ড. কুমারেশ চক্রবর্তী
গত বাইশে এপ্রিল কাশ্মীরে ২৬ জন নিরীহ হিন্দু পর্যটককে বেছে বেছে হত্যা করেছে চারজন পাকিস্তানের মদনপুষ্ট জঙ্গি। যেসব মহিলার মাথায় সিঁদুর আছে, সঙ্গে সঙ্গেই তার স্বামীকে হত্যা করেছে। এমনকি সন্দেহের বসে একজন হিন্দু পর্যটককে প্যান্ট খুলে দেখে হত্যা করা হয়েছে। সদ্য বিবাহিত হানিমুনে আসা দম্পতি সহ প্রবীণ ব্যক্তি কাউকেই তারা ছাড় দেয়নি। এই নির্মম হত্যাকাণ্ড করেছে টি আর এফ অর্থাৎ দ্য রেজিস্ট্যান্স ফ্রন্ট। অথচ তাদের বিবৃতি জারির আগেই পাকিস্তান সরকার বিবৃতি দিয়ে জানিয়ে দেয় যে, এটা ভারতের নিজস্ব নাগরিকের ওপর অত্যাচারের প্রতিফল কোন জঙ্গি গোষ্ঠী এর জন্য দায়ী নয়। কিন্তু তারপরেই এই হত্যার দায়ভার স্বীকার করে টি আর এফ। তাই আমি প্রথমেই টি আর এফ এর একটু পরিচয় দিয়ে রাখি।
Advertisement
২০১৯ সালে ভারতের সংবিধান থেকে ৩৭০ অনুচ্ছেদ বিলোপের পরে এই সন্ত্রাসবাদি সংগঠনের জন্ম! এরা আসলে পাকিস্তানের জঙ্গি গোষ্ঠী লস্কর ই তইবার অন্যতম ছায়া সংগঠন। এদের মূল লক্ষ্য হলো কাশ্মীরে আসা শ্রমিক, কাশ্মীরি পন্ডিত এবং কাশ্মীরের স্থিতাবস্থা নষ্ট করা। লস্কর, জয়েস ই মোঃ, হিজবুল মুজাহিদীন সহ একাধিক জঙ্গি গোষ্ঠীর লোকেদের এরা নিযুক্ত করে, আর এই সমগ্র সংগঠনের নেপথ্যে মদত ও অর্থ যোগায় পাকিস্তানের গুপ্তচর সংস্থা আইএসআই। আলোচ্য সন্ত্রাসবাদী সংস্থার জন্মদাতা হচ্ছে লস্কর কমান্ডার শেখ সাজ্জাদুল, এদের মূল মাথা হচ্ছে সাইফুল্লাহ খালিদ। এদের হাতেই গত বছর জুন মাসে কাশ্মীরের এইসি জেলায় ১০ জন নিরাপরাধ তীর্থযাত্রীর মৃত্যু হয়েছে। জানা গেছে ফেব্রুয়ারি মাসে সাইফুল্লাহ নাকি পাকিস্তানের কাঞ্চনপুরে পাক সেনা ব্যাটেলিয়ানের সামনে বক্তৃতা দেন, তিনি বলেন, “২০২৬ সালের ২ ফেব্রুয়ারির মধ্যেই আমরা সমগ্র কাশ্মীর দখল করে নেব এবং আমাদের মুজাহিদরা ভারতে আরো ভয়ংকর নৃশংস হামলা চালাবে।” গতবছর অ্যাবটাবাদের জঙ্গলে শইফুল্লাহকে দেখা গেছে। অ্যাবটাবাদ বলতে মনে আছে, এখানেই এক বাড়িতে সপরিবারে লাদেন কে হত্যা করেছিল মার্কিন নৌ সেনারা।
নিরাপরাধ হিন্দু পর্যটকদের বেছে বেছে হত্যার প্রতিবাদে রাস্তায় নেমেছে সারা ভারত। ভারতের প্রধানমন্ত্রী ঘোষণা করেছেন, যারা এই হত্যাকাণ্ড ঘটিয়েছে এবং যারা এই হত্যাকারীদের মদত দিয়েছেন প্রত্যেককে উপযুক্ত শাস্তি প্রদান করা হবে। প্রত্যেকটি নিহতের পরিবার এই ঘটনার ন্যায়বিচার পাবেন। ইতিমধ্যেই ভারত সরকার কয়টি পদক্ষেপ নিয়েছেন যার মধ্যে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হলো সিন্ধু জল চুক্তি বাতিল করা। তাছাড়া পাকিস্তানের সঙ্গে সমস্ত প্রকার বাণিজ্যিক সম্পর্ক ছিন্ন করা