বুয়া-ভাতিজা রাজ্যে লুট চালাচ্ছে : মোদি

বাংলার ব্রিগেডে এসে পরিবারতন্ত্রের রাজনীতিতে কংগ্রেস এবং তৃণমূল কংগ্রেস উভয়কেই  নিশানা করে ঢিলে দুই পাখি মারতে চাইলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী।

Written by SNS New Delhi | April 4, 2019 1:23 pm

প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি

বাংলার ব্রিগেডে এসে পরিবারতন্ত্রের রাজনীতিতে কংগ্রেস এবং তৃণমূল কংগ্রেস উভয়কেই  নিশানা করে ঢিলে দুই পাখি মারতে চাইলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী।বললেন কেন্দ্রে ৫৫বছরের পরিবারতন্ত্রের জন্য পরিশ্রমী মানুষের কন্ঠরুদ্ধ হয়েছে। ভোটব্যাংকের জন্য গরীব মানুষদের স্বপ্ন ধ্বংস হয়েছে।একইভাবে বাংলাতেও আজ পরিবারতন্ত্রের বোঝা চেপে বসেছে। বুয়া ভাতিজা (পিসি-ভাইপো) মিলে রাজ্যে লুট রাজনীতি চালাচ্ছে। সেই জায়গায় দাঁড়িয়ে ঘোষণা মানুষের স্বপ্নের চৌকিদার হবেন তিনি। চৌকিদারের মতই সুরক্ষার দেওয়াল হয়ে দাঁড়াবেন দুর্নীতিগ্রস্তদের হাত থেকে মানুষকে বাঁচাতে।পরিবারতন্ত্রকে ধ্বংস করে লোকতন্ত্রকে প্রতিষ্ঠা করার প্রতিশ্রুতি দিলেন মোদি।

ভরা ব্রিগেডে মোদি ডাক দিলেন ‘মে ভি’ জনতা পাদপূরণ করে দিল ‘চৌকিদার’। ব্রিগেড জুড়ে এদিন ‘চৌকিদার’ লেখা টুপি পরেছিলেন হাজার হাজার মানুষ।রাহুল গান্ধীর কটাক্ষকে এইভাবে ভোট প্রচার-এর অস্ত্র করে নিয়েছেন মোদি।

তবে এদিনের ব্রিগেডে মোদি নাম না করে মমতাকে আক্রমণ করেন সার্জিকাল স্ট্রাইক,এয়ার স্ট্রাইক, এমনকি মহাকাশে মিসাইলস্ট্রাইক এর অস্ত্রে।

বলেন বিবেকানন্দের আশীর্বাদ নিয়ে মোদী এগিয়ে।মোদী জনতার উদ্দেশ্যে প্রশ্ন ছুড়ে দেন এয়ার স্ট্রাইক এর প্রমাণ চেয়েছিল কারা?সন্ত্রাসবাদীদের লাশ দেখতে চেয়েছিল কারা?পুলওয়ামার ঘটনায় সন্দেহ প্রকাশ করেছিল কে? এটা কি বাংলা শহিদ বাবলু সাঁতরা্র অপমান নয়?কৃত্রিম উপগ্রহ ধ্বংস করে ভারত দেশের চতুর্থ শক্তি হয়েছে। তাকে ড্রামা বলে ছোট করেছিল কে?

