শোভনলাল চক্রবর্তী
পশ্চিম এশিয়ার একটি সুখ্যাত সংবাদমাধ্যম সংবাদ-শিরোনাম করেছে, আমেরিকা যুক্তরাষ্ট্রের দৌলতে বিশ্ব দুনিয়া এখন ‘যুদ্ধের জন্য সম্পূর্ণ নিরাপদ’। প্রশংসাযোগ্য বটে; অনেক বক্তব্য এক সঙ্গে পেশ করাই যে-হেতু সার্থক শিরোনামের লক্ষ্য। ইরানের পরমাণু শক্তি কেন্দ্রে আমেরিকা যে বোমাবর্ষণ করেছে, তার ভয়ঙ্করতা এখনও বহিঃপৃথিবীর কাছে পুরোপুরি স্পষ্ট নয়। কতখানি ক্ষত ও ক্ষতি হল ইরানের, তা নিয়ে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের দেশ যে দাবিই করুক না কেন, বাস্তব পরিস্থিতি বোঝা কঠিন। তবে সন্দেহ নেই, যে ভাবে অভাবিত ও অপ্ররোচিত বোমা বর্ষণ হল ইরানের পরমাণু কেন্দ্রের উপর, তা ‘সফল’ না হলে কিন্তু বিপদ আগের থেকে অনেক বাড়তে পারে। প্রমাণিত হল যে, বাইরের দেশ এ ভাবেই ভয়ঙ্করতম হানা দিতে পারে, ফলে তার জন্য ‘অস্ত্র’ মজুত রাখা ভাল।
ইরান আগাগোড়াই বলে আসছে যে তারা পরমাণু শক্তি নির্মাণ করছে, পরমাণু অস্ত্র নয়— যে দাবি ইজ়রায়েল বিশ্বাস করে না এবং ইরান তাদের আক্রমণ করতে পারে এই আতঙ্কে ভুগেই তারা যুদ্ধ শুরু করেছে। আমেরিকার শাসক মহলের মতও ইজ়রায়েলের মতের সঙ্গে মেলে, বোঝাই যাচ্ছে। তবে কিনা, এও ঠিক যে আমেরিকার সামরিক ও প্রশাসনিক মহল এ বিষয়ে একমত নয়— তাদের একাংশের বিবেচনায় সাম্প্রতিক কালে ইরান পরমাণু অস্ত্র নির্মাণে অগ্রসর হয়েছে এমন কোনও প্রমাণ নেই। এত কাল প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের নেকনজরে থাকা ভারতীয় বংশোদ্ভূত তুলসী গাবার্ড এই মতে বিশ্বাসী বলেই এখন ট্রাম্পের বিদ্বেষভাজন। তবে কিনা, ইরান এত দিন পরমাণু অস্ত্রে মন দিয়ে থাকুক না থাকুক, এই সংঘর্ষের ফলে তাদের পরমাণু সক্ষমতা বা ‘নিউক্লিয়ার কেপেবিলিটি’ বিচূর্ণ না হয়ে গিয়ে থাকলে তারা নিশ্চিত ভাবে আবার উঠে দাঁড়াবে এবং ভয়ঙ্করতর ‘কেপেবিলিটি’-র দিকে ধাবিত হবে। সেই অর্থেই বিশ্ব এখন আরও অনেক যুদ্ধের জন্য প্রস্তুত— সে কথা বলাই যায়।আশঙ্কাই শেষে সত্যি হল। আন্তর্জাতিক আণবিক শক্তি সংস্থা (আইএইএ)-র সঙ্গে দেশের সহযোগিতা কার্যকর ভাবে স্থগিত রাখতে এ বার বিল পাস করল ইরানের পার্লামেন্ট। তেহরানের দাবি, তাদের পারমাণবিক স্থানগুলির উপরে ইজ়রায়েল এবং আমেরিকার সাম্প্রতিক বিমান হামলার জেরেই এই পদক্ষেপ করতে বাধ্য হল তারা। সেই সঙ্গে তারা স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছে, কোনও পরিস্থিতিতেই অসামরিক পারমাণবিক কর্মসূচি ত্যাগ করা হবে না। তাদের অভিযোগ, আইএইএ পক্ষপাতদুষ্ট হওয়ার কারণেই ইরানের পারমাণবিক স্থানগুলির উপরে হামলার নিন্দা করতে অস্বীকার করে। তেহরানের এমনও দাবি, এই মাসে ইরানের বিরুদ্ধে আইএইএ-র পরমাণু অ-সম্প্রসারণের বাধ্যবাধকতা লঙ্ঘনের ঘোষণাই শেষে তাদের বিরুদ্ধে ইজ়রায়লের আক্রমণের পথ প্রশস্ত করে। বস্তুত, আমেরিকার হামলার পরেই পারমাণবিক অ-সম্প্রসারণ চুক্তি (এনপিটি) ছাড়ার হুমকি দেয় তেহরান।