হয়েছে, পাকিস্তানের কোন দ্রব্য আমদানি করা বা রপ্তানি করা হবে না। পাকিস্তানকে ভারতীয় আকাশ সীমা, জলসীমা বা স্থল সীমা ব্যবহার করতে দেয়া হবে না। পাকিস্তানের সমস্ত পণ্য ভারতে ঢোকা নিষিদ্ধ করা হয়েছে এমনকি সমস্ত বন্দরের পাকিস্তানি জাহাজ বা পাকিস্তানী পতাকা বাহি কোন জাহাজকে ঢুকতে দেয়া হবে না। তাছাড়া ভারতে থাকা সমস্ত পাকিস্তানিদের ভিসা বাতিল করা হয়েছে। নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে তাদের দেশে ফিরে যেতে বাধ্য করা হয়েছে। বলা হয়েছে কূটনৈতিক সম্পর্ক ছিন্ন না করা হলেও নিয়ন্ত্রণ করা হয়েছে। তাছাড়া আন্তর্জাতিক মঞ্চে বিশেষ করে রাষ্ট্রসঙ্ঘে পাকিস্তানের বিরুদ্ধে প্রমাণসহ সন্ত্রাসবাদী কার্যকলাপের তথ্য তুলে ধরা হয়েছে এবং পাকিস্তানকে যাতে আই এম এফ বা আন্তর্জাতিক অর্থভাণ্ডার কোন ঋণ কিংবা সাহায্য না দেয় তার জন্য বিভিন্ন ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে ভারত।
Advertisement
ভারতের আলোচ্য সিদ্ধান্তগুলি গ্রহনের ফলে পাকিস্তান নিদারুণ আর্থিক সংকটের মুখে পড়েছে। ভারতীয় পণ্য সরবরাহ বন্ধ হওয়াতে সেখানে খাদ্যাভাব দেখা দিয়েছে। জিনিসপত্রের দাম আকাশ ছোঁয়া। সবচেয়ে সংকটে পড়েছে পাকিস্তান সিন্ধু চুক্তি বাতিল হওয়ার ফলে। সিন্ধু নদের আশি শতাংশ জল ভারত পাকিস্তান কে দেয়। এর ওপরে পাকিস্তানের সমগ্র সেচব্যবস্থা টিকে আছে। এই জল বন্ধ হওয়ার ফলে পাকিস্তান এখন সুখা মরুভূমিতে পরিণত হতে চলেছে। একইসঙ্গেই ভারত কৌশলগতভাবে বিভিন্ন নদনদীর জল বিভিন্ন বাঁধের মাধ্যমে যে নিয়ন্ত্রণ করত পাকিস্তানকে বন্যার হাত থেকে রক্ষার জন্য, পহেলগাও হত্যাকাণ্ডের পর সেইসব গেট খুলে দেয়া হয়েছে। ভারত আর জল নিয়ন্ত্রণ করছে না বরং আটকে থাকা জল ছেড়ে দেয়ার ফলে পাকিস্তানের একাংশ বন্যায় ভেসে গেছে।
অপারেশন সিন্দুর
পহেলগাঁও ঘটনার ঠিক ১৫ দিনের মাথায় ভারত সামরিক ক্ষমতা প্রয়োগ করল, যে সামরিক অভিযানের নাম দেয়া হয়েছে অপারেশন সিঁদুর। অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ এই নাম। কারণ সন্ত্রাসবাদীদের হত্যায় অধিকাংশ মহিলার মাথার সিঁদুর মুছে গেছে। তাই তাদের সম্মান জানাতে এবং তাদের প্রতিশোধ নিতেই এই অভিযানের নাম দেয়া হয়েছে অপারেশন সিন্দুর। শোনা গেছে স্বয়ং প্রধানমন্ত্রী এই নামটি দিয়েছেন। সাত ই মে মধ্যরাত্রে রাত একটা পাঁচ থেকে দেড়টার মধ্যেই ১০০ কিলোমিটার পর্যন্ত ভেতরে ঢুকে নয়টি প্রধান খাঁটি সহ পাক অধিকৃত কাশ্মীরের অধিকাংশ সন্ত্রাসবাদী ঘাঁটিগুলিকে ধ্বংস করে দিয়েছে ভারতের বিমান বাহিনী এবং তারপর থেকেই লাগাতার চলছে ভারতের এই সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে