উপরাষ্ট্রপতি নির্বাচনে সাংসদদের শতভাগ উপস্থিতি নিশ্চিত করতে কার্যত ‘নয়া কৌশল’ নিল কেন্দ্র। হঠাৎ করেই আগামী ৮ এবং ৯ সেপ্টেম্বর— অর্থাৎ নির্বাচনের একদিন আগে এবং ভোটের দিনেই— ১৮টি সংসদীয় কমিটির বৈঠক ডাকা হয়েছে। এর মধ্যে লোকসভার ১৪টি এবং রাজ্যসভার ৪টি কমিটির বৈঠক থাকছে বলে সংসদ দপ্তর সূত্রে খবর।
রাজনৈতিক মহলের বিশ্লেষণ, এই পদক্ষেপ মূলত সাংসদদের দিল্লিতে টেনে আনার জন্যই। কারণ এই বৈঠকে যোগ দিলে সাংসদদের যাতায়াত খরচ পুরোপুরি বহন করবে সরকার। শুধু তাই নয়, বিমানের আলাদা টিকিট, প্রতিদিনের জন্য অতিরিক্ত ২,৫০০ টাকা ভাতা এবং দু’দিন মিলিয়ে ৫,০০০ টাকা অতিরিক্ত আয় করার সুযোগ মিলবে তাঁদের। এতে নিজের কোটা থেকে বিমানের বার্ষিক ৩৪টি ফ্রি টিকিটও খরচ হবে না।
Advertisement
আগামী ৯ সেপ্টেম্বর হবে উপরাষ্ট্রপতি নির্বাচন, যেখানে শাসকদল বিজেপির প্রার্থী সি.পি. রাধাকৃষ্ণন এবং বিরোধী জোটের প্রার্থী বি. সুদর্শন রেড্ডির মধ্যে হাড্ডাহাড্ডি লড়াইয়ের সম্ভাবনা রয়েছে। মোট ৭৮২ জন সাংসদ ভোটার হিসেবে থাকলেও জয়ের জন্য প্রয়োজন কমপক্ষে ৩৯২টি ভোট। যদিও এনডিএ-র হাতে সংখ্যাগরিষ্ঠতা আছে, তবুও এই ধরনের নির্বাচনে ‘হুইপ’ জারি করা যায় না। অর্থাৎ সাংসদরা নিজেদের পছন্দ অনুযায়ী ভোট দিতে পারেন। তাই এক ভোটও হাতছাড়া হওয়ার ঝুঁকি এড়াতে সাংসদদের শারীরিক উপস্থিতি নিশ্চিত করতে এই বৈঠকের ফাঁদ পেতেছে সরকার—এমনটাই মনে করছে রাজনৈতিক মহল।
Advertisement
প্রসঙ্গত, বাদল অধিবেশন শেষ হয়েছে ২১ আগস্টেই। এরপর থেকেই শুরু হয়েছে উৎসবের মরশুম। অনেক সাংসদই ছুটিতে রয়েছেন বা নিজের এলাকায় ব্যস্ত। এই পরিস্থিতিতেই সাংসদদের ফের দিল্লিতে টেনে আনতে বৈঠকের এমন ঘনঘন ডাক, যা বিরোধীদের কাছে ‘ভোটে প্রভাব খাটানোর কৌশল’ হিসেবেই ধরা হচ্ছে।
তবে ক্ষমতাসীন বিজেপির নেতাদের দাবি, সংসদীয় কমিটির বৈঠক অনেক আগে থেকেই পরিকল্পনা করা ছিল। অন্যদিকে, বিরোধীরা বলছে, ‘এটা নিছক কাকতালীয় নয়, স্পষ্টতই ভোটকে প্রভাবিত করার জন্য সাংসদদের ডাকার আয়োজন।’
রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, যে কোনও পরিস্থিতিতে বিরোধীদের ঐক্যবদ্ধ থাকা এবং সাংসদদের পূর্ণ উপস্থিতি এনডিএ-র জন্য চাপের বিষয়। তাই ভোটের আগের এই কৌশল বিজেপি নেতৃত্বের ‘ঝুঁকি কমানোর’ই অঙ্গ।
Advertisement



