স্বপনকুমার মণ্ডল
যুদ্ধের ধ্বংসলীলার বিরুদ্ধে মানবতাবাদী মানুষের কণ্ঠেই উঠে আসে ‘যুদ্ধ নয়, শান্তি চাই’-এর তীব্র আবেদন। অথচ সাম্রাজ্যবাদীদের মতো সাম্রাজ্য বিস্তারের জন্য গণতন্ত্রপ্রিয় মানুষ কখনওই যুদ্ধ চায় না, বরং সকলেই শান্তি প্রত্যাশা করে। সেখানে কার্যকারণ সম্পর্ক সর্বত্র একরকম হতে পারে না। ফুঁ দিয়ে আগুন জ্বলে আবার নেভেও। ইতিমধ্যে ১৩ জুন থেকে শুরু হওয়া ইসরাইল বনাম ইরানের যুদ্ধ ক্রমশ তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধের দিকে এগিয়ে চলেছে। ইতিমধ্যেই ২১ জুন বিশ্বের পরাক্রমশালী দেশ মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ইরানের উপরে আকস্মিক তড়িঘড়ি আক্রমণ নামিয়ে এনেছে। ইরানের পারমাণবিক কর্মকাণ্ডকে নিশানা করে সার্জিক্যাল স্ট্রাইক করা হয়েছে। যা ছিল মেঘের আড়ালে, তাই এবার প্রকাশ্যে চলে এল। সেক্ষেত্রে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র মুখে শান্তির চেতাবনি দিয়ে সর্বনাশের ঘণ্টা বাজিয়ে দিল। এতে শুধু তিনটি দেশের ক্ষয়ক্ষতি সীমাবদ্ধ থাকবে না, সারা বিশ্বজুড়ে তার সভ্যতাগ্রাসী ভয়ঙ্কর প্রভাব ছড়িয়ে পড়বে। শুধু তাই নয়, পারমাণবিক বিস্ফোরণের সম্ভাবনাও উড়িয়ে দেওয়া যাচ্ছে না। ইতিমধ্যেই তা নিয়ে ‘যুদ্ধ নয়, শান্তি চাই’র আবেদন তীব্রতর হয়ে উঠছে। সারা দেশজুড়ে বামপন্থীদের যুদ্ধবিরোধী মিছিল অনুষ্ঠিত হয়েছে। অন্যদিকে ২২ এপ্রিল কাশ্মীরের পহেলগাঁওয়ে ২৬ জন নিরীহ মানুষকে সন্ত্রাসবাদীদের নির্বিচারে হত্যালীলা চালানোর প্রতিবাদে দেশময় সন্ত্রাসমুক্ত করার তীব্র আবেদনে সাড়া দিয়ে ভারতের সন্ত্রাসবাদীদের বিরুদ্ধে প্রত্যাঘাতের পরিসরে পাকিস্তানের সঙ্গে যুদ্ধ লাগার উপক্রমের মধ্যেই সোস্যাল মিডিয়ায় ‘যুদ্ধ নয়, শান্তি চাই’-এর আবেদন থেকে রাজপথে বামপন্থীদের মিটিং মিছিল যেন সরকারের বিরুদ্ধেই তীব্র প্রতিবাদ শানানো। অথচ তা একেবারেই কাঙ্ক্ষিত নয়, কোনওভাবেই সমর্থনযোগ্য মনে হয় না। দেশবাসীর শান্তির স্বার্থেই ভারতের দেশবিরোধী সন্ত্রাসবাদীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া জরুরি। অন্যদিকে যে যে-ভাষা বোঝে, তার সঙ্গে সেই ভাষাতেই আলাপ-আলোচনা একান্ত কাম্য। সন্ত্রাসীরা যুদ্ধের ভাষাতেই কথা