• facebook
  • twitter
Friday, 5 December, 2025

সন্ত্রাসবিরোধী ‘অপারেশন সিঁদুর’-এর সাফল্য দেশে ধর্মনিরপেক্ষতারই সৌরভ ছড়িয়েছে

ধর্মীয় অধিকারকে ভোটব্যাঙ্কে কুক্ষিগত করার লক্ষ্যেও তার ব্যবহার বা ধর্মনিরপেক্ষতার দোহাই দিয়ে ধর্মীয় মানুষের ভাবাবেগে আঘাত দেওয়া থেকে তার বিরুদ্ধাচরণে পাল্টা শক্তি প্রদর্শন করাও সমীচীন নয়। উগ্র প্রতিবাদ বা প্রতিক্রিয়ায় ধর্মনিরপেক্ষতার সৌরভ নিঃস্ব হয়ে পড়ে। আসলে ধর্মনিরপেক্ষতা ধর্মাচরণেরই একটি পবিত্র অধিকার। তা কখনওই ধর্মান্ধতাকে প্রশ্রয় দেয় না, ধর্মীয় মৌলবাদকেই অস্বীকার করে।

প্রতিনিধিত্বমূলক চিত্র

স্বপনকুমার মণ্ডল

পহেলগামের অহিন্দু সন্ত্রাসীদের নারকীয় হত্যালীলার পর ভারতের সন্ত্রাসবিরোধী ‘অপারেশন সিঁদুর’-এর সফল অভিযানের মাধ্যমে দেশের ধর্মনিরপেক্ষ আদর্শ যেভাবে ঐক্যবদ্ধ দেশবাসীর পরিচয়ে প্রকট হয়ে উঠেছিল, তা অচিরেই ম্লান হয়ে গেল। ভারতীয় সেনার কর্নেল সোফিয়া কুরেশি যিনি ইতিমধ্যেই দেশবাসীর শ্রদ্ধা আদায় করে নিয়েছেন, তাঁর নাম না করে তাঁকে যেভাবে ১৩ মে মধ্যপ্রদেশের মন্ত্রী কুঁয়র বিজয় শাহ এক বক্তৃতায় ‘সন্ত্রাসবাদীদের বোন’ বলে অভিহিত করেছেন, তা শুধু নিন্দনীয় নয়, দেশের ধর্মনিরপেক্ষতাকেই অস্বীকার করার সামিল। কর্নেল সোফিয়া কুরেশি দেশের গর্ব ও অহংকার। তাঁর নেতৃত্বের সৌরভে দেশের ধর্মনিরপেক্ষতার আদর্শটিই গৌরবোজ্জ্বল হয়ে উঠেছে। সেক্ষেত্রে তাঁকে লক্ষ্য করে যেভাবে বেফাঁস মন্তব্য করা হয়েছে, তার ফলে তা শুধু তাঁর প্রতিই শুধু কলঙ্ক আরোপ করা হয়নি, দেশের ধর্মনিরপেক্ষতাকেও কলুষিত করা হয়েছে। ইতিমধ্যে সোস্যাল মিডিয়ায় অন্যদের সঙ্গে কর্নেল সোফিয়া কুরেশিকে নিয়েও কুৎসা-নিন্দা ছড়ানো কথা উঠে এসেছে। তার মধ্যেই একজন মন্ত্রীর মুখে যেভাবে তাঁর গৌরবকে হেয় করে উল্টে তাঁর কৃতিত্বকে রাজনৈতিক স্বার্থ চরিতার্থ করার কথা উঠে এসেছে, ধর্মনিরপেক্ষ দেশের পক্ষে তা শুধু দুর্ভাগ্যই নয়, ভয়ঙ্কর প্রবণতাও। আসলে দেশের ধর্মীয় মেরুকরণে রাজনৈতিক স্বার্থসিদ্ধির আয়োজন যত প্রকট হয়ে ওঠে, ততই তার ধর্মনিরপেক্ষ সত্তা বিপন্ন হয়ে পড়ে। সেখানে দেশের ঐক্যের আধারেই অনৈক্যেবোধের বিষে আমাদের গর্বের ধর্মনিরপেক্ষতাকে ক্ষতবিক্ষত করে তোলে অবিরত। ধর্মের উগ্রমূর্তিতে ধর্ম কখনওই নিরপেক্ষ থাকতে পারে না, তা অন্ধ হয়ে ওঠে, বিদ্বেষের নগ্নমূর্তিতে মানবিক সত্তাকেই বিপন্ন করে নিরন্তর। সেদিক থেকে দেশের অখণ্ডতা রক্ষায় তার ধর্মনিরপেক্ষতার আদর্শই আজ প্রশ্নের সম্মুখীন। আসলে ধর্মনিরপেক্ষতার মতো বৃহৎ ও মহৎ আদর্শ ধর্মীয় বিদ্বেষের সংকীর্ণতাবোধে সর্বজনীন আবেদনক্ষম হতে পারে না।