অভিযান। করাচি বন্দর, করাচি বন্দরের নৌবাহিনী, লাহোর, রাওয়ালপিন্ডি, রাজধানী ইসলামাবাদ প্রভৃতি অঞ্চলের অস্ত্রাগারগুলিকে ভারতীয় বিমান বাহিনী ধ্বংস করে দিয়েছে। যদিও পালটা হিসেবে পাকিস্তান প্রচুর পরিমাণে ড্রোন এবং বিমান হানা চালিয়েছে ভারতের সীমান্ত অঞ্চলে। কিন্তু ভারতের আকাশ রক্ষাকারী সুদর্শন পাকিস্তানের এই সব রকমের প্রচেষ্টা আকাশেই ধ্বংস করে দিয়েছে। গত ২/৩ দিনে প্রায় ৫০০ ড্রোন এবং সাত বিমানকে ধ্বংস করেছে ভারতের সুরক্ষা অস্ত্র সুদর্শন যার আসল নাম এস ৪০০।
পাকিস্তান ভারতের অপারেশন সিন্দুরের যোগ্য জবাব দিতে না পেরে সীমান্তবর্তী ভারতের অসামরিক নাগরিকদের ওপর যথেচ্ছ গুলি বর্ষন করছে, বোমাবর্ষণ করছে ড্রোনের মাধ্যমে। যাতে নিরীহ ৫০ ভারতীয়র মৃত্যু ঘটছে।
পাকিস্তানের আভ্যন্তরীণ অবস্থা এখন অত্যন্ত শোচনীয়। জিনিসপত্রের দাম বেড়েছে আকাশ ছোঁয়া। খাদ্য নেই, পানি নেই, অস্ত্র নেই। এই অবস্থায় পাকিস্তানের সামরিক বাহিনীতেও একটা অভ্যুত্থান ঘটে গেছে পাকিস্তান স্বীকার না করলেও শোনা যাচ্ছে তাদের সেনা প্রধানকে সরিয়ে দেয়া হয়েছে।
বালুচিস্তানের স্বাধীনতা
পাকিস্তানের এই নাস্তানাবুদ অবস্থায় ভারতের প্রায় ১৪০ কোটি মানুষের ইচ্ছা এই সুযোগে পাকিস্তান অধিকৃত কাশ্মীরকে সম্পূর্ণ মুক্ত করা হোক এবং চিরতরে সন্ত্রাসবাদ বন্ধ করতে এটা খুবই জরুরী।
ভারতের সব মহল থেকেই এই দাবি উঠেছে এই দাবির সঙ্গে আবেগ এবং প্রতিশোধের মানসিকতা জড়িয়ে থাকলেও এটা খুব ন্যায় সঙ্গত এবং অত্যন্ত সময়োচিত দাবি। কিন্তু দীর্ঘ প্রায় ৫০ বছর আন্তর্জাতিক সম্পর্কের পড়ুয়া এবং অধ্যাপক রূপে যে সামান্য জ্ঞান আমার হয়েছে তার পরিপ্রেক্ষিতে বলতে পারি ভারত এই চমকপ্রদ সিদ্ধান্ত গ্রহণ করবে না। তার প্রধান কারণ পাক অধিকৃত কাশ্মীরে ভারতের মাটি মোটেই শক্ত নয়। ভারতের লক্ষ্য এখন বালুচিস্থানের স্বাধীনতা। পাকিস্তানের ডামাডোলের মধ্যে বালুচ স্বাধীনতা সংগ্রামীরা চরম আঘাত হেনেছে পাকিস্তান সামরিক বাহিনীর ওপর। ফলে তারাও এখন স্বাধীনতা ঘোষণা করেছে পাকিস্তানের বিরুদ্ধে। বালুচিস্থানের অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ শহর ও পাকিস্তানের সামরিক ঘাঁটি এবং বালুচিস্থানের রাজধানী কোয়েটা বিদ্রোহীরা দখল করে নিয়েছে। পাকিস্তান আর্মিরা শিবির ছেড়ে পালিয়ে গেছে। ফলে পড়ে থাকা প্রচুর পরিমানে অস্ত্র, গোলাবারুদ কামান যুদ্ধের বিভিন্ন ধরনের রসদ এখন বালুচ বিদ্রোহীদের হাতে। এমনকি বেশ কয়েকটি সামরিক বিমান তারা দখল করে নিয়েছে।
