খোঁড়া মন্ত্রিসভা

বি এস ইয়েদুরাপ্পার কর্ণাটক সরকার প্রথম থেকেই খোড়া। সােমবার ধ্বনিভােটে জয়ী হওয়ার পরও পরিস্থিতির কোনও পরিবর্তন ঘটেনি।

Written by SNS Kolkata | August 5, 2019 4:50 pm

এইচ ডি কুমারস্বামী (File Photo: IANS)

বি  ২২৪ সদস্যের বিধানসভায় বিজেপির সদস্য সংখ্যা মাত্র ১০৫। কংগ্রেস ও জনতা দল (সেকুলার)-এর ১৭ জন বিধায়ক পদত্যাগ করায় মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে এইচ ডি কুমারস্বামীর পতন ঘটে। নিজ নিজ দলের হুইপ অমান্য করার জন্য এই বিধায়কদের সদস্যপদ বাতিল করেন স্পিকার কে আর রমেশকুমার।

বর্তমান বিধানসভার মেয়াদে এই বরখাস্ত বিধায়করা আর নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে পারবেন না। এই ১৭টি আসন শূন্য ঘােষিত হওয়ার পর সেগুলি পূরণ করার জন্য ৬ মাসের মধ্যে তাঁর নির্বাচন করতে হবে। এই ১৭টি নির্বাচনকেন্দ্রর একটিও বিজেপির ঘাঁটি হিসাবে পরিচিত নয়। বিজেপিতে যােগদানের জন্য তৈরি এই বিদ্রোহীদের বিরুদ্ধে ভােটদাতারা খাপ্পা হয়ে আছেন। দলত্যাগ করার সময় বিধায়করা সংবিধানের ১০১ ও ১০২ ধারা ও দশম তফসিলের ক্ষমতা ও সুযােগকে অবজ্ঞা করেছেন।

১০১ (৩) ধারায় কোনও বিধায়কের ইস্তফা স্বেচ্ছামূলক ও খাঁটি কিনা সে ব্যাপারে সন্তুষ্ট হওয়ার বিষয়টি স্পিকারের ওপর ছেড়ে দেওয়া হয়েছে। দশম তফসিলের ২ (খ) ধারায় বলা হয়েছে সভার নির্বাচিত কোনও সদস্যের সদস্যপদ বাতিল করা যাবে যদি তিনি তাঁর নিজ রাজনৈতিক দলের নির্দেশের বিপরীতে ভােট দেন বা ভােটদানে বিরত থাকেন।

জনপ্রিয় ধারণা যাই থাক না কেন স্পিকারের সিদ্ধান্তের ফলে বিধানসভার প্রকৃত সদস্যসংখ্যা নেমে আসে ২০৮-এ, যার ফলে মাত্র ১০৪ জন বিজেপি বিধায়ক ও নতুন মুখ্যমন্ত্রীকে সমর্থনকারী একজন নির্দল বিধায়কের সাহায্যে ইয়েদুরাপ্পা খুব সহজেই অগ্নিপরীক্ষায় উতরে যান। নিরপেক্ষ হওয়া সত্ত্বেও স্পিকারের সিদ্ধান্তকে শাসক জোট ও বিজেপি সমালােচনা করেছে। স্পিকার রমেশ কুমার কংগ্রেসের টিকিটেই বর্তমান বিধানসভায় নির্বাচিত হয়েছেন।

এক সপ্তাহ মুখ্যমন্ত্রীর পদে থাকা সত্ত্বেও ইয়েদুরাপ্পা এখনও তাঁর মন্ত্রিসভা গঠন করে উঠতে পারেননি। ২০টি মন্ত্রীপদের জন্য বিজেপির অন্তত ৬০ বিধায়ক দাবিদার। সংবিধানের ১৬৩ ধারায় বলা হয়েছে, রাজ্যপালকে তাঁর কাজকর্মের ব্যাপারে সহায়তা করতে পরামর্শ দিতে মুখ্যমন্ত্রীর নেতৃত্বে একটি মন্ত্রিসভা থাকবে। মনে হয় ইয়েদুরাপ্পা তাঁর ২০০৮-এর অভিজ্ঞতার ওপরই নির্ভর করছেন।

সেবারে সংখ্যাগরিষ্ঠতার চেয়ে তিনটি আসন কম পেয়ে ১০০টি আসন নিয়েই বিজেপি কর্ণাটকে সরকার গঠন করেছিল। সেই সময় তিনি কয়েকজন নির্দল সদস্যকে টোপ দিয়ে পক্ষে নিয়ে আসেন। এইভাবে তিনি দু’বছর সময় কাটিয়ে দেন। এই সময়কালে তিনি বিরােধী বিধােয়কদের প্রলােভন দেখিয়ে বিধানসভার সদস্যপদে ইস্তফা দিইয়ে সেইসব শূন্য আসনের উপনির্বাচনে সরকারি প্রশাসনযন্ত্র ব্যবহার করে নির্লজ্জভাবে জিতে নেওয়ার এক অদ্ভুত পদ্ধতি উদ্ভাবন করেছিলেন।

সাম্প্রতিক লােকসভা নির্বাচনে বিজেপি কর্ণাটকের ২৮টি আসনের মধ্যে ২৫টিতে জয়লাভ করার পর ইয়েদুরাপ্পা যে কোনও উপনির্বাচনে জয়লাভ করার সাহস অর্জন করেন। জনতা দল (সেকুলার) বিজেপির সঙ্গে আঁতাত যাওয়ার প্রস্তুতি শুরু করলেও কংগ্রেস কিন্তু জাতীয় পর্যায়ে নেতাহীন ও রাজাহীন হয়ে পড়া সত্ত্বেও ইয়েদুরাপ্পার সঙ্গে শক্তিপরীক্ষায় যাওয়ার জন্য তৎপরতা শুরু করেছে।