নেপালে জব্দ ওলি

নেপালের সর্বোচ্চ আদালত মঙ্গলবার দেশের প্রতিনিধি সভার বৈধতা ঘােষণা করল। ফলে প্রধানমন্ত্রী কে পি শৰ্মা ওলি প্রতিনিধি সভা বাতিলের যে ঘােষণা করেছিলেন তা খারিজ হয়ে গেল।

Written by SNS Kolkata | February 25, 2021 8:45 pm

কে পি শৰ্মা ওলি (File Photo: IANS)

নেপালের সর্বোচ্চ আদালত মঙ্গলবার দেশের প্রতিনিধি সভার বৈধতা ঘােষণা করল। ফলে প্রধানমন্ত্রী কে পি শৰ্মা ওলি প্রতিনিধি সভা বাতিলের যে ঘােষণা করেছিলেন তা খারিজ হয়ে গেল। এতে প্রধানমন্ত্রী ওলি আরও কোনঠাসা হয়ে পড়লেন। কারণ ইতিমধ্যেই প্রধানমন্ত্রীকে কোনও দলের সদস্য নয় বলে দুই কমিউনিস্ট পার্টির পক্ষে ঘােষণা করা হয়েছিল। 

ডিসেম্বর মাসে প্রধানমন্ত্রী প্রতিনিধি সভা ভঙ্গের কথা ঘােষণা করে দেশকে এক সাংবিধানিক সঙ্কটের মধ্যে ফেলে দিয়েছিলেন। দুই মাস প্রতিনিধি সভা ভঙ্গের ঘােষণার পর সর্বোচ্চ আদালত রাষ্ট্রপতি বিদ্যাদেবী ভান্ডারিকে নিরপেক্ষতা বজায় রেখে কাজ চালিয়ে যাওয়ার পক্ষে রায় দিয়েছে। ফলে শাসক নেপাল কমিউনিস্ট পার্টি (এনসিপি) বিশেষত পুষ্পকুমার দাহাল ওরফে প্রচন্ড নেতৃত্বাধীন বিক্ষুব্ধ গােষ্ঠীতে শান্ত করা যাবে বলে মনে করা হচ্ছে। 

প্রধান বিচারপতি চোলেন্দ্র শামসের নেতৃত্বে পাঁচ সদস্যের সাংবিধানিক বেঞ্চ ২৭৫ সদস্যের নিম্নকক্ষের ভঙ্গ করার সরকারি সিদ্ধান্ত পর্যালােচনা করে। এর ফলে হিমলায়ের এই দেশে প্রশাসনিক কাজকর্ম প্রায় অচল হয়ে পড়েছিল। তবে আদালতের এই সিদ্ধান্ত কি চলতে থাকা সাংবিধানিক সঙ্কট কাটাতে বা পূর্বের ঘােষণা মতাে ৩০ এপ্রিল থেকে ১০ মে’র মধ্যে নতুন করে নির্বাচনের দিকে এগিয়ে নিয়ে যাবে না তাে? 

আদালত প্রধানমন্ত্রীর প্রতিনিধি সভা ভঙ্গের বিষয়টিকে অসাংবিধানিক আখ্যা দিয়েছে। এমনকী আগামী তেরো দিনের মধ্যে প্রতিনিধি সভার অধিশেন ডাকারও নির্দেশ দিয়েছে সাধারণ কাজকর্ম চালুর জন্য। প্রধানমন্ত্রীর সভা ভেঙে দেওয়ার ঘােষণায় প্রচণ্ড নেতৃত্বাধীন নেপাল কমিউনিস্ট পার্টি গােষ্ঠীর মধ্যে বিক্ষোভের সৃষ্টি করে। 

উল্লেখ্য প্রচণ্ড শাসক দলের যুগ্ম চেয়ারম্যানও বটেন। প্রধানমন্ত্রী কেপি শর্মা ওলির প্রতিনিধি সভা ভেঙে দেওয়ার সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে এবং সভার কাজ স্বাভাবিকভাবে চালানাের জন্য শাসক দলের চিফহুইপ দেব প্রসাদ গুরুং সহ তেরােটি রিট পিটিশন দায়ের করা হয় সর্বোচ্চ আদালতে। মামলাটির শুনানির সময়ে প্রধানমন্ত্রী ওলি তাঁর সিদ্ধান্তের সমর্থনে জানান, শাসকদলের একটি গােষ্ঠী ‘সমান্তরাল সরকার’ চালানাের চেষ্ট করেছিল। 

তিনি আরও জানান, শাসকদলের একটি গােষ্ঠী তার সকল কাজেই বাধার সৃষ্টি করছিল এবং সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে মত প্রকাশ করায় তিনি বাধ্য হয়েই এমন সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। কিন্তু প্রধানমন্ত্রী এই বক্তব্য আদালতে কোনও প্রভাব বিস্তার করতে সক্ষম হয়নি। 

এর ওপর জানুয়ারি মাসে প্রচণ্ড নেতৃত্বাধীন এনসিপি দলবিরােধী কার্যকলাপের অভিযােগে প্রধানমন্ত্রী কেপি শর্মা ওলিকে দলের প্রাথমিক সদস্যপদ থেকেও বহিষ্কার করে। দলের চেয়ারপার্সনের পদ থেকে ওলিকে অপসারিত করে মাধম নেপালকে চেয়ারম্যান নিযুক্ত করা হয়।

প্রচণ্ড নেতৃত্বাধীন এনসিপি এবং প্রধান বিরােধীদল নেপালি কংগ্রেস প্রধানমন্ত্রীর প্রতিনিধি সভা ভেঙে দেওয়ার সিদ্ধান্তকে অসাংবিধানিক ও অগণতান্ত্রিক বলে আখ্যা দিয়ে অবিলম্বে তা প্রত্যাহারের দাবি জানায়। তবে সুপ্রিম কোর্ট সংবিধানের রক্ষাকর্তা হিসেবে আসরে অবতীর্ণ হওয়ায় দেশের সকল ক্ষেত্রেই একটা স্বস্তির আবহাওয়া বিরাজ করতে শুরু করেছে।