২ ডিসেম্বর থেকে শুরু হতে চলা শীতকালীন সংসদ অধিবেশনকে কেন্দ্র করে সরকার ও বিরোধী দলের মধ্যে রাজনৈতিক উত্তেজনা ক্রমশ বাড়ছে। বিরোধীরা যেখানে এসআইআর নিয়ে জোরদার আক্রমণ শানাচ্ছে, সেখানে সরকার অধিবেশনের শুরুতেই জাতীয় সঙ্গীত ‘বন্দে মাতরম’-এর ১৫০ বছর পূর্তি উপলক্ষে বিশেষ এক দিনের আলোচনা সভার উদ্যোগ নিয়েছে। রবিবারের সর্বদলীয় বৈঠকে এ নিয়ে বিরোধীদের সঙ্গে বিস্তারিত আলোচনা হবে বলে সরকারি সূত্রে খবর।
প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী সম্প্রতি অভিযোগ করেন যে কংগ্রেস ১৯৩৭ সালে জাতীয় সঙ্গীতের ‘গুরুত্বপূর্ণ স্তবক’ বাদ দিয়ে ‘বিভাজনের বীজ বপন’ করেছিল। তাঁর মন্তব্যের তীব্র প্রতিক্রিয়া জানিয়ে সর্বভারতীয় কংগ্রেস সভাপতি মল্লিকার্জুন খাড়্গে বলেন, বরং তাঁর দলই ‘বন্দে মাতরম’-এর আদর্শ মানে না। এদিকে, তৃণমূল কংগ্রেস জানিয়েছে, তাঁরা সংসদে এসআইআর, বাংলাভাষীদের উপর অত্যাচার, নির্বাচন কমিশনের ভূমিকা ও বঞ্চনা নিয়ে আলোচনা দাবি করবে। কংগ্রেস ও ইন্ডিয়া জোটের অন্যান্য দলও একাধিক গুরুত্বপূর্ণ ইস্যু তুলতে প্রস্তুত।
Advertisement
সবচেয়ে বড় রাজনৈতিক চাপ তৈরি করেছে দিল্লি দূষণ। শুক্রবার রাজধানীর দূষণ সূচক ৩৮৪-এ পৌঁছেছে— যা অত্যন্ত খারাপ পর্যায়ে পড়ে। রাহুল গান্ধী সমাজমাধ্যমে এক ভিডিও বার্তায় প্রশ্ন তোলেন, ‘ভারতের শিশুরা বিষাক্ত বাতাসে শ্বাস নিচ্ছে— মোদীজি, আপনি চুপ কেন?’ তিনি সংসদে দূষণ নিয়ে আলোচনা জরুরি বলে দাবি করেছেন। দিল্লির প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরিওয়াল এয়ার পিউরিফায়ার থেকে জিএসটি তুলে দেওয়ার আবেদন জানিয়েছেন।
Advertisement
বিরোধী পক্ষ আরও দাবি তুলেছে, প্রাকৃতিক বিপর্যয় রাজ্যগুলির বন্যা ত্রাণ, বেকারত্ব সমস্যা এবং নির্বাচন কমিশনের অযৌক্তিক ভূমিকা নিয়ে বিস্তৃত আলোচনা। কিন্তু এসআইআর ইস্যুতে সরকার অনড়। তাদের দাবি— এই বিষয়টি আদালতে বিচারাধীন, ফলে সংসদে সরাসরি আলোচনা করা যাবে না। সংসদীয় মন্ত্রী কিরেন রিজিজু বলেন, ‘সাংবিধানিক ও স্বায়ত্তশাসিত সংস্থা নিয়ে সংসদে আলোচনা সম্ভব নয়। সব মিলিয়ে শীতকালীন অধিবেশন শুরু হওয়ার আগেই সরকার–বিরোধী দ্বন্দ্ব তুঙ্গে। অধিবেশন সঠিক ভাবে চলবে, নাকি এসআইআর ও দূষণ ইস্যুতে নতুন করে সংঘাত তৈরি হবে— সেদিকেই নজর রাজনৈতিক মহলের।
Advertisement



