দিল্লি, ১৫ নভেম্বর– প্রয়াত হলেন সাহারা গ্রুপের চেয়ারম্যান সুব্রত রায়। সূত্রের খবর, দীর্ঘদিন ধরে অসুস্থ ছিলেন তিনি। মঙ্গলবার রাতে মুম্বইয়ে তাঁর মৃত্যু হয়েছে। মৃত্যুকালে তাঁর বয়স হয়েছিল ৭৫।
প্রথম জীবনে স্কুটারে চেপে নোনতা খাবার বিক্রি করতেন। সেখান থেকে ধীরে ধীরে দেশের অন্যতম প্রভাবশালী ব্যক্তি হওয়া চাট্টিখানি কথা ছিল না। একসময় টিম ইন্ডিয়ার ক্রিকেট জার্সি মানেই ছিল মাঝখানে সাহারা লেখা। আজ সেই কোম্পানি তাঁদের সাহারাকে হারাল।
Advertisement
গত ১২ নভেম্বর তাঁকে মুম্বইয়ের কোকিলাবেন ধীরুভাই আম্বানি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছিল। মঙ্গলবার সেখানেই মৃত্যু হয় তাঁর। সূত্রের খবর, হৃদযন্ত্রের সমস্যার কারণেই মৃত্যু হয়েছে সাহারা কর্তার।
Advertisement
মঙ্গলবার রাতে সাহারা ইন্ডিয়া পরিবারের তরফে একটি বিবৃতিতে বলা হয়েছে, “অত্যন্ত দুঃখের সঙ্গে সাহারা ইন্ডিয়া পরিবারের তরফে জানানো হচ্ছে যে, আমাদের মাননীয় সাহারাশ্রী সুব্রত রায় প্রয়াত হয়েছেন। উনি একজন দূরদর্শী মানুষ ছিলেন। ১৪ নভেম্বর, মঙ্গলবার রাত সাড়ে দশটায় তাঁর মৃত্যু হয়েছে।”
ওই বিবৃতিতে আরও বলা হয়েছে যে, দীর্ঘদিন ধরে অসুস্থ ছিলেন সুব্রত। হাইপারটেনশন, ডায়াবিটিস, মেটাস্টিক ম্যালিগন্যান্সির মতো নানারকম অসুস্থতার সঙ্গে লড়াই চলছিল। এর জেরেই হৃদরোগে আক্রান্ত হন। তারপর মৃত্যু।
তবে সুব্রত রায়ের মৃত্যুতে মাথায় হাত লক্ষ-লক্ষ আমানতকারীদের। সাহারাতে লগ্নি করা কোটি-কোটি টাকার ভবিষ্যৎ কি হবে তাই নিয়ে সন্দিহান মানুষজন। চিটফান্ড সংস্থা তৈরি করে বিপুল টাকা তছরুপের অভিযোগ ওঠে তাঁর সংস্থার বিরুদ্ধে। SEBI-র সঙ্গে দীর্ঘ আইনি লড়াই চলেছিল। ২০১১ সালে সেবি সাহারা গোষ্ঠীর দুই সংস্থাকে নির্দেশ দেয় ৩ কোটি গ্রাহককে টাকা ফিরিয়ে দেওয়ার জন্য। ২০১২ সালের ৩১ আগস্ট সেবির নির্দেশই বজায় রেখেছিল সুপ্রিম কোর্ট। সেই সঙ্গে ১৫ শতাংশ সুদ দেওয়ার নির্দেশও দেয় শীর্ষ আদালত।
সাহারাকে সর্বমোট ২৪ হাজার কোটি টাকা জমা রাখতে বলা হয়েছিল। সেই টাকা বাড়তে বাড়তে ২৫ হাজার কোটি টাকায় পরিণত হয়েছে। যা আপাতত পড়ে রয়েছে ব্যাংক অ্যাকাউন্টে। সুব্রতর প্রয়াণ নতুন করে প্রশ্ন তুলে দিল সেই অর্থের ভবিষ্য়ৎ নিয়ে।
সুব্রত রায়ের যাত্রা শুরু হয়েছিল গোরক্ষপুরের গভর্নমেন্ট টেকনিক্যাল ইনস্টিটিউট থেকে মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিংয়ে শিক্ষা নিয়ে। ১৯৭৬ সালে একটি চিট ফান্ড কোম্পানি সাহারা ফাইন্যান্সের দায়িত্ব নেওয়ার আগে তিনি গোরক্ষপুরে নিজের ব্যবসা শুরু করেন।
এরপর ১৯৭৮ সালের মধ্যে তিনি সাহারা ফাইন্যান্সকে সাহারা ইন্ডিয়া পরিবারে রূপান্তরিত করেছিলেন। এই সংস্থাই পরবর্তীকালে ভারতের বৃহত্তম সংগঠনগুলির মধ্যে অন্যতম হয়ে ওঠে। তবে ব্যবসায়িক সাফল্য সত্ত্বেও আইনি জটিলতার মুখে পড়েছিলেন তিনি। জেলও খাটতে হয়েছে তাঁকে।
Advertisement



