ইভিএম কারচুপির অভিযোগ নিয়ে উত্তাল দেশ

ইভিএম কারচুপি নিয়ে লােকসভা নির্বাচনের আগে থেকেই সােচ্চার বিরােধীরা। ইভিএমের সুরক্ষা বাড়ানাের দাবি নিয়ে সুপ্রিম কোর্ট পর্যন্ত গেছে বিরােধী দলগুলি।

Written by SNS New Delhi | May 22, 2019 2:18 pm

স্ট্রং রুমের বাইরে পাহাড়া দিচ্ছে নিরাপত্তা রক্ষী (Photo: IANS)

ইভিএম কারচুপি নিয়ে লােকসভা নির্বাচনের আগে থেকেই সােচ্চার বিরােধীরা। ইভিএমের সুরক্ষা বাড়ানাের দাবি নিয়ে সুপ্রিম কোর্ট পর্যন্ত গেছে বিরােধী দলগুলি। ইভিএম সংক্রান্ত আজ একটি ভিডিও সােশ্যাল মিডিয়ায় তােলপাড় হওয়ার পর বিরােধীদের অভিযােগ মান্যতা পেয়েছে বলে মনে করছেন রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞরা।

মঙ্গলবার সকাল থেকেই ইভিএম নিয়ে সরগরম রাজধানী। উত্তরপ্রদেশে দুটি এলাকায় স্ট্রং রুমের সামনে সন্দেহজনক ঘটনার ফুটেজ সামনে আসার পর পরিস্থিতি আরও ঘােরাল হয়ে ওঠে। উত্তরপ্রদেশে সমাজবাদী পার্টি এবং বহুজন সমাজ পার্টি কর্মী-সমর্থকরা রাস্তায় বিক্ষোভ দেখায়। সােশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হওয়া ছবিতে দেখা গেছে চান্দৌলির একটি স্ট্রং রুমের সামনে ট্রাক থেকে ইভিএম নামান হচ্ছে। ঘটনাটি ঘটেছে রবিবার উত্তরপ্রদেশে গাজিপুর ও চান্দৌলি লােকসভা কেন্দ্রে নির্বাচনের পর।

বিহার, হরিয়ানা ও পাঞ্জাবে কিছু জায়গায় ইভিএম মেশিনে কারচুপি হয়েছে বলে অভিযােগ উঠল। উত্তরপ্রদেশে ইভিএম কারচুপির প্রতিবাদে স্ট্রং রুমের বাইরে বিক্ষোভ দেখায় বিরােধী দলের প্রতিনিধিরা। পূর্ব উত্তরপ্রদেশে গাজিপুরে বিএসপি প্রার্থী আফজল আনসারি স্ট্রং রুমের বাইরে বিক্ষোভ দেখান। বিএসপির দাবি, ইভিএম কারচুপির চেষ্ঠা হচ্ছে।

গাজিপুরের বিএসপি প্রার্থীর অভিযােগ উড়িয়ে দিয়েয়েছে পুলিশ। তবে বেশ কিছুক্ষণ ধর্না চলার পর প্রশাসনের আশ্বাসে নিজের মত বদল করেন বসপা প্রার্থী। বাইরের কোনও ব্যক্তিকে স্ট্রং রুমের আশেপাশে যেতে দেওয়া হবে না বলে প্রশাসনের তরফ থেকে আশ্বাস পাওয়ার পরই ধর্না তুলে নেন বসপা প্রার্থী। আফজল আনসারির দাদা মুক্তার আব্বাস আনসারি উত্তরপ্রদেশে কুখ্যাত মাফিয়া। এই মুহুর্তে তিনি জেলে বন্দি। বসপা প্রার্থীর বিরুদ্ধে প্রার্থী হয়েছেন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী মনােজ সিনহা।

আজ সকালে দুটি ভিডিও ভাইরাল হতে হইচই পড়ে যায়। উত্তরপ্রদেশে চান্দৌলিতে একটি গণনা কেন্দ্রের মধ্যে গাড়ি থেকে ইভিএম মেশিন নামান হচ্ছে। সেগুলিকে পরে একটি ঘরে রাখা হচ্ছে।দ্বিতীয় ছবিতে দেখা যাচ্ছে যে, নির্বাচন কমিশনের ছাপবিহীন গাড়িতে ইভিএমগুলি ভর্তি করা হচ্ছে। সেখানে কোনও নিরপত্তা রক্ষী মােতায়েন ছিল না। হরিয়ানা, বিহার এবং পাঞ্জাবেও ইভিএম কারচুপির অভিযােগ উঠেছে।

সােশ্যাল মিডিয়ায় অসুরক্ষিত ইভিএমের ছবি ভাইরাল হতেই চারদিকে হইচই শুরু হয়। প্রথম ভিডিওটি তুলেছেন সমাজবাদী পার্টির সমর্থক। ভিডিওতে শােনা যাচ্ছে তিনি জিজ্ঞাসা করছেন ইভিএম সরানাে হল কেন? প্রশাসনের তরফ থেকে জানান হয়েছে, ওই ইভিএমগুলিতে ভােট হয়নি। বাড়তি ছিল। ভােটের পর ইভিএমগুলির সঙ্গে বাড়তি ইভিএমগুলি আনা যায়নি। উত্তরপ্রদেশে মুখ্য নির্বাচন কমিশনার জানিয়েছেন, ভােটের সময় ব্যবহৃত ইলেক্ট্রনিক ভােটিং মেশিন (ইভিএম)-কঠোর নিরাপত্তায় স্ট্রং রুমের মধ্যে সিল করা হয়েছে। ইভিএম পাল্টান কখনই সম্ভব নয়। অযথা আতঙ্কিত হবেন না। কমিশনের ওপর আস্থা রাখুন।

রাজ্য নির্বাচন কমিশন আরও জানান, সর্বত্রই ইভিএম এবং ভিভিপ্যাট প্রার্থীদের সামনেই সিল করা হয়েছে। সিল করা ফুটেজ ভিডিওগ্রাফি করা হয়েছে। স্ট্রং রুমের মধ্যে সিসিটিভি ক্যামেরা লাগান হয়েছে। কেন্দ্রীয় বাহিনী মােতায়েন রাখা হয়েছে স্ট্রং রুমের সামনে। প্রত্যেক দলের প্রার্থীরা দিনে একবার বাইরে থেকে স্ট্রং রুমটি দেখতে পারবেন। তাছাড়া প্রত্যেক দলের একজন প্রতিনিধি সারাদিনই স্ট্রং রুমের সামনে থাকতে পারবেন।

কারচুপির সব অভিযােগই মিথ্যা। মঙ্গলবার ২১টি বিরােধী দলের প্রতিনিধিরা নির্বাচন কমিশনের সঙ্গে দেখা করেন। নির্বাচন কমিশনারের সঙ্গে দেখা করে বিরােধী দলের প্রতিনিধিরা জানিয়েছেন, কোনও আসনে ইভিএমের গরমিল ধরা পড়লে ভিভিপ্যাট স্লিপের সঙ্গে মিলিয়ে দেখা হবে।