Advertisement

কাশ্মীরের পহেলগামের পর্যটন কেন্দ্রে গত মাসের ২২ এপ্রিলে একজন টাট্টুওয়ালা-সহ ২৬ জন নিরীহ নিরস্ত্র পর্যটককে সন্ত্রাসীরা নির্বিচারে নির্মমভাবে হত্যা করার ফলে সারা দেশজুড়ে প্রতিবাদ থেকে প্রতিশোধের আবহে স্বাভাবিকভাবেই দেশের ধর্মনিরপেক্ষতা রক্ষার পাশাপাশি তা নিয়ে অস্বস্তিকর তীব্র বিতর্ক দেখা দেয়। এতে বিশেষ করে বেছে বেছে হিন্দু পুরুষদের গুলি করে হত্যা করাই শুধু নয়, তার বার্তা দেশের প্রধানমন্ত্রীর কাছে যাতে পৌঁছায়, সে ব্যবস্থাও সন্ত্রাসীদের মুখে উঠে আসে। সেদিক থেকে সন্ত্রাসীদের হিন্দু নিধনের লক্ষ্যটিই ভারতের ধর্মনিরপেক্ষতাকেও চ্যালেঞ্জ ছুঁড়ে দেয়। দেশভাগ-উত্তর পরিসরে মূলত হিন্দুদের উপরে বারেবারে স্বদেশে পরবাসী হয়ে প্রাণসংশয়ের শিকার হওয়া থেকে ধনসম্পদ ভিটেমাটি হারিয়ে সর্বস্বান্ত হওয়ার অনিঃশেষ যাত্রা আজও শেষ হয়নি। সেক্ষেত্রে ধর্মের ভিত্তিতে দেশভাগে ভারতের পূর্ব পশ্চিমের দুটি দেশেই মৌলবাদীদের ধর্মীয় বিদ্বেষের শিকারে হিন্দুদের জীবনসংশয়ী মূল্য দিতে হয়েছে নিরন্তর। গত বছর ৫ আগস্টে বাংলাদেশে ধর্মীয় মৌলবাদীদের উত্থানে সে দেশের সরকার পরিবর্তনের ফলে সংখ্যালঘুদের উপরে নৃশংস অত্যাচার ও অমানবিক নির্যাচন নেমে আসে। তার আগেও সাম্প্রদায়িক বিদ্বেষের বিক্ষিপ্ত বিচ্ছিন্ন ঘটনা লেগেই থাকত। তারপরেও দেশে যে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির বাতাবরণ ছিল, মৌলবাদীদের মদতপুষ্ট সরকারের আমলে তাও আর রইল না। সেখানে সংখ্যাগরিষ্ঠ মুসলমানের দেশে ধর্মনিরপেক্ষতাই অস্বীকৃত হয়ে পড়ে। অন্যদিকে ইসলামী রাষ্ট্র হিসেবে সে দেশে হিন্দুদের অস্তিত্ব বিপন্ন হয়ে ওঠে। সেক্ষেত্রে হিন্দু নিধন ও নির্যাতনের ধারা সে দেশে এখনও সমান সচল। অন্যদিকে এ দেশে সাম্প্রতিককালে ওয়াকফ সংশোধিত আইনের প্রতিবাদী আন্দোলনের ফলে এপ্রিল দ্বিতীয় সপ্তাহে এ রাজ্যের মুর্শিদাবাদে যেভাবে হিন্দুদের উপরে হামলা থেকে আক্রমণ, হত্যা, লুটতরাজ, ভিটেমাটি থেকে উৎখাতের আয়োজন চলে, তাতেও দেশভাগের হত্যালীলা থেকে প্রাণ হাতে নিয়ে ভিটেমাটি ছেড়ে শরণার্থীদের ছিন্নমূল মানুষের জীবন্ত ছবি জেগে ওঠে। এখনও সেই দুর্ঘটনার দগদগে ঘা শুকায়নি। ঘরে ফেরেনি অসংখ্য মানুষ।

