ইডির তলব এড়িয়ে ভোটের প্রচারে সায়নী , সায়নীকে গ্রেফতারের দাবিতে সোচ্চার শুভেন্দু  

Written by SNS July 5, 2023 4:10 pm

কলকাতা , ৫ জুলাই –  বুধবার সিজিও কমপ্লেক্সে গেলেন না তৃণমূল যুবনেত্রী সায়নী ঘোষ।  তিনি বুধবার ভোটের কাজে ব্যস্ত থাকবেন। তাই এদিন না যেতে পারলেও ১১ জুলাইয়ের পর যে কোনও দিন যেতে প্রস্তুত বলে ইমেল করে জানিয়ে দিয়েছেন তৃণমূল যুব কংগ্রেসের সভানেত্রী। গত ৫ জুলাই তদন্তকারীদের মুখোমুখি হন তিনি । বুধবার ফের তাঁকে তলব করা হয়।  বুধবার সকালে সায়নী তাঁর গল্ফগ্রিনের ফ্ল্যাট থেকে বেরিয়ে যান। বাড়িতে রয়েছেন তাঁর  বাবা–ম। আজ সকাল ১০টা নাগাদ জানা গেল, তিনি ইডি দফতরে যাচ্ছেন না।

ভোটের কাজে ব্যস্ত থাকার কারণে তিনি বুধবার ইডি দফতরে যেতে পারছেন না।  মঙ্গলবার রাত ন’টা  নাগাদ মেল করে তদন্তকারী সংস্থাকে জানিয়ে দেন সায়নী। বুধবার দুপুরে তাঁকে পূর্ব বর্ধমানের গলসিতে তৃণমূলের ভোটপ্রচারে দেখা যায় । গলসিতে সংবাদমাধ্যমের মুখোমুখি  হলে সায়নী বলেন, “ইডিকে নথি পাঠিয়ে দিয়েছি।  প্রয়োজনে ভার্চুয়ালি যোগ দেব সে কথাও জানিয়েছি ।  ভোটের মাত্র দু’দিন বাকি। দলের যুব সভানেত্রী হিসাবে আমার একটা দায়িত্ব আছে।” এই প্রসঙ্গে তাঁর সংযোজন, “১১ তারিখের পর, যত বার ডাকবে, তত বার যাব।”

বুধবার সকাল সাড়ে ১১টা নাগাদ এক ব্যক্তিকে সিজিও কমপ্লেক্সে ঢুকতে দেখা যায়। সংবাদমাধ্যমের তরফে প্রশ্ন করা হলে জানান , তিনি সায়নীর আইনজীবী। তবে সায়নী বুধবারের হাজিরা নিয়ে কোন প্রশ্নের কোনও উত্তর দেননি সায়নীর আইনজীবী। তাঁর হাতে কয়েকটি ফাইল ছিল। মনে করা হচ্ছে ,  তদন্তে সহযোগিতা করতে  আইনজীবী মারফত ইডি আধিকারিকদের ৫৩০ পাতার নথি পাঠান সায়নী।

বুধবার তৃণমূল মুখপাত্র কুণাল ঘোষ জানান , সায়নী এখন ভোটের কাজে ব্যস্ত। ভোট মিটলে সায়নী ইডি দফতরে যাবেন বলে দাবি করেন কুণাল। বলেন, যেতে না পারার কারণ জানিয়ে সায়নী চিঠিও দিয়েছেন ইডিকে। যদিও ইডি সূত্রে জানা যায়, সকাল ১১টা পর্যন্ত এমন কোনও চিঠি হাতে পাননি তাঁরা ।

ইডির কাছে বুধবার  আয়–ব্যয় সংক্রান্ত তথ্য জমা দেওয়ার কথা ছিল সায়নী ঘোষের। বহিষ্কৃত যুব তৃণমূল কংগ্রেস নেতা কুন্তল ঘোষের একটি সম্পত্তি কেনাবেচা সংক্রান্ত নথি থেকেই সায়নী ঘোষের নাম উঠে আসে। তারপর একাধিক আর্থিক লেনদেনের ক্ষেত্রে সায়নীর নাম প্রকাশ্যে আসে । কুন্তলকে জেরা করেও উঠে এসেছে সায়নীর নাম। এখন  ইডি’‌র  সায়নীর ফ্ল্যাট। দু’‌দিন আগেই সাড়ে ১১ ঘণ্টা ধরে চলে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয় সায়নীকে . ইডি সূত্রে খবর,  সায়নীর পরিবারের সদস্যদের ৭টি ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট আছে। সায়নীর আয়ের সঙ্গে সম্পত্তির হিসেব মিলছে না। সায়নী শেষ যে আয়কর জমা দিয়েছেন সেখানে দেখানো হয়েছে বছরে আয় সাড়ে ৩ লক্ষ টাকা। অথচ তাঁর ফ্ল্যাটের দাম ৮০ লক্ষ টাকা। ফলে কিভাবে তিনি এই ফ্ল্যাট কিনলেন তা জানতে চান তদন্তকারী সংস্থার আধিকারিকরা।  

এদিকে সায়নী বুধবার ইডি দফতরে হাজিরা না দেওয়ায় তাঁকে গ্রেফতারের দাবিতে সোচ্চার হন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী।  ভোটের কাজে ব্যস্ত থাকার জন্য এদিন সায়নী ইডির দফতরে যাচ্ছেন না বলে জানান তৃণমূলের মুখপাত্র কুনাল ঘোষ। তাঁর কথায়, ‘‌পঞ্চায়েত নির্বাচনের প্রচারে আজ (বুধবার ) গলসিতে যাবেন সায়নী। ইডি–কে চিঠি দিয়ে সে কথা জানিয়েছেন যুব তৃণমূলের সভানেত্রী।’‌ সায়নী ইমেল করে জানান, তিনি এখন পঞ্চায়েত নির্বাচরের প্রচারের কাজে ব্যস্ত। তাই ১১ তারিখ নির্বাচন মিটলে এবং তখন ডাকলে যে কোনও দিন তিনি ইডি দফতরে যাবেন।  এরপরই সায়নীর গ্রেফতারের দাবি তোলেন শুভেন্দু।  তাঁর দাবি, নিয়োগ দুর্নীতিতে কুন্তল ঘোষের কাছ থেকে আর্থিকভাবে উপকৃত হন সায়নী।  কুন্তলের টাকাতেই সায়নী একাধিক বিলাসবহুল ফ্ল্যাট কিনেছেন দাবি শুভেন্দুর। তিনি বলেন, “এত প্রমাণ থাকা সত্ত্বেও সায়নীকে ছাড়া ঠিক হয়নি ইডির।” বিরোধী দলনেতার মতে, নথি সহ সায়নীকে জেরা করলে আরো অনেক তথ্য সামনে আসবে।