সরকার বিরোধী প্রতিবাদকে হতাশা বলে এড়াতে চাইলেন জিনপিঙ

Written by SNS December 3, 2022 5:52 pm

বেইজিং, ৩ ডিসেম্বর-– চিন সরকারের কঠোর কোভিড নীতির বিরুদ্ধে দেশ জুড়ে চলেছে তীব্র প্রতিবাদ। প্রতিবাদে শামিল হয়েছেন দেশের নাগরিকদের বড় একটি অংশ। সঙ্গে পড়ুয়াদের একটা বিরাট অংশ। এই আবহে প্রথম বার মুখ খুললেন সে দেশের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং। ইউরোপীয় ইউনিয়নের প্রেসিডেন্ট চার্লস মিচেলের কাছে তাঁর দাবি, ‘‘এই প্রতিবাদ মূলত পড়ুয়ারাই করছেন।’’

তাঁর সরকারের আরোপিত কড়া কোভিডবিধির বিরুদ্ধে সম্প্রতি উত্তপ্ত হয়ে ওঠে চিনের উরুমছি-সহ বেশ কয়েকটি জায়গা। যা নজর টানে বিশ্বের। সেই প্রসঙ্গে জিনপিং বলেন, “তিন বছর ধরে অতিমারি চলতে থাকায় পড়ুয়ারা হতাশ হয়ে পড়েছেন। সে জন্যই এই ভাবে প্রতিবাদ জানাচ্ছেন তাঁরা।” গত কয়েক সপ্তাহের নজিরবিহীন প্রতিবাদের পরে নড়েচড়ে বসেছে জিনপিং প্রশাসন। জানানো হয়েছে যে, সরকারের ‘জ়িরো কোভিড নীতি’ খানিকটা শিথিল করতে বিচ্ছিন্নবাসে থাকার সময় কমিয়ে দেওয়া হবে।

এরই মধ্যে সে দেশের হ্যাংঝৌ প্রদেশে এক ব্যক্তি বিছিন্নবাস কেন্দ্রে যেতে রাজি না হওয়ায় তাঁকে টেনে-হিঁচড়ে নিয়ে যাওয়া হয়। সেই ভিডিয়ো ইতিমধ্যেই সমাজমাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে। যদিও আনন্দবাজার অনলাইন এই ভিডিয়োর সত্যতা স্বীকার করেনি। পরে অবশ্য এই ঘটনার জন্য ওই ব্যক্তির কাছে ক্ষমা চেয়েছে স্থানীয় প্রশাসন।

গত বুধবারই শাংহাই ও গুয়াংঝৌয়ের বেশ কয়েকটি অঞ্চলে লকডাউন প্রত্যাহার করার কথা ঘোষণা করা হয়। জানানো হয়েছে, বেজিংবাসীদের মধ্যে যদি সংক্রমণ ছড়ায়, তবে তাঁরা বাড়িতেই বিচ্ছিন্নবাসে থাকতে পারেন। বিচ্ছিন্নবাস কেন্দ্রে বেশি ভিড় থাকলে সেখানে না যাওয়ারই পরামর্শ দিয়েছে স্থানীয় প্রশাসন। কিন্তু কোন ক্ষেত্রে বিচ্ছিন্নবাস কেন্দ্রে যেতে হবে, আর কখন বাড়িতে থেকেই চিকিৎসা চালানো যাবে, তা স্পষ্ট ভাবে জানানো হয়নি।

প্রশাসন আরও জানিয়েছে, যে পড়ুয়ারা অনলাইনে ক্লাস করে বা বাইরের জগতের সঙ্গে খুব বেশি যোগাযোগ নেই যাঁদের, তাঁদের রোজ করোনা পরীক্ষা করাতে হবে না। অন্তঃসত্ত্বা, বয়স্ক বা অসুস্থেরা করোনায় সংক্রমিত হলে বিচ্ছিন্নবাসে থাকতে পারেন বলেও নির্দেশিকা দেওয়া হয়েছে। ৬০-এর উপরে যাঁদের বয়স, তাঁদের টিকাকরণেও জোর দেওয়া হবে, জানিয়েছে চিনের জাতীয় স্বাস্থ্য কমিশন। বলা হয়েছে, বয়স্কদের মধ্যে সংক্রমণের আশঙ্কা বেশি। প্রশাসন জানায়, বয়স্কদের বাড়িতেই করোনা পরীক্ষার ব্যবস্থা হবে।

যে উরুমছিতে দশ জনের মৃত্যুর পরে প্রতিবাদ-বিক্ষোভের সূত্রপাত, সেখানকার পরিস্থিতিও ধীরে ধীরে স্বাভাবিক হতে শুরু করেছে। সেখানকার সুপারমার্কেট, হোটেল, রেস্তরাঁ ও রিসর্টগুলি দ্রুত খোলার কথা জানিয়েছে সরকার।