২০১১-২০১৭ সালে ভারতের আর্থিক বিকাশের হার ২.৫ শতাংশ বাড়িয়ে দেখানাে হয়েছিল : অরবিন্দ সুব্রহ্মনিয়ান

ভারতের আর্থিক পরিসংখ্যানে দেশের আর্থিক বিকাশের (জিডিপি) যতই রঙিন ছবি ফুটে উঠুক না কেন, আসলে আর্থিক উন্নয়নের ছবি ততটা যে রঙিন নয়, সে কথা স্বীকার করে নিয়েছেন দেশের প্রাক্তন মুখ্য আর্থিক উপদেষ্টা অরবিন্দ সুব্রহ্মনিয়ান।

Written by SNS New Delhi | June 12, 2019 2:20 pm

অরবিন্দ সুব্রহ্মনিয়ান (Photo: IANS)

ভারতের আর্থিক পরিসংখ্যানে দেশের আর্থিক বিকাশের (জিডিপি) যতই রঙিন ছবি ফুটে উঠুক না কেন, আসলে আর্থিক উন্নয়নের ছবি ততটা যে রঙিন নয়, সে কথা স্বীকার করে নিয়েছেন দেশের প্রাক্তন মুখ্য আর্থিক উপদেষ্টা অরবিন্দ সুব্রহ্মনিয়ান।

এই সেদিন পর্যন্ত ভারতের অর্থনীতিকে বলা হত বিশ্বের সবচেয়ে তীব্র গতিতে বেড়ে ওঠা সম্ভাবনাযুক্ত অর্থনীতি, কিন্তু সুব্রহ্মনিয়ানের মতে, ২০১১ সাল থেকে ২০১৭ সাল পর্যন্ত ভারতের আর্থিক বিকাশকে বাস্তবের চেয়ে অনেক স্ফীত করে দেখানাে হয়েছে। সেই সময় দেখানাে হয়েছিল ভারতের আর্থিক বিকাশ বছরে ৭ শতাংশ হারে বৃদ্ধি পাচ্ছে কিন্তু বাস্তবে আর্থিক বিকাশ হয়েছে বছরে ৪.৫ শতাংশ হারে বলে দাবি করা হয়েছে সুব্রহ্মনিয়ানের সাম্প্রতিক এক গবেষণাপত্রে।

এই গবেষণাপত্র প্রকাশ করেছে হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের সেন্টার ফর ইন্টারন্যাশনাল ডেভেলপমেন্ট। এই আর্থিক পরিসংখ্যানকে বাড়িয়ে দেখানাের প্রবণতা শুরু হয় যখন দ্বিতীয় ইউপিএ সরকার ২০১২ সালে জিডিপির অঙ্ক কষার জন্য নতুন পদ্ধতি চালু করে। ঘনফল নির্ভর পরিসংখ্যানের জায়গায় আর্থিক অ্যাকাউন্ট ভিত্তিক পদ্ধতি চালু করে তদানীন্তন কর্পোরেট মন্ত্রক এবং জিডিপি নির্ধারণের জন্য এই পদ্ধতি প্রয়ােগ করা শুরু হয়, যেটা সুব্রহ্মনিয়ানের মতে ছিল ভুল পদ্ধতি।

বর্তমান সরকারের মুখ্য আর্থিক উপদেষ্টা কৃষ্ণমূর্তি সুব্রহ্মনিয়ান অবশ্য এই দাবি নিয়ে কোনও প্রতিক্রিয়া দেননি। তবে এই গবেষণাপত্রে ভারতের আর্থিক পরিসংখ্যান নিয়ে একাধিক সন্দেহ প্রকাশ করা হয়েছে। একাধিক অর্থনীতিবিদ ইতিমধ্যেই নরেন্দ্র মােদি সরকারের অধীনে আর্থিক বিকাশের হারকে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে বলেছেন, সরকার আর্থিক বিকাশের যে হার দাবি করেছে তা স্ফীত করে দেখানাে হয়েছে। চলতি বছরের শুরুতে কর্মসংস্থান নিয়ে যে রিপাের্ট প্রকাশিত হয়েছিল, তা নিয়েও প্রচুর বিতর্কের সৃষ্টি হয়েছে।

এই বিতর্কের পর দু’জন সরকারি পরিসংখ্যান আধিকারিক তাদের চাকরি থেকে ইস্তফা দিয়েছেন। বিশ্বের ১০৮ জন বিশিষ্ট অর্থনীতিবিদ সন্দেহ প্রকাশ করে বলেছেন, ভারতের রাজনীতিবিদরা সঠিক পরিসংখ্যান প্রকাশ হতে দিচ্ছেন না এবং পরিসংখ্যানবিদদের প্রভাবিত করার চেষ্টা করছেন।

অরবিন্দ সুব্রহ্মনিয়ান বলেছেন, এর ফলে বিশ্বের দরবারে সম্মানহানি হয়েছে ভারতের। কারণ জিডিপি থেকে কর্মসংস্থান— সব বিষয়ে বানানাে পরিসংখ্যান দিচ্ছে ভারত। এই সম্মান পুনরুদ্ধার করতে গেলে অবিলম্বে সরকারকে একটি স্বাধীন টাস্কফোর্স গঠন করে তাদের দ্বারা পরিসংখ্যান নির্ধারণের পদ্ধতি যাচাই করাতে হবে, যাতে সঠিক পদ্ধতিতে দেশের জিডিপি বা আর্থিক বিকাশের হার নির্ধারণ করা যায়।

সাম্প্রতিক পরিসংখ্যানে প্রকাশ, ভারতে চলতি বছরের প্রথম তিনমাসে দেশের আর্থিক বিকাশ পাঁচ বছরে সবচেয়ে নিম্ন অঙ্কে পৌঁছে গেছে।