছে ৫ জনের। ভূমিধসে মৃত ১ এবং পাথর পড়ে বা সাপের কামড়ে মৃত্যু হয়েছে আরও ২২  জনের। জেলার নিরিখে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে মান্ডি। এখানে গত একমাসে ১৬ জনের মৃত্যু হয়েছে। এরপরই আছে কাংড়া। সেখানে মৃত্যু হয়েছে ১৬ জনের। আর কুলুতে মৃত্যু হয়েছে ৭ জনের। বহু জায়গায় বন্যা ও ধসের জেরে যোগাযোগ ব্যবস্থা সম্পূর্ণ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে। বন্ধ হয়েছে বহু রাস্তাঘাট, ধসে পড়েছে সেতু। বহু গ্রাম মূল শহর থেকে কার্যত বিচ্ছিন্ন হয়ে গিয়েছে।

Advertisement

আবহাওয়ার পূর্বাভাস অনুযায়ী, আগামী দিনগুলোতে ভারী বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে। ফলে পরিস্থিতি আরও খারাপ হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। বিশ্লেষকরা মনে করছেন, হিমাচলের এই সঙ্কটময় পরিস্থিতিতে কেবল প্রাকৃতিক দুর্যোগ নয়, মানবিক বিপর্যয়েরও সম্ভাবনা রয়েছে। তাই এখনই সাবধান না হলে ভবিষ্যতে আরও বড় বিপদ ঘটতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। এই পরিস্থিতিতে স্থানীয় বাসিন্দা এবং পর্যটকদের উদ্দেশে প্রশাসনের পক্ষ থেকে তিনটি জরুরি সতর্কবার্তা দেওয়া হয়েছে। সেগুলি হল–

Advertisement

১. অপ্রয়োজনীয় যাতায়াত একেবারে বন্ধ রাখতে হবে।
২. বিপজ্জনক ঢালু এলাকায় প্রবেশ করা যাবে না।
৩. সরকারি নির্দেশিকা ও সতর্কবার্তা মেনে চলতে হবে।

প্রসঙ্গত, বর্ষার দাপটে বিভিন্ন প্রাকৃতিক বিপর্যয়ের জেরে পাহাড়ি রাস্তাগুলি কার্যত মৃত্যুফাঁদ হয়ে উঠেছে। যেহেতু ঢালু জায়গায় বৃষ্টির জল পড়ে এবং মাটি ধসে রাস্তা পিচ্ছিল হয়ে যায়, তার ফলে গাড়ি উল্টে দুর্ঘটনার মতো ঘটনা বেড়ে যায়। ফলে একমাসের মধ্যেই শুধু সড়ক দুর্ঘটনাতেই প্রাণ হারিয়েছেন ৪৮ জন। এমতাবস্থায় এনডিআরএফ, এসডিআরএফ, হোমগার্ড এবং স্থানীয় প্রশাসনের সহায়তায় জোরকদমে চলছে উদ্ধার ও  পুনর্বাসনের কাজ।

এদিকে এই বিপর্যের ফলে রাজ্যের প্রচুর আর্থিক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। বিপর্যয় মোকাবিলা দপ্তরের রিপোর্ট অনুযায়ী, প্রাকৃতিক বিপর্যয়ের জেরে সরকারি সম্পত্তি, ঘরবাড়ি, কৃষিজমি এবং গবাদিপশুর বিপুল ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। যার ফলে রাজ্যের আর্থিক ক্ষতির পরিমাণ দাঁড়িয়েছে প্রায় ১,২৩০ কোটি টাকা।

Advertisement