মূল্যবৃদ্ধি করে মানুষকে বিদ্রুপ করছে বিজেপি : কংগ্রেস

আন্তর্জাতিক বাজারে অপরিশােধিত তেলের দাম অনেকটাই কমেছে কিন্তু দেশের নাগরিকদের সেই সুবিধা থেকে বঞ্চিত করা হচ্ছে বলে কংগ্রেস দলের পক্ষে অভিযােগ করা হয়েছে।

Written by SNS New Delhi | March 16, 2020 11:26 am

প্রতিকি ছবি (Photo: iStock)

সরকার শনিবার থেকে পেট্রোল ডিজেলের ওপর তিন টাকা অন্তঃশুল্ক ধার্য করেছে। যদিও আন্তর্জাতিক বাজারে অপরিশােধিত তেলের দাম অনেকটাই কমেছে কিন্তু দেশের নাগরিকদের সেই সুবিধা থেকে বঞ্চিত করা হচ্ছে বলে কংগ্রেস দলের পক্ষে অভিযােগ করা হয়েছে। কংগ্রেসের অজয় মাকেন অবিলম্বে রান্নার গ্যাস, পেট্রোল ও ডিজেলের দাম ৩০-৪০ শতাংশ কমানাের দাবি জানান।

তিনি জানান, আন্তর্জাতিক বাজারে অপরিশােধিত তেলের দাম হ্রাস পাওয়ার প্রেক্ষিতে দেশের মানুষকেও তার সুবিধা দিতে হবে। এজন্য কংগ্রেস সারা দেশে আন্দোলন চালিয়ে যাবে। শনিবার সরকার পেট্রোল ও ডিজেলের ৩ টাকা করে অন্তঃশুল্ক বৃদ্ধির ফলে অতিরিক্ত সরকারি রাজস্ব আদায় হবে ৩৯ হাজার কোটি টাকা। বিজেপি সরকার ২০১৪-১৫ সালেও আন্তর্জাতিক বাজারে অপরিশােধিত তেলের মূল্য হ্রাস পাওয়া সত্ত্বেও দেশের মানুষকে সেই সুবিধা থেকে বঞ্চিত করেছিল বলে অভিযােগ করেছেন অজয় মাকেন।

সাফাই হিসেবে সরকারি মালিকানাধীন তেল সংস্থাগুলির পক্ষে জানানাে হয়েছে, বর্তমান অপরিশােধিত তেলের মূল্য হ্রাসের বিষয়টি ভবিষ্যতের যেকোনও পরিস্থিতির মােকাবিলার জন্য বর্তমান মুল্যের কোনও হেরফের করা হচ্ছে না। তবে সরকারি অন্তঃশুল্ক বৃদ্ধির বিষয়টিও বর্তমান মূল্যের ওপর কোনও প্রভাব ফেলবে না বলে জানানাে হয়েছে।

কংগ্রেস নেতা অজয় মাকেন জানান, বিজেপি সরকার এপর্যন্ত পেট্রোলের ওপর মােট ২২.৯৮ টাকা এবং ডিজেলের ওপর ১৮৮৩ টাকা বৃদ্ধি করা হয়েছে। তিনি জানান, ২০১৪ সালে মােদি সরকার ক্ষমতা দখলের সময় পেট্রোলের ওর লিটার পিছু কর ছিল ৯.৪৮ টাকা এবং ডিজেলের প্রতি লিটারে ৩.৫৬ টাকা। কিন্তু তারপর বিজেপি ক্ষমতা দখল করে অন্তত বারােবার কর বাড়িয়েছে বলে তিনি অভিযােগ করেছেন।

তিনি অভিযােগ করেন, মােদি-শাহ সরকার পেট্রোলিয়াম পণ্য জিএসটি অধীনে আনার দাবিকে অগ্রাহ্য করছে এবং সাধারণ মানুষের টাকা লুঠ করছে। বিজেপি সরকারের জনবিরােধী নীতির ফলে এপর্যন্ত আন্তর্জাতিক বাজারে অপরিশােধিত তেলের দাম পঞ্চাশ শতাংশ হ্রাস পেলেও রান্নার গ্যাস, পেট্রোল ও ডিজেলের অধিক মূল্য দিতে বাধ্য হচ্ছেন। অবিলম্বে ২০১৪ সাল থেকে বৃদ্ধি করা অন্তঃশুল্কের পরিমাণ কমাতে হবে যতদিন না তা জিএসটি অধীনে আনা হয়।

কংগ্রেস নেতা জানান, প্রধানমন্ত্রীর আর্থিক উপদেষ্টা পরিষদের নীলেশ শাহ স্বীকার করেছেন আন্তর্জাতিক বাজারে অপরিশােধিত তেলের দাম কমে যাওয়ার সুবিধা দেশের মানুষের মধ্যে বন্টিত হয়নি এবং এর ফলে সরকার অতিরিক্ত ৩.৪ লাখ কোটি টাকা রাজস্ব আদায় করতে সক্ষম হয়েছে। তিনি জানান, বিগত পনেরাে বছরের মধ্যে আন্তর্জাতিক বাজারে অপরিশােধিত তেলের মূল্য ব্যারেল পিছু ৩৫-৩৮ মার্কিন ডলারে এসে ঠেকেছে। কিন্তু দেশের জনপ্রিয় সরকার সেই সুবিধা সাধারণ মানুষ, কৃষক, পরিবহণকারীদের মধ্যে বন্টন করে দেওয়া উচিত মনে করছে না। জ্বালানি তেলের দাম অগ্নি মূল্য করে রাখা হয়েছে।

বর্তমানে আন্তর্জাতিক বাজারে অপরিশােধিত তেলের মূল্য যে স্তরে নেমেছে তা ২০০৪ সালের জুন-জুলাই মাসের দরের সঙ্গে তুলনীয়। সে সময় পেট্রোল, ডিজেল ও রান্নার গ্যাসের জন্য মানুষকে দিতে হত যথাক্রমে ৩৫.৭১, ২২.৭৪ এবং ২৮১.৬০ টাকা। তিনি জানান, বিগত ছয় বছরে সরকার ও তেল কোম্পানিগুলি বিপুল পরিমাণ রাজস্ব আদায় করেছে সম্পূর্ণ অনৈতিকভাবে।