Advertisement

স্বাভাবিকভাবেই সে আঘাতের ক্ষত সেরে উঠতে না উঠতেই পহেলগামের হিন্দু নিধনে ধর্মীয় বিদ্বেষের নগ্নতার পরিপ্রেক্ষিতে দেশের ধর্মনিরপেক্ষতা নিয়েও বিতর্কে ইন্ধন জোগায়। কাশ্মীরে ইতিপূর্বে বেছে বেছে হিন্দুকে হত্যা করার ঘটনা ঘটেনি। সেদিক থেকে সন্ত্রাসীরা যেভাবে ধর্মীয় বিভাজন করে হত্যালীলা চালিয়েছে, তার মধ্যে সন্ত্রাসের ধর্মীয় পরিচয় নিয়েও বিতর্ক দেখা দেয়। আর সেই যোগসূত্রেই ভারতীয় সংবিধানে ধর্মনিরপেক্ষতার অস্তিত্ব নিয়ে তুমুল বিতর্ক গণমাধ্যমেও ছড়িয়ে পড়ে। যেন এই ধর্মনিরপেক্ষতার আধারেই ধর্মীয় মৌলবাদীদের বাড়বাড়ন্ত ও তার প্রতিরোধে তা ঢাল হয়ে মৌলবাদীদেরই প্রশ্রয় দিচ্ছে। অতএব ধর্মের ভিত্তিতে ভাগ হয়ে ভারতবিচ্ছিন্ন দুটি দেশই ইসলামী রাষ্ট্র হওয়ায় এ দেশ হিন্দুদের সংখ্যাগরিষ্ঠতাতেও তার ধর্মনিরপেক্ষতা অযৌক্তিক ও দুর্বলতা মনে হয়। সেক্ষেত্রে সংখ্যাগরিষ্ঠ হিন্দুদের যুক্তির বিরুদ্ধে বিরোধীদের যুক্তিতে ধর্মনিরপেক্ষতার সাংবিধানিক অধিকার সগৌরবে উচ্চারিত হয়। যেন যারা ধর্মনিরপেক্ষতার বিরুদ্ধে কথা বলে, তারা আদতে দেশটাকে সাম্প্রদায়িক বিদ্বেষ ছড়িয়ে রাজনৈতিক উদ্দেশ্য সাধনের হাতিয়ার করে তুলতে চাইছে। তার বিরুদ্ধে ধর্মনিরপেক্ষতার আদর্শকে সাংবিধানিক অধিকারে যেভাবে তার গুণকীর্তনে চোয়াল শক্ত করে তার বিরোধিতা ও প্রতিবাদ প্রকট হয়ে ওঠে, তাতে ধর্মীয় বিদ্বেষ কমে গিয়ে সম্প্রীতির লক্ষ্যে দেশের গৌরব বৃদ্ধির কোনও সম্ভাবনা নেই, উল্টে ভুল বোঝাবুঝির অবকাশ তৈরি করে ও ধর্মীয় বিদ্বেষ জাগিয়ে তোলে। সেক্ষেত্রে ধর্মনিরপেক্ষতার আদর্শ সবার প্রিয় নয়। আবার তা শুধু মুখের কথা নয়, সবার মুখেও তা মানায় না। আসলে ধর্মনিরপেক্ষতা সবার মুখে শোভা পায় না।

