অজিত পাওয়ারের ফাঁদে পা দিয়েই মুখ পুড়ল, বিজেপিতে অন্তর্দ্বন্দ্ব

অজিত পাওয়ারের ফাঁদে পা দিয়েই বিজেপির এমনভাবে মুখ পুড়ল বলে দলের অন্দরে পারস্পরিক দোষারােপ শুরু হয়েছে।

Written by SNS Mumbai | November 28, 2019 3:34 pm

অজিত পাওয়ার (File Photo: IANS)

অজিত পাওয়ারের ফাঁদে পা দিয়েই বিজেপির এমনভাবে মুখ পুড়ল বলে দলের অন্দরে পারস্পরিক দোষারােপ শুরু হয়েছে। এর চেয়ে সেনার শর্ত মেনে সরকার গঠন করলেই সবদিক রক্ষা হত বলে দলের বরিষ্ঠ নেতাদের মত। বিজেপি-সেনার পক্ষেই মানুষ সরকার গঠনের রায় দিয়েছিলেন। মানুষের রায়কে মর্যাদা না দেওয়ার জন্য এবং অতিরাজনৈতিক কুটচালের ভুলভুলাইয়ায় বিজেপির এমন বেহাল দশা হয়েছে মহারাষ্ট্রের রাজনীতিতে বলে মনে করেন দলের অধিকাংশ নেতানেত্রী।

১৯৯৯ থেকে ২০০৯ সাল পর্যন্ত মহারষ্ট্রের সেচমন্ত্রী থাকাকালীন সময়ে অজিত পাওয়ার আটত্রিশটি প্রকল্পের ছড়পত্র দেন। কিন্তু এই প্রকল্পগুলির জন্য বিদর্ভ সেচ উন্নয়ন পর্ষদের ছাড়পত্র নেওয়া বা দরপত্রের নিময় কানুনেও ইচ্ছামতাে পরিবর্তন ঘটানাের অভিযােগ ওঠে। প্রকল্প রূপায়ণে ৭০ হাজার কোটি টাকা হয়ে গেলেও বিগত দশ বছরে এক শতাংশ জমিও সেচ আওতাভূক্ত হয়নি। এর বিরুদ্ধে এতদিন বিজেপি ও শিবসেনা অভিযােগ জানিয়ে আসছিল। এব্যাপারে নির্বাচনের সময়েও কৃষকদের মন পেতে সংশ্লিষ্ট ঘটনার কথা নির্বাচনী সভাগুলিতে উত্থাপিত হয়েছে বারবার। কিন্তু স্বাভাবিক জোট সঙ্গী সেনার শর্ত মেনে বিজেপি অজিত পাওয়ারের ফাঁদে পা দিল কেন তা রাজনৈতিক মহলের বােধগম্য হচ্ছে না।

সেনাকে শিক্ষা দিতে গিয়ে বিজেপিই নিজেদের নির্বুদ্ধিতাকে প্রকট করে তুলল। কারণ অজিত বিধানসভায় পরিষদীয় দলের নেতা হয়েই বিজেপিকে সমর্থন জানান সরকার গঠনের ক্ষেত্রে। বিজেপি অজিতের টোপ গিলে নেয়। আর অজিতের বিরুদ্ধে সত্তর হাজার কোটি টাকার মামলা তুলে নেয়। মামলা প্রত্যাহার হওয়ার পরই মুক্ত বিহঙ্গ অজিত আবার কাকার আদেশ মতাে বিজেপির সঙ্গ ত্যাগ করে। ফলে মুখ্যমন্ত্রী পদে শপথ নেওয়া ফড়নবিশকেও পদত্যাগ করতে হয়। কারণ সুপ্রিম কোর্ট চব্বিশ ঘণ্টার মধ্যে সরকারের সংখ্যাগরিষ্ঠতা প্রমাণের নির্দেশ দেয় এবং ভােটাভুটি ক্যামেরার সামনে করার নির্দেশ দেয়। ফলে বিজেপির পক্ষে আর বিধায়ক ভাঙানাের বা কেনাবেচার কোনও সুযােগই ছিল না। এক্ষেত্রে সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশই বিজেপির সকল কৌশলকে নস্যাৎ করে দিয়ে দলের নেতাদের সকল চালকে বেচাল করে দিয়েছে। আর আস্থাভােটে গেলে যে বিজেপির হাল কি হত তা সহজেই অনুমান করা যায় বলে দলের একনিষ্ঠ সদস্য একনাথ থাডসে মন্তব্য করেছেন। একনাথের মতে অজিত পাওয়ারের মতাে এক দুর্নীতিপরায়ণ নেতার হাত না ধরে অনেকটাই বিশ্বস্ত হাত সেনার সঙ্গে গিয়ে সরকার গঠন করাটাই ছিল বুদ্ধিমানের কাজ। তাতে দলের এমন শােচনীয় হেনস্থার মধ্যে পড়তে হত না। 

দলের দুই প্রধান পরিচালকদের অন্যতম অমিত শাহ সাংবাদিকদের জানান, বিজেপি অজিত পাওয়ারের সমর্থন চাইতে যায়নি। বরং অজিতই পরিষদীয় দলের নেতা নির্বাচিত হওয়ার পর নিজেই গায়ে পড়ে বিজেপিকে সমর্থন দিতে এগিয়ে এসেছিলেন। আর অজিত পাওয়ারকে যে নয়টি মামলা থেকে নিষ্কৃতি দেওয়া হয়েছে সেগুলির সঙ্গে তাঁর কোনও যােগ ছিল না বলেও অমিত শাহ মন্তব্য করেছেন।