বালুচরা চিরকালই অত্যন্ত স্বাধীনচেতা যোদ্ধা জাতি। নির্ভীক অকুতোভয় দক্ষ সৈনিক হিসেবে তাদের আন্তর্জাতিক খ্যাতি আছে। তাই ব্রিটিশ আমলে শুধু বালুচদের নিয়েই ব্রিটিশ সরকার তৈরি করেছিল বালুচ রেজিমেন্ট।
বালুচিস্থান এককালে ছিল হিন্দু রাজ্য। সেবা রাজবংশ এখানে দীর্ঘকাল রাজত্ব করেছে। পরবর্তীকালে মুঘলদের সঙ্গে যুদ্ধে তারা পরাজিত হয়। তারপর মোগলদের কাছ থেকে অঞ্চলটি ছিনিয়ে নেয় পারস্য সম্রাট। আরো পরে পারস্যের হাত থেকে মুঘলরা এই অঞ্চলটিকে উদ্ধার করে। কিন্তু কোনকালে বালুচ জাতি কোন সাম্রাজ্যের অধীনতা স্বীকার করেনি। তাই ১৯৪৭ সালের স্বাধীনতার পরে বালচিস্থান নিজেকে স্বাধীন রাষ্ট্র হিসেবে ঘোষণা করেছিল। ২২৭ দিন পর্যন্ত তারা স্বাধীন ছিল। অনেকেই চেয়েছিলেন ভারতের সঙ্গে যুক্ত হতে। কিন্তু সেই সময়ের এক প্রাদেশিক নেতা খান মীর হঠাৎ জিন্নার সঙ্গে এক গোপন চুক্তি করে বালুচ জাতির প্রতি বিশ্বাসঘাতকতা করে এবং পাকিস্তানের সঙ্গে যুক্ত হয়। কিন্তু কোনদিনই এই প্রদেশের মানুষরা পাকিস্তানের অংশ বলে নিজেদের মনে করেনি। ফলে পাকিস্তান বালুচ-জাতির ওপর নিদারুণ নির্যাতন শোষণ ও শাসন চালিয়ে এসেছে, ঠিক যেমন তারা পূর্ব পাকিস্তানের ওপর করেছিল। বালচিস্থানের কোন প্রকার উন্নয়ন দিকে পাকিস্তান নজর দেয়নি। তাই পাকিস্তানের সর্বাধিক আয়তন বিশিষ্ট প্রদেশ হওয়া সত্বেও সবচেয়ে দরিদ্র প্রদেশ হিসেবে থেকে গেছে। শিক্ষা, স্বাস্থ্য, শিল্প উন্নয়ন, কৃষি, সড়ক, পানীয় জল কোন কিছুতেই পাকিস্তান বালুচিদের ওপর নজর দেয়নি। তাই পাকিস্তানে শিক্ষার হার যেখানে শতকরা ৪৭ শতাংশ সেখানে বালুচিস্তানের শিক্ষার হার মাত্র কুড়ি শতাংশ। অথচ উচ্চশিক্ষিত মানুষের সংখ্যাও এখানে বিস্ময়কর। এখানকার অধিকাংশ মানুষ দারিদ্র সীমার নিচে বাস করে। অথচ প্রাকৃতিক সম্পদের শ্রেষ্ঠ ভান্ডার এখানে। বিভিন্ন রকমের খনিজ দ্রব্য, প্রাকৃতিক গ্যাস এমনকি সোনার খনিও রয়েছে। অথচ তা থেকে সম্পূর্ণ বঞ্চিত বালুচরা। অনেকটা হীরক রাজার দেশের মতো।তাই বালুচরা চির বিদ্রোহী জাতি। এমনকি একটা সময় স্বাধীন সরকারও তৈরি হয়েছিল। সেই সরকার এখন কানাডায় অবস্থিত। তার প্রধানমন্ত্রী নায়লা কাজমী ভারতের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক স্থাপনে আগ্রহী।২০১৬ সালে লাল কেল্লার ভাষণে ভারতের প্রধানমন্ত্রীর নরেন্দ্র মোদি বালুচ স্বাধীনতা সংগ্রামের কথা বলেছিলেন। তার পর থেকেই সংগ্রামীরা সকলেই ভারতকে তাদের অন্যতম প্রধান বন্ধু বলে মনে করে। নির্বাসিত সরকারের প্রধানমন্ত্রী ডক্টর নায়লা কাজমি ২১,২২,২৩ সালে ভারতে এসেছেন এবং সরকারের উচ্চপদস্থ আমলা ও মন্ত্রীদের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেছেন। তারা চায় বালুচিস্থানের স্বাধীনতা সংগ্রামে ভারত তাদের পাশে থাকুক যেমন বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধে ভারত ছিল প্রধান সহায়ক।
