ওড়িশায় একাই লড়বে বিজেপি 

Written by SNS March 22, 2024 7:40 pm
ওড়িশা, ২২ মার্চ –  নবীন পট্টনায়কের দল বিজেডির সঙ্গে বিজেপির জোট নিয়ে দীর্ঘ জল্পনার অবসান হল। ২০২৪ লোকসভা ভোটে ওড়িশায় একাই লড়বে বলে স্পষ্ট জানিয়ে দিল বিজেপি। ওড়িশার মুখ্যমন্ত্রী নবীন পট্টনায়কের দল বিজেডির সঙ্গে আসন রফা নিয়ে বিজেপি দফায় দফায় আলোচনা চালালেও তা ফলপ্রসূ হয়নি। ফলে সে রাজ্যে আসন্ন লোকসভা এবং বিধানসভা ভোটে একাই লড়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে বিজেপি।
 
শুক্রবার রাজ্যের বিজেপি সভাপতি মনমোহন সামল এক্স হ্যান্ডেলে লেখেন, ‘৪.৫ কোটি ওড়িশাবাসীর আশা, ইচ্ছা, আকাঙ্ক্ষা পূরণের জন্য প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি বিকশিত ভারত তথা বিকশিত ওড়িশার লক্ষ্যে এবার বিজেপি ওড়িশায় লোকসভার ২১ আসনে একাই লড়াই করবে। ১৪৭টি বিধানসভা আসনেও একাই লড়বে এবং জিতবে।’ একইসঙ্গে রাজ্যের বিজেপি সভাপতি দাবি করেন, ওড়িশার সর্বত্র মোদি সরকারের জনকল্যাণ প্রকল্পের সুবিধা পৌঁছচ্ছে না। মনমোহন সামলের দাবি, ‘ওড়িশার গরিব ভাই বোনেরা মোদি সরকারের বহু জনকল্যাণমূলক প্রকল্পের সুবিধে থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন। এ নিয়ে আমরা চিন্তিত।’
 
আসন নিয়ে টানাপোড়েনের জেরে ওড়িশায় বিজেপি ও বিজেডি জোট হওয়ার সম্ভাবনা খারিজ হল শুক্রবার। দফায় দফায় আলোচনার পরও মিলল না সমাধান সূত্র। প্রায় দেড় দশক পর জোট গঠনের জন্য এগিয়েও শেষ পর্যন্ত পৃথকভাবে লড়ার সিদ্ধান্ত নিল দুই দল। শুক্রবার সোশাল মিডিয়ায় বিজেপির তরফে জানিয়ে দেওয়া হয় ওড়িশায় একাই লড়বে তারা। বিজেডির একটি সূত্র জানাচ্ছে, বিহারের মতোই ওড়িশায় বেশি সংখ্যক লোকসভা আসনে লড়তে চেয়েছিল বিজেপি। কিন্তু বিহারের মুখ্যমন্ত্রী তথা জেডিইউ প্রধান নীতীশ কুমারের পথে হাঁটতে রাজি হননি নবীন পট্টনায়ক।
 
অটলবিহারী বাজপেয়ীর সময়কাল থেকে ২০০৯ সাল পর্যন্ত এনডিএ-এর সঙ্গে ছিল বিজু জনতা দল। কিন্তু ২০০৮ সালে কন্ধামাল হিংসার ঘটনায় দুই শরিকের সম্পর্কে অবনতি হতে শুরু করে। এই  হিংসার পিছনে বিজেপির ভুমিকা নিয়ে প্রশ্ন তুলে, তাদের হিন্দুত্ববাদী সংগঠন আখ্যা দিয়ে এনডিএ ছাড়ে বিজেডি। এরপর বিজেপি ও কংগ্রেসকে পিছনে ফেলে ওড়িশার শাসক হিসেবে জমি শক্ত করেছে নবীনের দল। অন্যদিকে, তাদের প্রধান প্রতিপক্ষ হয়ে ওঠে বিজেপি।
 
কিন্তু বর্তমান জাতীয় রাজনীতির প্রেক্ষাপটে কেন্দ্রে শাসকদলের সঙ্গী হওয়া প্রয়োজন এমন ভাবনা তৈরি হয় বিজেডিতে। উলটো দিকে বিজেডিকে সঙ্গে নিয়ে ওড়িশায় সাংসদ সংখ্যা বাড়ানোর তাগিদ ছিল বিজেপিরও। ফলে বিহারের মতো ওড়িশাতেও পুরানো শরিকের সঙ্গে পদ্ম শিবিরের গাঁটছড়া বাঁধার সম্ভাবনা গড়ে ওঠে। যদিও সূত্রের খবর , লোকসভায় বেশি আসনের বিনিময়ে বিধানসভায় বিজেডিকে দুই-তৃতীয়াংশ আসন ছাড়ার প্রস্তাব দেয় বিজেপি। 
 
সূত্রের দাবি, লোকসভার বেশি আসনের বিনিময়ে বিজেপি বিধানসভায় দুই-তৃতীয়াংশ আসন ছাড়ার প্রস্তাব দিয়েও নবীনকে রাজি করাতে পারেনি। বর্তমানে ওই রাজ্যে বিজেপির আট সাংসদ ও ২৩ জন বিধায়ক রয়েছেন। সেখানে লোকসভায় বিজেডির আসন সংখ্যা ১২। বিধানসভায় তাদের আসন সংখ্যা ১১২। ফলে সংখ্যার দিক থেকে অনেকটাই এগিয়ে রয়েছে নবীনের দল। বিজেডি নেতৃত্ব আসন সমঝোতা সংক্রান্ত আলোচনায় লোকসভায় বিজেপিকে আটটি এবং বিধানসভায় ৩০টির বেশি আসন ছাড়তে রাজি না হওয়ায় আলোচনা ভেস্তে যায়।