বলে, হিংসার ভাষাই ভাষাই বোঝে, কোনওরকম আলাপ আলোচনার ধার ধারে না। তাছাড়া কাউকে দুর্বল ভেবে আলোচনা ফলপ্রসূ হতে পারে না। সেক্ষেত্রে সন্ত্রাসীরা যুক্তির ভাষা বোঝে না, বুঝতেও চায় না। তারা শক্তির ভাষাতেই রাজত্ব কায়েম করতে চায়। সেখানে পাকিস্তানের মদতপুষ্ট সন্ত্রাসীদের ভয়ঙ্কর হত্যালীলায় বিপর্যস্ত জনজীবনে শান্তি ফিরিয়ে আনার জন্যই ভারতের সন্ত্রাসদমন অনিবার্য হয়ে ওঠে। দেশবাসীর শান্তির জন্যই দেশের যুদ্ধ জরুরি মনে হয়। অথচ তার মধ্যেই ‘যুদ্ধ নয়, শান্তি চাই’-এর বার্তা দিয়ে প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে দেশের মহৎ উদ্যোগকেই প্রশ্নের সামনে দাঁড় করানো হীনকৌশল একেবারেই প্রত্যাশিত নয়। এতে দেশের ন্যায় প্রতিষ্ঠার পথকেই কলুষিত করার প্রয়াস বর্তমান। যুদ্ধ শুধু মানুষকে মারে না, অসংখ্য মানুষকে বাঁচায়ও। মানবধর্ম রক্ষার ক্ষেত্রেও যুদ্ধ অপরিহার্য। সেক্ষেত্রে নিরীহ মানুষের মৃত্যুকে বড় করে দেখতে গিয়ে অসংখ্য মানুষের মনে ও মানে বেঁচে রাখার সদিচ্ছাকে উপেক্ষা করা যায় না। কেন না যুদ্ধের মধ্যেও বহুজনহিতায় ও বহুজনসুখায় নীতিও বর্তমান। ফসলের আগাছা নির্মূল করেই ফসল রক্ষা করতে হয়। নাগরিকদের নিরাপত্তা সুনিশ্চিত করাই দেশের প্রধান কর্তব্য ও নৈতিক আদর্শ। আত্মনিয়ন্ত্রণের অধিকার সব দেশেরই আছে। ভারতের সেই আত্মনিয়ন্ত্রণের অধিকারে যুদ্ধের লক্ষ্যেই দেশের শান্তি প্রতিষ্ঠা। সেক্ষেত্রে যুদ্ধের বিরুদ্ধে শান্তির বাণীই শান্তি প্রতিষ্ঠার অন্তরায়। অন্যদিকে কোনও দেশের আত্মনিয়ন্ত্রণের দোহাই দিয়ে সাম্রাজ্যবাদী শক্তি গড়ে তুলে যুদ্ধের মাধ্যমে আধিপত্য বিস্তারকেও মেনে নেওয়া যায় না।
আসলে যুদ্ধের বিরুদ্ধে নেতিবাচক ধারণা বিশ্বযুদ্ধের পরিসরেই প্রকট হয়ে ওঠে।
বিশেষ করে প্রথম বিশ্বযুদ্ধের পর দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের আরও ভয়াবহ পরিণতিতে আতঙ্কগ্রস্ত বিশ্ববাসীর কাছে যুদ্ধ মানেই ধ্বংসের মুখোমুখি হওয়ার নিবিড় আয়োজন। ১৯৪৫-এর ৬ আগস্টে আমেরিকার জাপানের হিরোসিমা ও নাগাসাকির উপরে সভ্যতাগ্রাসী পারমাণবিক যুদ্ধের বীভৎস ধ্বংসলীলায় শিহরিত বিশ্ববাসীর যুদ্ধের বিরুদ্ধে জনমত গড়ে তোলার চেতনা স্বাভাবিকভাবেই বিস্তার লাভ করে। তারপরেও বিশ্বজুড়ে