১৯৬৮ সালে স্বাক্ষরিত এবং ১৯৭০ সালে কার্যকর হয় এনপিটি। এই আন্তর্জাতিক চুক্তির লক্ষ্য হল পারমাণবিক অস্ত্র ও প্রযুক্তির বিস্তার রোধ, পারমাণবিক শক্তির শান্তিপূর্ণ ব্যবহার এবং সেই সঙ্গে নিরস্ত্রীকরণে সহযোগিতা বৃদ্ধি। চুক্তিটি রাষ্ট্রপুঞ্জের পারমাণবিক পর্যবেক্ষণ সংস্থা, আইএইএ-র তত্ত্বাবধানে শান্তিপূর্ণ উদ্দেশ্যে সকল স্বাক্ষরকারী রাষ্ট্রের পারমাণবিক প্রযুক্তি ব্যবহারের অধিকারকে সমর্থন করে। অন্য দিকে, চুক্তির ১১টি অনুচ্ছেদের একটিতে এটি ত্যাগ করার পদ্ধতিও উল্লিখিত আছে। এতে বলা হয়েছে, প্রতিটি পক্ষেরই চুক্তি থেকে সরে আসার অধিকার আছে, যদি এই চুক্তির কোনও কিছু তাদের দেশের স্বার্থকে গুরুতর বিপন্ন করে। লক্ষণীয়, ১৯৬৮ থেকেই এই চুক্তি স্বাক্ষরকারীদের তালিকায় রয়েছে ইরান। আবার সেই সময় থেকেই অভিযোগ, পারমাণবিক উপাদান সংগ্রহ এবং পরমাণু সংক্রান্ত কার্যকলাপ সম্পর্কে আইএইএ-কে পূর্ণ সহযোগিতা করেনি ইরান। ভুললে চলবে না যে, পারমাণবিক পদার্থ ব্যবহার, সংরক্ষণ বা পরিচালনাকারী প্রতিটি দেশকে তাদের অবস্থা আইএইএ-কে জানানোর কথা। তবে এটাও সত্য যে, সহযোগিতা না করলেও, আমেরিকার জাতীয় গোয়েন্দা বিভাগের অধিকর্তা তুলসী গ্যাবার্ড গত মার্চেই দাবি করেছিলেন যে ইরান পারমাণবিক অস্ত্র তৈরির চেষ্টা করছে না। ফলে যুদ্ধের হেতু বোঝা মুশকিল। অথচ, বিনা উস্কানিতে চুক্তিবদ্ধ রাষ্ট্রের উপর আক্রমণ চালাল ইজ়রায়েল ও আমেরিকা। এই পরিস্থিতিতে তেহরানের চুক্তি ছেড়ে বেরিয়ে আসা দুর্ভাগ্যজনক, তবে অপ্রত্যাশিত বলা চলে না।
বলা বাহুল্য, চুক্তি থেকে বেরিয়ে এলে এনপিটি-র প্রয়োজনীয়তা মেনে চলার বাধ্যতা থাকবে না ইরানের। সে ক্ষেত্রে আইএইএ-র সুরক্ষা ব্যবস্থার অনুপস্থিতিতে রাষ্ট্রপুঞ্জের পরিদর্শক এবং বাকি বিশ্ব ইরানের পারমাণবিক কর্মসূচি সম্পর্কে অজ্ঞাত থাকবে। ফলে গোপনে পারমাণবিক অস্ত্র তৈরি করার পথ আরও সুগম হয়ে যাবে ইরানের ক্ষেত্রে। শুধু তা-ই নয়, ইরানের এ-হেন পদক্ষেপ অন্যান্য রাষ্ট্রের জন্য একটি আন্তর্জাতিক কাঠামো ত্যাগের নজির স্থাপন করতে পারে। ফলে, এই আক্রমণের তথাকথিত সাফল্যে ‘মোহিত’ আমেরিকা ও ইজ়রায়েলের পদক্ষেপ আগামী দিনে তাদেরই আহত করে কি না, সময়ই তা বলবে।