দিল্লি, ২৩ সেপ্টেম্বর–
শনিবার বসল কোবিন্দ কমিটির বৈঠক। এক দেশ-এক ভোট চালু করার বিষয়ে দিশা দিতে তৈরি হয় এই রামনাথ কোবিন্দ কমিটি। বৈঠকটি হয় প্রাক্তন রাষ্ট্রপতি কোবিন্দের দিল্লির বাড়িতে। কমিটিতে আছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ, রাজ্যসভার প্রাক্তন বিরোধী দলনেতা তথা প্রাক্তন কংগ্রেস নেতা গুলাম নবি আজাদ প্রমুখ ।পঞ্চায়েত-পুরসভা-লোকসভা-বিধানসভার ভোট পাঁচ বছরে একবার এক সঙ্গে করার পক্ষপাতী নরেন্দ্র মোদি সরকার। এই ব্যাপারে সাংবিধানিক ও আইনি পরিবর্তন এবং প্রশাসনিক ব্যবস্থাপনা সম্পর্কে দিশা দিতে প্রাক্তন রাষ্ট্রপতিকে চেয়ারম্যান করে কমিটি গড়েছে কেন্দ্র।
Advertisement
নয়াদিল্লিতে এক দেশ এক নির্বাচন কমিটির প্রথম বৈঠকে কমিটির আগামী কর্মসূচি ঠিক করা হয়। বৈঠকে নিজের বক্তব্য রাখতে গিয়ে প্রাক্তন রাষ্ট্রপতি রামনাথ কোবিন্দ বলেন, এই কমিটি ভারতের সংবিধানের অধীনে বিদ্যমান কাঠামো এবং অন্যান্য বিধিবদ্ধ বিধানগুলি বিবেচনায় রেখে সুপারিশ করবে। এটি পরীক্ষা করবে এবং সুপারিশ করবে যে সংবিধানের সংশোধনগুলির জন্য রাজ্যগুলির অনুমোদনের প্রয়োজন হবে কিনা৷ ভারতে ‘এক জাতি, এক নির্বাচন’ ধারণার লক্ষ্য হল লোকসভা এবং সমস্ত রাজ্য বিধানসভার একটি নির্বাচন।
রামনাথ কোবিন্দ আরো বলেন, ‘কমিটি স্বীকৃত জাতীয়, রাজ্যভিত্তিক, তথা অন্যান্য স্বীকৃত রাজনৈতিক দলগুলিকে দেশে একযোগে নির্বাচনের বিষয়ে তাদের পরামর্শ এবং মতামত জানাতে আমন্ত্রণ জানানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে। কমিটি ভারতের আইন কমিশনকেও এই বিষয়ে তাদের পরামর্শ এবং দৃষ্টিভঙ্গি জানানোর জন্য আমন্ত্রণ জানাবে।
Advertisement
উল্লেখ্য কমিটিতে বিরোধী দলনেতা হিসেবে কংগ্রেসের অধীর চৌধুরীকেও রাখা হয়েছিল । কিন্তু কংগ্রেস-সহ প্রায় সব বিরোধী দলই এক দেশ-এক ভোট ব্যবস্থার বিরুদ্ধে। তাই কংগ্রেস কমিটিকে বয়কটের সিদ্ধান্ত নিয়েছে। বিরোধী দলগুলি মনে করে, এই ফলে দেশের যুক্তরাষ্ট্রীয় ব্যবস্থা ভেঙে পড়বে।
বিরোধী নেতাদের অনেকেই মনে করছেন, ভোটের প্রচারে বাজিমাৎ করার জন্যই এই সিদ্ধান্ত নিতে পারে কেন্দ্র। এক দেশ-এক ভোট সংক্রান্ত বিলটিও মোদি সরকার লোকসভা ভোটের আগে পাশ করিয়ে রাখতে পারে। প্রধানমন্ত্রী একাধিকবার বলেছেন, এক দেশ-এক ভোট চালু হলে খরচ কমবে, গতি আসবে সরকারি কাজে। বছর বছর ভোটের জন্য সরকারি কাজ বন্ধ রাখতে হবে না। সব মিলিয়ে সুশাসনের বার্তা দেওয়াই মোদি সরকারের লক্ষ্য।
কেন্দ্রীয় সরকার প্রস্তাবিত নয়া ভোট ব্যবস্থা চালু করতে চাইলেও তারজন্য বিস্তর সময় দরকার। তা সত্ত্বেও বিরোধীদের একাংশের ধারণা, মোদি সরকার সংসদের শীতকালীন অধিবেশনেই এই সংক্রান্ত বিল পাশ করিয়ে নিতে পারে। মহিলা বিল যেভাবে পাশ করানো হয়েছে তাতে এক দেশ-এক ভোট ব্যবস্থা নিয়েও এমনটা মনে করছেন বিরোধী নেতাদের অনেকেই।
সংসদের সদ্য সমাপ্ত বিশেষ অধিবেশনে মহিলা বিল পাশ করানো বলেও তা কবে কার্যকর হবে তা স্পষ্ট করানো হয়নি। কেন্দ্রের তরফে বলা হয়েছে জনগণনা এবং লোকসভা ও বিধানসভার এলাকা পুনর্বিন্যাসের পর এক তৃতীয়াংশ আসন মহিলাদের জন্য সংরক্ষণ করা হবে। যদিও জনগণনা এবং আসন পুনর্বিন্যাসের ব্যাপারে কেন্দ্রীয় সরকার এখনও কোনও সিদ্ধান্ত নেয়নি। অদূর ভবিষ্যতেও তা হওয়ার সম্ভাবনা কম।
Advertisement