যুদ্ধের দামামা বন্ধ হয়নি, বরং বলা যায় বন্ধ হতে পারে না। এখনও সেই যুদ্ধের ধ্বংসলীলা স্বাধীনতাকামী পরাধীন মানুষের মরীয়া যুদ্ধ দেশে দেশে জারি রয়েছে। শুধু তাই নয়, অধিকার, কর্তৃত্ব ও ক্ষমতার দ্বন্দ্বে যুদ্ধ অনিবার্যতা লাভ করে। সেদিক থেকে যেমন যুদ্ধ আজও অপরিহার্যতাবোধে সক্রিয়, তেমনই তার বিরোধিতায় ‘যুদ্ধ নয়, শান্তি চাই’-এর আবেদনও সোচ্চার হয়ে ওঠে। সেক্ষেত্রে যুদ্ধ যে মানুষের সমস্যার সমাধান করে না, উল্টে মানুষের জীবনকেই বহুমুখী ও বহুমাত্রিক সমস্যার সম্মুখীনে অভিশপ্ত করে তোলে, যুদ্ধোত্তর পরিসরেই তা প্রতীয়মান। Marcel Junod তাঁর ‘The First Atom Bom’ নিবন্ধে জাপানের হিরোসিমা ও নাগাসাকির ভয়ঙ্কর পরিণতির কথাপ্রসঙ্গে বলেছেন, ‘The war is not a solution for man’s problems’। আসলে যুদ্ধ নিজেই একটি জলজ্যান্ত সমস্যা। যুদ্ধের বিরুদ্ধে শান্তিকামী মানুষের তীব্র আবেদনের প্রতি স্বাভাবিকভাবেই বৃহত্তর ও মহত্ত্বর চেতনা সক্রিয় হয়ে ওঠে। শুধু তাই নয়, এজন্য আলাপ আলোচনার মাধ্যমে সমাধান খোঁজার উদ্যোগও জরুরি মনে হয়। সেক্ষেত্রে দুই পক্ষকেই এগিয়ে আসতে হবে। শুধু তাই নয়, দুর্বল ও সবলের আলোচনা কখনও সার্থকতা লাভ করে না। আবার স্বাধীনতাকামী মানুষের কাছে স্বাধীনতাই শেষ কথা হলে পরাধীন করে রাখা সাম্রাজ্যবাদী মানসিকতায় তা মেনে নেওয়া সম্ভবপর হতে পারে না। সেক্ষেত্রে অধিকার ছিনিয়ে নিতে গেলেই যুদ্ধ অবশ্যম্ভাবী। আবার দীর্ঘ সময় ধরে আলাপ আলোচনা চালিয়ে যাওয়াও স্বাস্থ্যকর হয়ে ওঠে না। উল্টে তাতে দাসত্বের পরিসর শ্রীবৃদ্ধি লাভ করে, সমূহ ক্ষতির সম্ভাবনা তৈরি হয়। অহিংসার পূজারী বিশ্বখ্যাত মহাত্মা গান্ধী ১৯২১ থেকে যে অহিংস আন্দোলনে সক্রিয় হয়ে ২১ বছর ধরে তা চালিয়েও অসফল হয়ে শেষে ১৯৪২-এর আগস্টে ভারত ছাড়ো আন্দোলনে ‘Do or Die’ বা ‘করেঙ্গে ইয়া মরেঙ্গে’ নীতি অবলম্বন করেন। তাতে ২১ বছরের অপরিমেয় ক্ষতি যা হওয়ার ছিল, তা হয়ে গেছে। অন্যদিকে আলাপ আলোচনা করে ইংরেজ এ দেশ ছাড়েনি, যুদ্ধ করেই তাদের তাড়ানো হয়েছে।
