রাজ্যের প্রাথমিক স্কুলে শিক্ষক নিয়োগে শূন্যপদ বাড়াতে আরও বড় পদক্ষেপ নিতে চলেছে শিক্ষাদপ্তর। সরকার পোষিত এবং সরকারি সাহায্যপ্রাপ্ত প্রাথমিক স্কুলগুলিতে আরও শিক্ষক নিয়োগের লক্ষ্যে নতুন এই পরিকল্পনা করা হয়েছে। ইতিমধ্যে প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদ রাজ্যের ১৩ হাজার ৪২১টি শূন্যপদে নিয়োগ প্রক্রিয়া শুরু করেছে। এবার সেই সংখ্যার বাইরে আরও শূন্যপদ তৈরির প্রস্তুতি চলছে।
শিক্ষাদপ্তর সূত্রে জানা গিয়েছে, রাজ্যের বিভিন্ন জেলায় উচ্চ প্রাথমিকের অধীনে থাকা ২ হাজার ৩৩৮টি স্কুলের পঞ্চম শ্রেণিকে প্রাথমিক স্তরের অন্তর্ভুক্ত করা হচ্ছে। এই স্কুলগুলিকে ইতিমধ্যেই চিহ্নিত করেছে প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদ। বেশির ভাগ স্কুলেই পঞ্চম শ্রেণিতে শিক্ষকের সংখ্যা অপ্রতুল। ছাত্রসংখ্যাও তুলনামূলকভাবে কম। কোথাও ২০০-র নীচে। কোথাও আবার ২৫০-এর কাছাকাছি।
Advertisement
এই স্কুলগুলিকে প্রাথমিকের আওতায় আনা হলে আনুমানিক দেড় হাজার নতুন শিক্ষকের শূন্যপদ তৈরি হতে পারে। প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদের তরফে এই প্রস্তাব চূড়ান্ত অনুমোদনের জন্য শিক্ষাদপ্তরে পাঠানো হয়েছে।
Advertisement
শিক্ষাদপ্তরের আধিকারিকদের বক্তব্য, শিক্ষার অধিকার আইন অনুযায়ী পঞ্চম শ্রেণি প্রাথমিক স্তরের অন্তর্ভুক্ত থাকার কথা। কিন্তু দীর্ঘদিন ধরে এ রাজ্যে পঞ্চম শ্রেণি মাধ্যমিক স্তরের আওতায় ছিল। বাম আমলে এই কাঠামো গড়ে ওঠে। পরে উচ্চ প্রাথমিক স্তর চালু হয়। ২০১৯ সাল থেকে ধাপে ধাপে পঞ্চম শ্রেণিকে প্রাথমিক তালিকায় ফেরানোর কাজ শুরু হয়।
সূত্রের খবর, প্রথমে শর্ত ছিল ছ’টি শ্রেণিকক্ষ থাকলে তবেই পঞ্চম শ্রেণি চালু করা যাবে। পরে সেই নিয়ম শিথিল করা হয়। এখন পাঁচটি শ্রেণিকক্ষ থাকলেই পঞ্চম শ্রেণির পঠনপাঠন চালু করা সম্ভব। প্রসঙ্গত, ২০২০ সাল পর্যন্ত ১৭ হাজার ৯৯৬টি স্কুলে পঞ্চম শ্রেণি চালু করা হয়। ২০২৪ সালে নতুন করে ২ হাজার ৩৯৭টি স্কুলে পঞ্চম শ্রেণি খোলা হয়েছে। এবার আরও ২ হাজার ৩৩৮টি স্কুল এই তালিকায় যুক্ত হচ্ছে।
এর মধ্যেই চাকরিপ্রার্থীদের আন্দোলন নতুন করে চাপ বাড়াচ্ছে। মঙ্গলবার শিয়ালদহ থেকে ধর্মতলা পর্যন্ত মিছিল করেন ২০২২ সালের প্রাথমিক শিক্ষক যোগ্যতা পরীক্ষায় উত্তীর্ণ ডিএলএড ঐক্যমঞ্চের চাকরিপ্রার্থীরা। তাঁদের দাবি, অন্তত ১০ হাজার অতিরিক্ত শূন্যপদ তৈরি করতে হবে।
চাকরিপ্রার্থী বিদেশ গাজীর বক্তব্য, ‘২০১৮ সালের পর থেকে নতুন করে নিয়োগের সুযোগ প্রায় বন্ধ ছিল। এতদিন পরে নিয়োগ শুরু হওয়ায় প্রার্থীর সংখ্যা অনেক বেড়েছে। কিন্তু শূন্যপদ সেই তুলনায় অনেক কম।’
প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদের তরফে জানানো হয়েছে, আইন মেনে যতটা সম্ভব শূন্যপদ বাড়ানোর চেষ্টা করা হচ্ছে। তবে শূন্যপদ বাড়ানোর চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষমতা শিক্ষাদপ্তরের হাতেই রয়েছে। পর্ষদ নিজেরা এই সংখ্যা বাড়াতে পারে না।
Advertisement



