ছেলের মৃতদেহ নিয়ে ধর্নায় বিজেপির প্রাক্তন সাংসদ,  শয্যার অভাবে হাসপাতালেই মৃত্যু ছেলের 

Written by SNS October 31, 2023 6:54 pm

দিল্লি, ৩১ অক্টোবর – শয্যার অভাবে সরকারি হাসপাতালে ছেলেকে ভর্তি করাতে পারলেন না বিজেপিরই এক প্রাক্তন সাংসদ।  চোখের সামনেই মৃত্যু হল ছেলের। এই ঘটনায় প্রশ্ন চিহ্নের মুখে উত্তরপ্রদেশের স্বাস্থ্য পরিষেবা।  উত্তরপ্রদেশের বান্দার প্রাক্তন বিজেপি সাংসদ ভৈরোঁ প্রসাদ মিশ্র  সরকারি হাসপাতালে যান ছেলেকে ভর্তি করতে। তাঁর অভিযোগ,  তাঁকে হাসপাতাল থেকে জানানো হয়, হসাপাতালে কোনও শয্যা নেই। তাই ভর্তি করা সম্ভব নয়। ভর্তি করতে না পারায় চিকিৎসার অভাবেই মৃত্যু হল সাংসদের ছেলের। সোমবার ঘটনাটি ঘটেছে লখনউয়ের এসজিপিজিআই হাসপাতালে। বিজেপি শাসিত রাজ্যে

পুলিশ সূত্রে খবর, কিডনির সমস্যায় ভুগছিলেন রাজ্যের এই প্রাক্তন সাংসদের ছেলে। সোমবার শারীরিক পরিস্থিতি খারাপ হওয়ায় রাত ১১টা নাগাদ লখনউয়ের ওই সরকারি হাসপাতালে ছেলেকে ভর্তি করানোর জন্য নিয়ে যান। অভিযোগ, জরুরি বিভাগে নিয়ে গেলে সেখান থেকে জানিয়ে দেওয়া হয়, হাসপাতালে কোনও শয্যা নেই, তাই ভর্তি করানো সম্ভব নয়। শুধু তাই নয়, হাসপাতালের স্বাস্থ্য আধিকারিকও এ বিষয়ে কোনও সহযোগিতা করেননি বলে অভিযোগ। এর কিছু ক্ষণের মধ্যেই চোখের সামনেই যন্ত্রণাকাতর ছেলের মৃত্যু হয়।

চিকিৎসককে উপযুক্ত শাস্তি দেওয়া না হলে হাসপাতাল থেকে ছেলের দেহ নিয়ে কোথাও যাবেন না বলে হুঁশিয়ারি দেন প্রাক্তন বিজেপি সাংসদ ভৈরোঁ প্রসাদ মিশ্র। জরুরি বিভাগের সামনে তাঁর দেহ নিয়ে ধর্নায় বসেন তিনি। সাংবাদিকদের তিনি বলেন, “ছেলেকে হারিয়েছি। কিন্তু ছেলের দেহ নিয়ে ধর্নায় বসেছি। আমার এই প্রতিবাদ হাসপাতালের পরিষেবার বিরুদ্ধে। আমার মতো যাতে কেউ এই পরিস্থিতির শিকার না হন, তার জন্য এই প্রতিবাদ।” প্রাক্তন সাংসদ আরও জানান, তিনি ধর্নায় বসতেই বেশ কিছু রোগীর আত্মীয়রা তাঁর কাছে জরুরি বিভাগের কর্তব্যরত চিকিৎসকের বিরুদ্ধে অভিযোগ জানান। ওই চিকিৎসকের বিরুদ্ধে যতক্ষণ না কোনও ব্যবস্থা নেওয়া হবে, ততক্ষণ এভাবেই ছেলের দেহ নিয়ে ধর্নায় বসে থাকবেন বলেও জানান তিনি। এই ঘটনায় শোরগোল পড়ে যায় লখনউয়ে।

বিষয়টি প্রকাশ্যে আসতেই হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ অভিযুক্ত চিকিৎসককে সাসপেন্ড করেন। ঘটনাটি তদন্তের জন্য দ্রুত তিন সদস্যের এক কমিটি গঠন করা হয়। হাসপাতালের প্রধান চিকিৎসক আর কে ধীমান বলেন, “ছেলেকে আইসিইউতে নিয়ে যেতে বলা হয়েছিল প্রাক্তন সাংসদকে। এমনটাই আমার কাছে দাবি করেছেন চিকিৎসক। কিন্তু আইসিইউতে কোনও শয্যা খালি নেই, একথা কেন বলা হয়েছিল, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। একটি কমিটি গঠন করা হয়েছে। অভিযুক্ত চিকিৎসককে সাসপেন্ড করা হয়েছে।”

এই ঘটনায় সরগরম উত্তরপ্রদেশের রাজনীতি। সমাজবাদী পার্টির প্রধান অখিলেশ যাদব এই ঘটনার জন্য রাজ্যের বিজেপি সরকারকেই দায়ী করেছেন। তিনি বলেন, “এটি হাসপাতালের গাফিলতি নয়। এই গাফিলতি মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথের।” এর পরই অখিলেশ প্রশ্ন তোলেন, কেন সরকারি হাসপাতালগুলিতে অর্থ বরাদ্দ করা হয় না ? দলের প্রাক্তন সাংসদ ভৈরোঁ প্রসাদের বাসভবনে গিয়ে তাঁর সঙ্গে দেখা করে এসেছেন রাজ্যের উপমুখ্যমন্ত্রী কেশবপ্রসাদ মৌর্য। তিনি অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে কড়া পদক্ষেপের আশ্বাস দিয়েছেন।