আসলে অশুভ শক্তির বিরুদ্ধে শুভ শক্তির জয় নিশ্চিত করতেই যুদ্ধ অনিবার্য। সেক্ষেত্রে ধর্মের সঙ্গেও যুদ্ধের নিবিড় সম্পর্ক। সত্য ও ন্যায় প্রতিষ্ঠার জন্য যুদ্ধই ধর্মযুদ্ধ হয়ে ওঠে। সেখানে দুষ্টের দমন করে শিষ্টের পালন করাই ধর্ম। তার নেতিবাচক ধারণা থেকে যুদ্ধের পরে শান্তির মধ্যে শ্মশানের শান্তির কথাও জুড়ে যায়। অথচ তাতে যুদ্ধের ইতিবাচক ধারণা ম্লান হয়ে যায় না। সেক্ষেত্রে সমাজের বৃহত্তর ও মহত্ত্বর চেতনাতেই যুদ্ধের অপরিহার্য ভূমিকা বর্তমান। জনগণের স্বার্থেই দেশের যুদ্ধ পবিত্র কর্তব্য। তাতে কিছুজনের আত্মবলিদানের মাধ্যমে কোটি কোটি দেশবাসীকে মনেপ্রাণে শান্তিতে বাঁচার স্বার্থে দেশের যুদ্ধই মানবধর্ম যুদ্ধে পরিণত হয়। মানুষের ধর্মেই ‘বাঁচো ও বাঁচাও’ অব্যর্থ মানবধর্মের নীতি। সাতচল্লিশে ধর্মভিত্তিক দেশভাগের দ্বিখণ্ডিত স্বাধীনতায় সমস্যা সমাধানের পথে সমাধানই সমস্যা হয়ে দাঁড়ায়। তার জ্বলন্ত সমস্যা ধর্মীয় মৌলবাদীদের সাম্প্রদায়িক বিদ্বেষ আজও ভারত থেকেই ক্রমে গড়ে ওঠা তিনটি দেশেই বর্তমান। শুধু তাই নয়, স্বাধীনতা পর থেকেই কাশ্মীরের অধিকার নিয়ে নিরবচ্ছিন্ন সন্ত্রাসবাদীদের যুদ্ধে ভারতের রক্তক্ষরণ অনিবার্য হয়ে ওঠে। ২২ এপ্রিল তার ভয়ঙ্কর পরিণতি। নিরস্ত্র নিরীহ পর্যটকদের মধ্যে বেছে বেছে হিন্দু পর্যটকদের হত্যালীলা চালিয়ে অহিন্দু সন্ত্রাসীদের দেশের প্রধানমন্ত্রীকেই হিন্দু নিধনের বার্তা দেওয়ার পরে দেশের সামনে সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা ছাড়া অন্য কোনও পথ খোলা ছিল না। সেক্ষেত্রে ‘যুদ্ধ নয়, শান্তি চাই’ বলে সরকারের ঐক্যমত্যের ভিত্তিতে সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে দেশের যুদ্ধের সিদ্ধান্তকে চ্যালেঞ্জ করা পরোক্ষে দেশদ্রোহী সন্ত্রাসীদের হাতকেই শক্ত করবে। বিষে বিষক্ষয় করাই শুধু নয়, সন্ত্রাসীদের মদতদাতা রাষ্ট্রের মনেও ত্রাস সৃষ্টি করাতে ভারতের যুদ্ধ অপরিহার্য। ১৯৯৮-এর মে মাসে পোখরানে ভারতের পাঁচটি পরমাণু বোমা পরীক্ষার সাফল্যের সময়ে এপিজে আবদুল কালাম তার ভয়াবহতা সত্ত্বেও তা নিয়ে তার পক্ষে বলেছিলেন, এতে পরমাণু বোমায় শক্তিধর রাষ্ট্রও ভারতকে আক্রমণের আগে একবার ভাবতে বাধ্য হবে। সেক্ষেত্রে ভারতের সন্ত্রাসবিরোধী যুদ্ধই দেশের স্বার্থে জরুরি। তাতে ভবিষ্যতে ভারতের বিরুদ্ধে সন্ত্রাসী কাজকর্ম চালানোর আগে তার পরিণতি নিয়ে ভেবে দেখার প্রয়োজন অনুভব করে তা থেকে বিরত হবে। দেশের শান্তি প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যেই এজন্য যুদ্ধ করা জরুরি। তার মধ্যে শুধু দেশের আত্মনিনিয়ন্ত্রণের অধিকার প্রতিষ্ঠাই নয়, তার সঙ্গে তার অখণ্ডতা ও নিরাপত্তার মতো জরুরি স্বার্থও জড়িত।
