মথুরার কৃষ্ণভূমিতে কোনও খননকার্য নয়, স্থগিতাদেশ সুপ্রিম কোর্টের 

Written by SNS August 16, 2023 6:45 pm
দিল্লি, ১৬ অগাস্ট – মথুরায় কৃষ্ণ জন্মস্থান মন্দির সংলগ্ন এলাকায় এখন কোনওরকম খননকার্য করা যাবে না। বুধবার এমনই রায় দিল সুপ্রিম কোর্ট। আপাতত ১০ দিন ওই স্থানে বুলডোজার চালানো যাবে না।  বুধবার উত্তরপ্রদেশ সরকার এবং রেল কর্তৃপক্ষকে শীর্ষ আদালতের তরফে স্থিতাবস্থা বজায় রাখার জন্য নোটিস দেওয়া হয়েছে।
সম্প্রতি উত্তরপ্রদেশ সরকার এবং রেল কর্তৃপক্ষ মথুরা স্টেশনের অদূরে শ্রীকৃষ্ণ জন্মভূমির পিছনে রেলের জমি থেকে শতাধিক বেআইনি বাড়ি এবং দোকান ভাঙার কাজ শুরু করে। যোগী আদিত্যনাথের সরকার এবং রেলের সেই উদ্যোগকে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে শীর্ষ আদালতের দ্বারস্থ হন স্থানীয় বাসিন্দা ইয়াকুব শাহ। শীর্ষ আদালতে তিনি বুধবার জানান, এখনও পর্যন্ত ১০০-র কাছাকাছি বাড়ি ভাঙা হয়েছে। প্রায় ৭০টি বাড়ি অক্ষত রয়েছে।
মথুরায় শ্রীকৃষ্ণ জন্মভূমি মন্দির সংলগ্ন স্থানেই রয়েছে শাহী ইদগা মসজিদ। এই মসজিদের সার্ভে করানোর দাবি জানিয়ে এলাহাবাদ হাইকোর্টের দ্বারস্থ হয় শ্রীকৃষ্ণ জন্মভূমি মুক্তি নির্মাণ ট্রাস্ট। কিন্তু, আদালত সেই আর্জি খারিজ করে দেয়। ফলে এরপর তারা সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হয়।
শ্রীকৃষ্ণ জন্মভূমি-শাহী ইদগা ইস্যুতে মামলা চলে মথুরা কোর্টে। যদিও পরে সেগুলি এলাহাবাদ হাইকোর্টে স্থানান্তরের নির্দেশ আসে। ভগবান শ্রীকৃষ্ণ বিরাজমান ও তাঁর সঙ্গে ৭ জনের দায়ের করা এই ইস্যুতে মামলার স্থানান্তর সম্পর্কিত আবেদন মেনে নেয় এলাহাবাদ হাইকোর্ট।

মামলাকারী হিন্দুসেনার দাবি সপ্তদশ শতকে শ্রীকৃষ্ণের জন্মভূমিতে শাহী ইদগা মসজিদ নির্মাণ করা হয়। এই মসজিদের অপসারণের দাবি তোলা হয় হিন্দুসেনার তরফে। মামলায় দাবি করা হয়, ১৬৬৯-১৬৭০ সালে মুঘল আমলে সম্রাট ঔরাঙ্গজেব শ্রীকৃষ্ণ জন্মভূমিতে কাতরা কেশবদেবের মন্দিরের ১৩.৩৭ একর জমিতে এই মসজিদ গড়েন। যদিও হিন্দুসেনার সেই দাবি খারিজ করে মথুরা আদালত। পরে শাহি ইদগা মসজিদ সমীক্ষার নির্দেশ দেয় মথুরার এক কোর্ট। এরপর আসে এলাহাবাদ হাই কোর্টের এই বড় বার্তা।অন্যদিকে, জ্ঞানবাপী মসজিদে সমীক্ষা শুরু হয়। মসজিদ চত্বরে কোনও মন্দির ছিল কি না, তা খুঁজে দেখতে কার্বন ডেটিংয়ের অনুমতি দেয় বারাণসীর একটি আদালত। মসজিদের ওজুখানার ‘শিবলিঙ্গ’ বাদে বাকি এলাকায় বৈজ্ঞানিক সমীক্ষা করার ভার দেওয়া হয়েছে ভারতীয় পুরাতত্ব সর্বেক্ষণের হাতে।

কার্বন ডেটিংয়ের নির্দেশের জেরে মসজিদের ক্ষতি হতে পারে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেন মসজিদ পক্ষের আইনজীবী। যদিও পরে সুপ্রিম কোর্টের সায় মিলতেই সার্ভে শুরু করে। সেখানে হিন্দু এবং মুসলিম পক্ষের উপস্থিতিতে এই সার্ভে চলে। এদিকে, হিন্দু পক্ষের একাধিক মামলাকারী দাবি করেন, জ্ঞানবাপী মসজিদের বেসমেন্ট থেকে উদ্ধার হয়েছে ত্রিশূল, মূর্তি, স্বস্তিক চিহ্ন, পদ্ম চিহ্ন সহ একাধিক হিন্দু মন্দিরের বস্তুবিশেষ। যদিও সেই অভিযোগ খারিজ করে দেয় মুসলিম পক্ষ। মসজিদের ইমাম বলেন, বেসমেন্ট থেকে যা উদ্ধার হয়েছে সেগুলি মুঘল সম্রাট ঔরঙ্গজেবের আমলে তৈরি দুই সম্প্রদায়ের সম্প্রীতির নিদর্শন।