দু’টি বিষয় স্পষ্ট। প্রথমত, ইজ়রায়েলের জন্য বর্তমান আমেরিকা কত দূর যেতে পারে, তার সম্পূর্ণ নতুন মাইলফলক তৈরি হল। ইতিমধ্যেই গাজ়ায় ইজ়রায়েলের মর্মান্তিক ধ্বংসকাণ্ডের বিরুদ্ধে আমেরিকার মাটিতে প্রতিবাদীদের লাগাতার নিষ্পেষণ চলেছে। এ বার তার সঙ্গে যোগ হল— ইজ়রায়েলের পক্ষ নিয়ে আমেরিকার প্রত্যক্ষ যুদ্ধে অবতরণ। আমেরিকার রাজনীতিকরাই অনেকে বিস্মিত: এ যুদ্ধ তো ‘তাঁদের’ নয়, তা হলে কেন এই প্রত্যক্ষ অংশগ্রহণ! বস্তুত, ইরানের সঙ্গে আমেরিকার শত্রুতা অনেক পুরনো, ১৯৭৯ সালের ‘ইরানি বিপ্লব’-এর পর থেকেই তা চলছে। এই শতকের গোড়ায় প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট জর্জ ডব্লিউ বুশ (জুনিয়র) ঘোষণা করেছিলেন এক ‘অশুভ অক্ষ’-এর কথা— যার মধ্যে ইরানের নামটি জ্বলজ্বল করত। কিন্তু ইতিপূর্বে বুশ বা কোনও আমেরিকান প্রেসিডেন্টই ইরানের সঙ্গে সম্মুখসমরে প্রবৃত্ত হননি, বরং সন্তর্পণে সে সম্ভাবনা এড়িয়ে গিয়েছেন। ট্রাম্প বুঝিয়ে দিলেন, তিনি কেবল দেশাভ্যন্তরে নন, বিদেশনীতির ক্ষেত্রেও দুমদাম বেমক্কা বল পিটিয়ে দিতে পারেন। বলটি কোথায় পড়ল, তাতে ভয়ঙ্করতম বিপদতোরঙ্গের দ্বার খুলে গেল কি না, এ সবই তাঁর কাছে তুচ্ছ। যুদ্ধ, এমনকি পরমাণুকেন্দ্রের উপর বোমাবর্ষণের মতো যুদ্ধের আগেও তিনি তাঁর দেশের অন্য জনপ্রতিনিধিদের কাছে বিষয়টি উত্থাপন করলেন না— গণতান্ত্রিক রীতিনীতি বর্তমানের আমেরিকায় এতটাই নগণ্য। দ্বিতীয়ত, দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর থেকেই পরমাণু-প্রশ্নটি বিশ্বকূটনীতিতে একেবারে ভিন্ন মাত্রার বিপদ সূচিত করে। ট্রাম্পের আমেরিকা বুঝিয়ে দিল, তারা নিজের (এবং ইজ়রায়েলের) স্বার্থে বাকি পৃথিবীকে ভয়ঙ্করতম বিপর্যয়ের মুখে ঠেলে দিতে দ্বিধা করে না। প্রত্যাঘাতে ইরান যদি হরমুজ় প্রণালী বন্ধ করে, তবে বিশ্বদুনিয়ায় অর্থনৈতিক সঙ্কটও পৌঁছবে ভিন্ন মাত্রায়। অন্য শক্তিধর দেশগুলি (ব্রিটেন, ফ্রান্স, রাশিয়া, চিন), এবং রাষ্ট্রপুঞ্জ— বিপদ ঠেকাতে এখনই প্রয়াসী হোক। নতুবা এই নতুন ‘একমেরু বিশ্ব’ ধ্বংসের মুখোমুখি দাঁড়াবে।আপাতত ইরান এবং ইজ়রায়েলের মধ্যে যুদ্ধকে ধামাচাপা দিয়ে বিরতির প্রয়াস চলছে। কূটনৈতিক বিশেষজ্ঞদের মতে, সংঘাত যে পর্যায়ে পৌঁছেছিল আপাতত কিছু দিনের জন্য তা শান্ত হবে। কিন্তু এই ঘটনা নিঃসন্দেহে পশ্চিম এশিয়ার সঙ্গে যুক্ত অর্থনৈতিক এবং কৌশলগত ক্ষেত্রে বড় প্রশ্নচিহ্ন তৈরি করল।
প্রাথমিক ভাবে ইরানকে আক্রমণের প্রশ্নে আমেরিকা ইজ়রায়েলের সঙ্গে যোগ দেওয়ার পর পশ্চিম এশিয়ায় অর্থনৈতিক এবং রাজনৈতিক অস্থিরতা বেড়েছে। আপাতত তাতে আমেরিকার প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প বিরতি দিলেও ভবিষ্যতের জন্য ফাটল ধরেই রইল। সেখানে আবারও সঙ্কট তৈরি হতে পারে খুব শীঘ্রই। সে ক্ষেত্রে ওই অঞ্চলের সঙ্গে ভারতের ক্রমবর্ধমান সংযোগের পরিকল্পনা ব্যাহত হবে, অন্য দিকে সার্বিক ভাবে বিশ্ব রাজনীতিতেও ব্লক রাজনীতি আরও মাথাচাড়া গিয়ে উঠবে বলে মনে করা হচ্ছে।