অন্যদিকে তার সঙ্গে যুদ্ধব্যবসায়ী দেশের অস্ত্রের ব্যবসার শ্রীবৃদ্ধি থেকে সাম্রাজ্য বিস্তারের লক্ষ্যে অন্য দেশকে আনুগত্যে বা বশ্যতায় রাখার জন্য মানবসভ্যতা ধ্বংসকারী যুদ্ধকে কোনওভাবেই সমর্থন করা যায় না। সেক্ষেত্রে যুদ্ধের মূলে থাকে আধিপত্য বিস্তার। অন্যের অস্তিত্ব বিপন্ন করে নিজের অস্তিত্ব প্রকট করার মধ্যে যুদ্ধের নৈতিক আদর্শ আপনাতেই নিঃস্ব হয়ে পড়ে। আধিপত্যকামী সাম্রাজ্যবাদী শক্তির ইচ্ছা-অনিচ্ছায় যেভাবে বিশ্বজুড়ে যুদ্ধের মহড়া থেকে তার ধ্বংসলীলা ক্রমশ তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধের দিকে এগিয়ে চলেছে, তার মধ্যে সভ্যতাগর্বী আধুনিক পৃথিবীই আজ ভয়ঙ্কর সংকটের মুখে। যে যুদ্ধের লক্ষ্য শুধুই আধিপত্য বিস্তার, তার ট্র্যাজিক পরিণতিও ধ্বংসাত্মক। তার মধ্যে কোনও গৌরব নেই, আছে শুধু বিধ্বংসী তীব্র হাহাকার।
সেক্ষেত্রে অধিকার সচেতন স্বাধীনতাপ্রিয় আধুনিক মনস্কতায় ‘বিনা যুদ্ধে নাহি দিব সূচ্যগ্র মেদিনী’র তীব্রতায় ‘যুদ্ধ নয়, শান্তি চাই’র আবেদন যেমন অশ্রুত থেকে যায়, তেমনই তা প্রতিবাদের ভাষা হিসেবেও ব্যঙ্গের খোরাক হয়ে ওঠে। সেয়ানে সেয়ানে সেখানে যুদ্ধ অবশ্যম্ভাবী হয়ে ওঠে, শান্তির আবেদন অরণ্যে রোদন করে। যে যুদ্ধ মানুষের অধিকার ফিরিয়ে দিয়ে মনে আর মানে বাঁচার স্বপ্ন দেখায়, সেই যুদ্ধই দেশকে শ্মশানে পরিণত করে, মুহূর্তের মধ্যে দুঃস্বপ্নপুরী উপহার দেয়, স্বদেশেই পরবাসী করে তোলে। সেক্ষেত্রে যুদ্ধই আধুনিক সভ্যতার সবচেয়ে বড় অভিশাপ। পারস্পরিক শক্তি প্রদর্শন করতে গিয়ে মানুষই তার শক্তিকে দুর্বল করে চলে। সেক্ষেত্রে যুদ্ধের রণংদেহি হুঙ্কারের কাছে শান্তির দাবি না পৌঁছানো অস্বাভাবিক নয়। যুদ্ধের বীরত্বের আস্ফালনের তীব্রতায় যুদ্ধবিমুখ শান্তির আর্তির দুর্বলতাবোধে প্রতিবাদের ভাষা না হয়ে ব্যঙ্গের খোরাক হয়ে ওঠে। এজন্য বিশ্ববাসীর যুদ্ধবিরোধী আবেদনকে উপেক্ষা করে অর্থাৎ শান্তির ঘণ্টা বাজিয়ে যুদ্ধের সাইরেন বেজেই চলেছে।