ভারতীয় সংবিধানে দেশের সৌরভ ও গৌরবে ধর্মনিরপেক্ষতার অতুলনীয় ভূমিকা বর্তমান। এটি দেশের উল্লেখযোগ্য অর্জন। ধর্মভেদে দেশভাগের মাধ্যমে স্বাধীনতালাভের পরিণতিতে অন্য দেশগুলি যেভাবে ইসলামী রাষ্ট্রের পরিচয়ে ধর্মকেই প্রতিষ্ঠা দিয়েছে, সেখানে ভারত তার রক্তক্ষরণের তিক্ত অভিজ্ঞতাকে আত্মস্থ করে দীর্ঘদিন গভীর অধ্যবসায়ে ধর্মনিরপেক্ষতার বৃহত্তর ও মহত্ত্বর আদর্শকে আপন করে নিয়েছে। ১৯৪৭-এ স্বাধীন ভারতের সংবিধানের প্রস্তাবনায় ‘Secular’ বা ‘ধর্মনিরপেক্ষ’ শব্দটি ছিল না। তার ত্রিশ বছর পরে চল্লিশতম সংবিধান সংশোধনীর মাধ্যমে ১৯৭৬-এ তা গৃহীত হয়। শুধু তাই নয়, তা নিয়ে ১৯৯৪-এ জোরদার বিতর্ক দেখা দিলেও মহামান্য সুপ্রিম কোর্ট তার অপরিহার্য গ্রহণযোগ্যতার কথা স্মরণ করিয়ে দিয়ে বিতর্কে ইতি টানে। ২০২০-তে আবার সুপ্রিম কোর্টে ধর্মনিরপেক্ষতার বিরুদ্ধে মামলা হয় এবং যথারীতি তা খারিজ হয়ে যায়। সেখানে ধর্মনিরপেক্ষতা একটি মহৎ আদর্শ। তা পালনের মধ্যেই তার অধিকার বিস্তার লাভ করে। তার অধিকার নিয়ে সোচ্চারে সরব হওয়ার চেয়ে তা লালনে ও পালনে সংযমী সংবেদনশীলতা জরুরি। আসলে ধর্মনিরপেক্ষতা একপক্ষের বিষয় নয়, সব পক্ষের কর্তব্য।

নিরপেক্ষতার ছদ্মবেশে নিজেদের ধর্মীয় বিদ্বেষকে জারি রাখাটা কখনওই ধর্মনিরপেক্ষতা নয়। সব ধর্মের প্রতি নিরপেক্ষ দৃষ্টিই ধর্মনিরপেক্ষতা। সেখানে ধর্মীয় মৌলবাদীদের ধর্মের ঐক্যের বিরুদ্ধেই ধর্মনিরপেক্ষতার অবস্থান। মানুষে মানুষে ঐক্যের ধর্ম গড়ে তোলাতেই তার প্রকাশ আকাশ হয়ে ওঠে। সেক্ষেত্রে ধর্মনিরপেক্ষতা গলার জোরের বিষয় নয়, মানসিকভাবে যাপনের আধার। এজন্য তা ছদ্মবেশী সুবিধাবাদীর হাতিয়ার হতে পারে না। মনে প্রাণে বহুত্বের ঐক্যেই তার সৌরভ। আমাদের দেশের বৈচিত্রের ঐক্যের বিশেষত্বেই তার অস্তিত্ব বর্তমান।

রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর তাঁর ‘ভারততীর্থ’ কবিতায় দেশের যে পরিচয় দিয়েছেন, তার মধ্যেই ধর্মনিরপেক্ষতার সজীব প্রকৃতি জেগে ওঠে। আর্য-অনার্যের মিলনের পথেই তার বিস্তার সুদূরপ্রসারী হয়ে ওঠে, ‘শক-হুন-দল পাঠান-মুঘল/ এক দেহে হল লীন।’ সেখানে মহামানবের সাগর তীরে ভারততীর্থে মৌলবাদীদের ধর্মীয় বিদ্বেষ নেই, নেই ধর্মের ঐক্যের আহ্বান। বরং সেক্ষেত্রে মানুষে মানুষে ঐক্যের ধর্মই রবীন্দ্রনাথের অভীষ্ট ছিল। সেই মিলনের ঐক্যই ধর্মনিরপেক্ষতার আদর্শ ও ধর্ম। সেই আদর্শই যখন রাজনৈতিক হাতিয়ার হয়ে ওঠে, তখন তার বিচ্ছেদভাবনাতেই ধর্মীয় বিদ্বেষের হাতছানি দেখা দেয়। কেননা ভোট রাজনীতিতে ভোটারের মন জয়ে ধর্মনিরপেক্ষতার আড়ালে ধর্মীয় সমর্থন পুঁজি হয়ে ওঠে। সেখানে দ্বিচারিতাও সক্রিয়তা লাভ করে। অন্য দেশের ধর্মীয় পরিচয়ের বিরুদ্ধে নীরব থেকে স্বদেশের ক্ষেত্রে ধর্মনিরপেক্ষতার আদর্শে সোচ্চার হয়ে ওঠা দ্বিচারিতার নামান্তর। শুধু তাই নয়, ধর্মীয় অধিকারকে ভোটব্যাঙ্কে কুক্ষিগত করার লক্ষ্যেও তার ব্যবহার বা ধর্মনিরপেক্ষতার দোহাই দিয়ে ধর্মীয় মানুষের ভাবাবেগে আঘাত দেওয়া থেকে তার বিরুদ্ধাচরণে পাল্টা শক্তি প্রদর্শন করাও সমীচীন নয়। উগ্র প্রতিবাদ বা প্রতিক্রিয়ায় ধর্মনিরপেক্ষতার সৌরভ নিঃস্ব হয়ে পড়ে। আসলে ধর্মনিরপেক্ষতা ধর্মাচরণেরই একটি পবিত্র অধিকার। তা কখনওই ধর্মান্ধতাকে প্রশ্রয় দেয় না, ধর্মীয় মৌলবাদকেই অস্বীকার করে। সেক্ষেত্রে ধর্মনিরপেক্ষতা ভারতের দুর্বলতা নয়, বরং তার বলিষ্ঠতার পরিচয়। সব মৌলবাদী ধর্মীয় বিদ্বেষের বিরুদ্ধে তা দেশের ব্রহ্মাস্ত্রস্বরূপ। দেশবাসীর ধারাবাহিক ঐক্যেই তার পরিচয়। ২২ এপ্রিলের ঘটনার প্রেক্ষিতে সন্ত্রাসদমনে ভারত-পাকিস্তানের যুদ্ধে যেভাবে সন্ত্রাসীবাদীরা দুই ধর্মের মানুষের মধ্যে ধর্মীয় বিদ্বেষকে পুঁজি করে ঘরেবাইরে যুদ্ধক্ষেত্র বিস্তার করতে চেয়েছিল, ভারতের মজবুত ধর্মনিরপেক্ষ ঐক্যেই তা আর সম্ভব হয়ে ওঠেনি। ভারতের ধর্মনিরপেক্ষতায় মানুষে মানুষে মহামিলনের ঐক্যই তার প্রাণশক্তি, তার মহাবল। তা ধারণে, আচরণে; মিলনে, মেলানোতে তার বিস্তার। প্রকাশের উগ্রতায় বা ছদ্মবেশের আড়ালে অথবা রাজনৈতিক সুবিধাবাদে তার অস্তিত্ব বিপন্ন হয়ে পড়ে। এজন্যই তা সবার মুখে বেমানান, অশোভিত। অন্যদিকে সন্ত্রাসবিরোধী ‘অপারেশন সিঁদুর’-এর সাফল্যের মধ্যেই দেশের ধর্মনিরপেক্ষতার ঐতিহ্যবাহী গৌরব সৌরভ ছড়িয়ে দিয়েছে, ভাবা যায়!

Advertisement