• facebook
  • twitter
Saturday, 19 July, 2025

দেশবাসী আগে জানুক

বর্তমান সংসদের বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের প্রতিনিধিরা বিদেশ সফরে রয়েছেন। আন্তর্জাতিক দুনিয়ায় জঙ্গিদের মদতদাতা পাকিস্তানের স্বরূপ তুলে ধরতেই এই সফর।

ফাইল ছবি

সন্ত্রাসের মদতদাতা পাকিস্তানের মুখোশ খুলতে এই মুহূর্তে বিদেশের বিভিন্ন দেশ সফর করছেন সংসদের সর্বদলীয় প্রতিনিধি দল। এই প্রতিনিধিরা দেশে ফেরার পর সংসদের বিশেষ অধিবেশন ডাকার দাবি জানিয়েছেন পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। নিজের এক্স হ্যান্ডেলে তৃণমূল নেত্রী মমতা লিখেছেন, ‘সাম্প্রতিক পরিস্থিতি এবং সেই সংক্রান্ত সমস্ত খুঁটিনাটি বিষয় এবং সর্বদলীয় প্রতিনিধিদের বিদেশ সফর নিয়ে বিস্তারিত দেশবাসীর জানা উচিত। সংসদের বিশেষ অধিবেশনের মাধ্যমে তা সর্বসমক্ষে আমার আবেদন জানাচ্ছি। প্রতিনিধি দলের সদস্যরা ভারতে ফিরে আসার পর সবার আগে সে বিষয়ে জানার অধিকার রয়েছে দেশবাসীর।’

বিভিন্ন সূত্রে জানা গিয়েছে, সংসদীয় প্রতিনিধি দলগুলি দেশে ফেরার পর সংসদের বিশেষ অধিবেশন ডাকার বিষয়ে চিন্তাভাবনা শুরু হয়েছে কেন্দ্রীয় সরকারের অন্দরে। জুন মাসের প্রথম দিকেই এমন অদিবেশন ডাকা হতে পারে বলে জল্পনা শোনা যাচ্ছে। জাতীয়পতাকার ছবি দিয়ে এক্স হ্যান্ডলে তৃণমূল নেত্রী লিখেছেন, ‘সর্বদলের প্রতিনিধিরা যেভাবে ভারতের বিরুদ্ধে সন্ত্রাসবাদী কার্যকলাপ নিয়ে গোটা বিশ্ব ঘুরে ঘুরে সকলকে সবকিছু জানাচ্ছেন তাতে আমি খুশি। আমি সবসময়েই বলেছি, তৃণমূল এ বিষয়ে কেন্দ্রের পাশে থাকবে। দেশের সুরক্ষা ও সার্বভৌমত্ব রক্ষায় কেন্দ্র যে সিদ্ধান্ত নেবে, সেটাই আমাদের কাছে সমর্থনযোগ্য। এবার আমি কেন্দ্রের কাছে আর্জি জানাচ্ছি, সর্বদলের প্রতিনিধিরা বিদেশ ভ্রমণ সেরে ফিরে আসার পর সংসদে বিশেষ অধিবেশন ডাকা হোক। আমি মনে করি, সাম্প্রতিক পরিস্থিতি ও সেই সংক্রান্ত যাবতীয় খবরাখবর সবার আগে দেশবাসীর জানা উচিত।’

পহেলগামে পাক মদতপুষ্ট জঙ্গিদের হত্যালীলার পর পাল্টা পাকিস্তানকে প্রত্যাঘাত করেছে ভারত। অপারেশন সিঁদুর অভিযানের মাধ্যমে ভারতীয় সেনা পাক অধিকৃত কাশ্মীর ও পাকিস্তানের একাধিক জঙ্গিঘাঁটি গুঁড়িয়ে দিয়েছে। এই ঘটনায় তীব্র প্রতিক্রিয়া দেখা গিয়েছে দেশের রাজনৈতিক ও কূটনৈতিক মহলে। সেই সময় দেশের সর্বস্তরে পাকিস্তানের বিরুদ্ধে ক্ষোভের বহিঃপ্রকাশ ঘটে। এই পরিস্থিতিতে বিষয়টি নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করার জন্য সংসদের বিশেষ অধিবেশন ডাকার দাবি তুলেছিল বিরোধী দলগুলি। সেই দাবির পরিপ্রেক্ষিতে কেন্দ্রীয় সরকারও বিশেষ অধিবেশন ডাকার চিন্তাভাবনা শুরু করেছে বলে জানা গিয়েছে। তবে সন্ত্রাসবাদী পাকিস্তানের মুখোশ খুলে দিতে বিদেশ সফরে বেরিয়েছে সংসদের একাধিক প্রতিনিধি দল। তাঁরা ফিরলেই এই বিশেষ অধিবেশন হতে পারে বলে সূত্রের খবর।

সংসদের বিশেষ অধিবেশন নিয়ে সরকারের সম্ভাব্য পরিকল্পনার একটি রূপরেখা তৈরি হয়েছে। পহেলগাম হামলা, অপারেশন সিঁদুর এবং আন্তর্জাতিক মহলে ভারতের পক্ষ থেকে যে কূটনৈতিক পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে, তার বিস্তারিত বিবরণ সংসদের কার্যবিবরণীতে স্থায়ীভাবে লিপিবদ্ধ করা হবে। এটি ভবিষ্যতের আন্তর্জাতিক সম্পর্কের কৌশল নির্ধারণে একটি দৃষ্টান্ত হয়ে থাকবে। এই বিশেষ অধিবেশনের শুরুতে বক্তব্য রাখবেন প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিং। তিনি সেনার ভূমিকা, অভিযানের কৌশল এবং ভবিষ্যৎ নিরাপত্তা নিয়ে সংসদকে অবহিত করবেন বলে জানা গিয়েছে। আগামী জু মাসের মাঝামাঝি সমেয়ে সংসদে বিশেষ অধিবেশন ডাকা হতে পারে বলে রাজনৈতিক মহলের ধারণা।

অন্যদিকে বিরোধী পক্ষও বিশেষ অধিবেশনের প্রস্তুতি নিতে শুরু করেছে। তারা একদিকে যেমন জঙ্গি দমনে সরকারের পদক্ষেপের প্রশংসা করেছে, তেমনই তথ্যের স্বচ্ছতা, নিরাপত্তা, ব্যর্থতা এবং অন্যান্য তথ্যের দাবি জানাচ্ছে। ফলে এই অধিবেশন বাস্তব অর্থেই একটি গুরুত্বপূর্ণ কূটনৈতিক ও রাজনৈতিক পর্ব হয়ে উঠতে পারে।

বর্তমান সংসদের বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের প্রতিনিধিরা বিদেশ সফরে রয়েছেন। আন্তর্জাতিক দুনিয়ায় জঙ্গিদের মদতদাতা পাকিস্তানের স্বরূপ তুলে ধরতেই এই সফর। পহেলগাম হামলার পর এটি এক বিশেষ কূটনৈতিক পদক্ষেপ বলে মনে করছে বিশেষজ্ঞ মহল। বিদেশ সফররত প্রতিনিধিদের অভিজ্ঞতার কথা জানাতে বিশেষ অধিবেশনে প্রথমে সুযোগ দেওয়া হবে। এরপর প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর জবাবি ভাষণ দিয়ে বিশেষ অধিবেশন শেষ হওয়ার সম্ভাবনা। সংসদের আসন্ন বিশেষ অধিবেশেন আন্তর্জাতিক মহলের সামনে ভারতের শক্ত অবস্থানকে আরও স্পষ্ট করে তুলবে।