তাই ভারত এখন পাকিস্তান অধিকৃত কাশ্মীরকে মুক্ত করার থেকে বালুচিস্থানের স্বাধীনতার ব্যাপারে বেশি আগ্রহী। কৌশলগত দিক থেকে তারা চাইছে পাকিস্তানকে খন্ড-বিখন্ড করতে। বালুচিস্থান ও পাখতুনিস্তান, দুটি প্রদেশ যা পাকিস্তানের বিরুদ্ধে অত্যন্ত সক্রিয়। এই দুই জাতির মুক্তি সংগ্রামকে সাহায্য করে তাদের স্বাধীনতার স্বপ্নকে সফল করে তুলতেই ভারত বেশি আগ্রহী।
সর্বশেষ খবর, বালুচিস্তানের তিনটি বিদ্রোহী গোষ্ঠী বালোচিস্থান লিবারেশন আর্মি, বালুচিস্তান লিবারেশন ফ্রন্ট এবং বালোচ রিপাবলিকান গার্ডস তিন দিক থেকেই পাকিস্তানের সামরিক বাহিনী ও প্রশাসনকে ঘেরাও করে ফেলেছে। অনেক জায়গা থেকেই পাকিস্তান সেনা ও পুলিশ পালিয়ে যেতে বাধ্য হয়েছে। দশ তারিখে কোয়েটার ফাইজাবাদের পাক সেনাঘাঁটিতে বি এল এ হামলা চালায়। সিববিতে একটি সেনাঘাটির ওপরও হামলা চালানো হয়। তাছাড়া কেচ, মাসতুং এবং কাঁচিতেও বিদ্রোহীরা হামলা চালিয়ে সামরিক স্থানগুলি দখল করে নেয়। পাকিস্তানের পতাকা নামিয়ে দেয়া হয়।
পাকিস্তান প্রশাসন বলে এখন এখানে কিছু নেই বললেই চলে। মাত্র কয়েকদিন আগে পাকিস্তানের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী শহীদ খক্কন আব্বাসী বলেছিলেন, “বালুচিস্তানের ওপর পাক প্রশাসনের নিয়ন্ত্রণ খুব শীঘ্রই চলে যাবে।”পাকিস্তানের এক সরকার বিরোধী নেতাও বেশ কিছুদিন ধরে এই কথাটাই তার নিজের মহলে বারবার বলেছেন। তিনি এও বলেছেন, সরকারের উচিত ভারতের পেছনে না লেগে নিজের ঘর সামলানো!
পুনশ্চ: এই লেখা শেষ করার পর জানলাম মার্কিন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের চাপে নরেন্দ্র মোদী যুদ্ধ বিরতি ঘোষণা করেছেন। ভারতের রাজনীতি যাই হোক, বালুচ রাজনীতির কোন পরিবর্তন হবে না এটা আমি নিশ্চিত ভাবেই বলতে পারি।বেছে হত্যা করেছে চারজন পাকিস্তানের মদনপুষ্ট জঙ্গি। যেসব মহিলার মাথায় সিঁদুর আছে, সঙ্গে সঙ্গেই তার স্বামীকে হত্যা করেছে। এমনকি সন্দেহের বসে একজন হিন্দু পর্যটককে প্যান্ট খুলে দেখে হত্যা করা হয়েছে। সদ্য বিবাহিত হানিমুনে আসা দম্পতি সহ প্রবীণ ব্যক্তি কাউকেই তারা ছাড় দেয়নি। এই নির্মম হত্যাকাণ্ড করেছে টি আর এফ অর্থাৎ দ্য রেজিস্ট্যান্স ফ্রন্ট। অথচ তাদের বিবৃতি জারির আগেই পাকিস্তান সরকার বিবৃতি দিয়ে জানিয়ে দেয় যে, এটা ভারতের নিজস্ব নাগরিকের ওপর অত্যাচারের প্রতিফল কোন জঙ্গি গোষ্ঠী এর জন্য দায়ী নয়। কিন্তু তারপরেই এই হত্যার দায়ভার স্বীকার করে টি আর এফ। তাই আমি প্রথমেই টি আর এফ এর একটু পরিচয় দিয়ে রাখি।
Advertisement