উপস্থিত জনতা মোদির প্রশ্নের উত্তরে মমতার নাম উল্লেখ করেন।মোদী বলেন, এই রাজ্যে তোলাবাজি গুন্ডারাজ চলছে। ২০১৪ সালে আপনাদের ভোটে জয়ী হয়ে ভ্রষ্টাচারীদের জেলের দরজা পর্যন্ত পৌঁছে দেওয়া গেছে আর ২০১৯ সালের ভোটে জয়ী হলে ভ্রষ্টাচারীদের জেলের ভিতর ভরে দেওয়া যায়।২০১৪ সালে যে মজবুত ভারতের বুনিয়াদ তৈরি করা গেছে এবার সেই ভিতে নতুন ভারত তৈরি হবে। মোদী বলেন ত্রিপুরার মত পশ্চিমবঙ্গের উন্নতি থমকে রয়েছে। এই রাজ্যের দীর্ঘদিন ধরে ক্ষমতায় থাকা বামফ্রন্ট সেখানেও সপ্তম বেতন কমিশন চালু করেনি ।তবে এই রাজ্যের কলকাতা হাওড়া দমদম যাদবপুর বারাসাতে চৌকিদারের শক্তি বৃদ্ধি নিয়ে খুশি মোদি। আর বুধবারের ব্রিগেডের বিপুল জনসমাবেশ থেকে অভিভূত প্রধানমন্ত্রী  বললেন এত বড় সমাবেশ আগে কখনো হয়নি।১৯ জানুয়ারি ব্রিগেডে যে জলসা হয়েছিল তার তুলনায় এই দিনের সভাকে ঐতিহাসিক বলেই মনে করেছেন মোদি। আসন্ন লোকসভা নির্বাচনের আগে সেখানে জনসংযোগের কাজটা নিজেই সেরে গেলেন চৌকিদার।

এদিন ব্রিগেডে সভা করার আগে শিলিগুড়ির সভাতেও মমতার সমালোচনা করেছেন মোদি ।শিলিগুড়ির মত ব্রিগেডেও সভা শুরু করেন বাংলাতেই কথা বলে। আপনারা কেমন আছেন? সবাই ভাল আছেন তো? মা কালীর আশীর্বাদ আর পরমহংসদেবের কৃপা নিয়ে আমি আপনাদের সামনে পৌঁছেছি।

তবে এদিনের ব্রিগেডে মমতার চেয়েও রাহুল গান্ধীর ওপরই বেশি করে ক্ষোভ উগরে দেন নরেন্দ্র মোদী।কংগ্রেসের প্রকাশিত ইশতেহারের ত্রুটিগুলিকে সকলের সামনে তুলে ধরতে চান মোদি।বলেন, সেনাদের সরিয়ে দেওয়ার কথা বলা হয়েছে। সেই ইস্তেহারে কংগ্রেস এমন সব প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন যাতে পাকিস্তানের সন্ত্রাসবাদী মদত পাবে।দেশে অস্থিরতা তৈরি হবে।আগেও কংগ্রেস সরকার সন্ত্রাসবাদীদের বিরুদ্ধে কঠোর হতে পারেনি।অস্ত্র আইনে শিথিলতা জারি করেছে। দেশে নকশাল ও মাওবাদীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা উপযুক্ত ব্যবস্থা নিতে পারেনি। কংগ্রেসের ভুয়ো ইশতেহারের জি এক্সপায়ারি হয়ে যাবে আগামী ২৩মে, সেকথাও স্পষ্ট করে দেন মোদি।

দেশে বিচ্ছিন্নতাবাদী ও সন্ত্রাসবাদীদের মদত দেওয়ার জন্য কংগ্রেসকেই কাঠগড়ায় তোলেন মোদি।এরাই নাগরিকত্ব আইন সংশোধনে বাধা দিয়েছে। আজ যে মহাকাশে কৃত্রিম উপগ্রহ ধ্বংসে অভিযান বা সার্জিক্যাল স্ট্রাইক হয়েছে তার কৃতিত্ব ভারতীয় বিজ্ঞানী বা দেশের সুপুত্র তথা সেনাবাহিনীদেরই। কিন্তু সেই প্রতিভাকে কাজে লাগানোর সাহস দেখাতে পারেনি কংগ্রেস।তাই দেশ পিছিয়ে পড়েছে।মোদি এইদিন প্রত্যয়ের সঙ্গে ঘোষণা করেন স্বাধীনতার পর ৭২ বছরের সেই ক্ষতিপূরণের চেষ্টা করে চলেছেন গত ৫ বছর ধরে।আর জনতার আশীর্বাদ দিয়ে অসম্ভবকে সম্ভব করে তুলতে চান মোদি।