কূটনৈতিক শিবিরের মতে, পশ্চিম এশিয়ার এই অশান্তির একাধিক কূটনৈতিক দিক রয়েছে। প্রথমত, পশ্চিম এশিয়ার সঙ্গে ভারতের বৃহত্তর পরিকল্পনাগুলি ভেস্তে যাওয়া। জ্বালানির দাম বাড়বে, অঞ্চলের কৌশলগত চিড়গুলিও এমনভাবে বাড়বে যে নয়াদিল্লির পক্ষে তাকে অস্বীকার করে এগিয়ে যাওয়া দুঃসাধ্য হয়ে দাঁড়াবে। এই অঞ্চলে বসবাসকারী বড় সংখ্যক অনাবাসী, প্রবাসী ভারতীয় বিদেশি মুদ্রা পাঠান দেশে। সেখানেও অনিশ্চয়তা কমবেশি তৈরি হয়েছে বলে খবর। ভারতে আয়োজিত জি২০সম্মেলনে যে স্বপ্ন দেখা হয়েছিল, সেই ভারত-পশ্চিম এশিয়া-ইউরোপ অর্থনৈতিক করিডর এবং চাবাহার প্রকল্পের কাজও আপাতত বিশ বাঁও জলে। ওই বন্দরকে মধ্য এশিয়ার দরজা হিসাবে ব্যাখ্যা করেছিল নয়াদিল্লি। যতই সংঘর্ষ বিরতি হোক, পরিস্থিতি সম্পূর্ণ স্বাভাবিক হতে এখনও সময় লাগবে।
কূটনৈতিক শিবিরের মতে, পশ্চিম এশিয়ায় অস্থিরতার প্রভাব বৃহত্তর। এটা ঘটনা যে ইরানের সঙ্গে তার অনেক প্রতিবেশী রাষ্ট্রেরই সদ্ভাব নেই। কিন্তু সে দেশের পরমাণু ভাঁড়ারে আমেরিকার বোমা বর্ষণের সিদ্ধান্ত এবং ইজ়রায়েলের সঙ্গে হাত মেলানোর ফলে ইরানের প্রতিবেশী রাষ্ট্রগুলির পক্ষে তেল আভিভের সঙ্গে অদূর ভবিষ্যতে করমর্দন করা কার্যত অসম্ভব হয়ে দাঁড়াচ্ছে। সুন্নি অধ্যুষিত পশ্চিম এশিয়ায় ইরান খুব জনপ্রিয় নয় ঠিকই, কিন্তু ইজ়রায়েলও ঘৃণ্য তাদের কাছে। বিশেষ করে গাজ়ার নিরপরাধ মানুষের উপর আক্রমণের পর। এই সুযোগে রাশিয়া এবং চিন তাদের ভূকৌশলগত প্রভাব এই অঞ্চলে খাটাতে শুরু করেছে। ইজ়রায়েল এবং আমেরিকাকে চ্যালেঞ্জ ছোড়ার এ এক নতুন মঞ্চ তাদের কাছে। ফলে এই অঞ্চলের অঙ্ক আরও জটিল হয়ে দাঁড়াচ্ছে।
তাৎপর্যপূর্ণভাবে ইউরোপ এখনও সে ভাবে স্বর চড়াচ্ছে না, অপেক্ষা করছে। তবে সূত্রের মতে, অবশ্যই তারা প্রশ্ন তুলবে, কেন আমেরিকা দুরের রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে বল প্রয়োগ করেছে? কেন আমেরিকা তাদের সুরক্ষার জন্য নেটো শরিকদের মূল্য দিতে বাধ্য করছে কেন মাঝপথে ইউক্রেনের হাত ছেড়ে দেওয়া হয়েছে? ইরান-ইজ়রায়েল অশান্তির ফলে সরাসরি দুর্ভোগে পড়েছে ইউরোপ। কারণ, রাশিয়ার সঙ্গে ইউক্রেনের শান্তির টেবিলে বসার সুযোগ অনেকটাই পিছিয়ে গেল। ইউক্রেনের সঙ্গে সমঝোতার কোনও লক্ষণই মস্কো দেখাচ্ছে না।
সব শেষে আমেরিকা এবং ইজ়রায়েলের যৌথ হামলা কোনও আন্তর্জাতিক আইনকানুনের ধার ধারেনি। এর ফলে রাষ্ট্রপুঞ্জের গ্রহণযোগ্যতা এবং বিশ্বাসযোগ্যতা আরও বেশি করে খাটো হচ্ছে। আমেরিকার এই আক্রমণ আন্তর্জাতিক আইনের দুর্বলতা হিসেবেই প্রতিপন্ন হচ্ছে বলে মনে করছে কূটনৈতিক শিবির।