বেদ থেকেই আধুনিক বিজ্ঞানের জন্ম, দাবি করলেন ‘ইসরো’-র চেয়ারম্যান

Written by SNS May 25, 2023 5:02 pm

দিল্লি, ২৫ মে – প্রাচীনকালে ভারতই ছিল বিজ্ঞানের পীঠস্থান। বিজ্ঞানের উন্নয়নে ভারতের উন্নয়ন ও অবদানের প্রতিচ্ছবি ‘বেদ’।  এমনটাই দাবি করলেন ভারতীয় মহাকাশ গবেষণা  সংস্থার চেয়ারম্যান এস সোমনাথ। ইসরোর চেয়ারম্যানের মতে, বিজ্ঞানের মূল বক্তব্যগুলির মূল আধার বেদ।  বেদ থেকেই আধুনিক বিজ্ঞানের জন্ম।  কিন্তু  পরবর্তীকালে পাশ্চাত্য দুনিয়ার বিজ্ঞানীদের আবিষ্কার হিসেবে সেসব গণ্য করা হয়েছে।  বুধবার মধ্যপ্রদেশের উজ্জ্বয়িনীতে ঋষি পাণিনি সংস্কৃত এবং বৈদিক বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাবর্তন অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন ইসরোর চেয়ারম্যান এস সোমনাথ।   

ভারতীয় মহাকাশ গবেষণা  সংস্থার চেয়ারম্যান এস সোমনাথ বলেন, বীজগণিত, বর্গমূল, স্থাপত্য, মহাবিশ্বের গঠনপ্রণালী,, ধাতুবিদ্যা থেকে শুরু করে বিমানচালনার উৎসের সন্ধানও  প্রথম বেদ থেকেই মেলে। পরবর্তীকালে আরব দেশগুলির মধ্য দিয়ে ইউরোপে যায় সেসব ধ্যানধারণা । আরও পরে  সেগুলি পশ্চিমী দুনিয়ার  বিজ্ঞানীদের আবিষ্কার হিসাবে চিহ্নিত হয়। উল্লেখ্য, ইসরো প্রধান হওয়ার পাশাপাশি সোমনাথ কেন্দ্রীয় সরকারের মহাকাশ সংক্রান্ত দফতরের সচিব এবং স্পেস কমিশনের চেয়ারম্যানও।

এদিন বেদের সঙ্গে বিজ্ঞানের যোগসূত্র তুলে ধরতে নানা  ব্যাখ্যা দেন এস সোমনাথ। তাঁর দাবি, ‘আগে সংস্কৃতের কোনও লিখিত লিপি ছিল না। সবাই বিষয়গুলি কণ্ঠস্থ করতেন। এভাবেই সংস্কৃত  ভাষা বহু শতাব্দী ধরে বেঁচে থেকেছে । পরে শুরু হয় দেবনাগরী লিপির ব্যবহার।’ সোমনাথ বলেন, সংস্কৃত ভাষায় প্রাচীন ভারতে জ্ঞান-বিজ্ঞানের যে চর্চা চলত তার মধ্যে কোনও রকম ভাগাভাগি ছিল না। দর্শন এবং বিজ্ঞানের চর্চা হত অঙ্গাঙ্গি ভাবে।  বৈজ্ঞানিক ভাবনাচিন্তাকে প্রকাশ করার উপযুক্ত ভাষা হল সংস্কৃত। তিনি দাবি করেন, ইঞ্জিনিয়ার এবং বিজ্ঞানীদের প্রিয় ভাষা  সংস্কৃত। কম্পিউটারের ভাষার সঙ্গে এর মিল আছে। তাই যারা আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স শিখতে চায়, তারা সংস্কৃত শেখেন।
মহাকাশ গবেষণা সংস্থার প্রধানের বক্তব্য , ‘জ্যোতির্বিদ্যা, চিকিৎসাবিদ্যা, বিজ্ঞান, পদার্থবিদ্যা, রাসায়নিক বিজ্ঞান এবং বিমান চালানোর বিজ্ঞানের ফলাফল সংস্কৃতে লেখা হয়েছিল। কিন্তু সেগুলিকে পুরোপুরি কাজে লাগানো যায়নি এবং তা নিয়ে তখন গবেষণা হয়নি। একজন রকেট বিজ্ঞানী হওয়ার দরুণ আমি সংস্কৃতের একটি বই দেখে মুগ্ধ হই। বইটি সৌরজগত, সময় এবং পৃথিবীর আকার এবং পরিধি সম্পর্কিত ছিল।’
উল্লেখ্য, প্রাচীন গ্রন্থ গবেষণা ও প্রমাণ সংগ্রহ করে ভারতকে বিজ্ঞানের ‘বিশ্বগুরু’ হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করার প্রয়াস নিয়েছে  ইন্ডিয়ান কাউন্সিল অফ হিস্টোরিক্যাল রিসার্চ। এই প্রকল্পে যুক্ত হয়েছে ইসরো। বিজ্ঞানে ভারতের অবদানকে জনসাধারণের সামনে তুলে ধরতে ছয়টি খণ্ড প্রকাশিত করা হবে। প্রাচীন, মধ্যযুগ এবং আধুনিক সময়ের বিস্তারিত বিবরণ থাকবে এই ছয় খন্ডের সমগ্রে ।