আফগানিস্তানে ব্রিটিশ দল

তালিবানদের দাবি তাদের নগদ অর্থ যা নাকি মার্কিন দেশে গচ্ছিত রয়েছে তা দেশে ফিরিয়ে দিতে হবে। আমেরিকায় নাকি আফগানিস্তানের বিপুল সম্পদ আটকে রাখা হয়েছে।

Written by SNS Kabul | October 21, 2021 6:40 pm

তালিবান শাসক দল (Photo:SNS)

আফগানিস্তান তালিবানদের দখলে চলে যাওয়ার পর থেকেই নানা অনিশ্চয়তার মধ্যে দিয়ে চলেছে দেশের সার্বিক ভাগ্য। অর্থনৈতিক ক্রিয়াকলাপের ক্রমহ্রাসমান অবক্ষয় দেশটিকে অনিশ্চিত এক ভবিষ্যতের দিকে নিয়ে চলেছে। এর ওপর তালিবানদের সংবুদ্ধির অভাব সেই অনিশ্চয়তাকে বহুগুণে বাড়িয়ে তুলেছে।

এর মধ্যে সবচেয়ে যা বিশ্বের সংস্কৃতিবান মানুষের মনকে বিরক্ত করে তুলেছে তা হল সে দেশের ঐহিত্যশালী শিল্পকৃতীগুলির ধ্বংস। ফলে বিশ্বের পর্যটকরা আফগানিস্তান ভ্রমণে আর তেমন উৎসাহ দেখাচ্ছে না। ফলে পর্যটন থেকে আফগানিস্তানের বিদেশি মুদ্রা আয়ের যে বিপুল সম্ভাবনা ছিল তা ক্রমেই তলানীতে পৌঁছে যাচ্ছে।

তবে তালিবানরা তাদের অবস্থানকে খানিকটা শোধরাতে ইরাক ও সিরিয়ার ইসলাম বিরুদ্ধ গোষ্ঠীর এগারোজন সদস্যকে গ্রেফতার করে। তালিবানরা ক্ষমতা দখলের পর ব্রিটিশ প্রতিনিধি দলের সঙ্গে তালিবান ও ইরানের প্রতিনিধি দলের সঙ্গে প্রথম বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়।

বস্তুত তালিবান ক্ষমতা দখলের পর ব্রিটিশ কূটনৈতিক প্রতিনিধি দলই প্রথম সে দেশে পদার্পণ করল। ১৫ আগস্ট মার্কিন সেনা সে দেশ থেকে চলে আসার পরই তালিবানরা দেশের নিয়ন্ত্রণের দায়িত্ব নিয়ে নেয়।

ব্রিটিশ কূটনৈতিক প্রতিনিধি দলের সঙ্গে ক্ষমতা দখলকারীদের মানবাধিকার লঙ্ঘন, সন্ত্রাসবাদী কার্যকলাপ, ব্রিটিশ ও আফগান নাগরিকদের নিরাপদ গমনাগমন নিশ্চিত করা এবং আফগান মহিলা ও শিশু কন্যাদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার বিষয়ে আলোচনা হয়।

কারণ তালিবান সরকারকে বিশ্বের স্বীকৃতি আদায় করতে হলে এখন যথেষ্ট যত্নবান হওয়া জরুরি। ব্রিটিশ প্রতিনিধি দলের প্রধান মার্টিন ল্যাঙডেনের মতে তালিবান সরকারের সঙ্গে বৈঠকের মাধ্যমে তাদের মতামত জানার চেষ্টা হয়েছে মাত্র। তালিবানদের স্বীকৃতি দিতে নয়।

ফলে বৈঠকের ফল তেমন কোনও গুরুত্বপূর্ণ মাত্রা পায়নি। অন্যদিকে তালিবান মুখপাত্রের মতে তালিবান সরকার বিশ্বের সকল দেশের সঙ্গেই তাদের সুসম্পর্ক রক্ষায় প্রস্তুত। এটা এক যুক্তগ্রাহ্য কূটনৈতিক প্রক্রিয়া।

কিন্তু তালিবান সরকারকে বিশ্বের প্রচলিত নীতি মেনেই সে দেশের মহিলা ও শিশুকন্যাদের শিক্ষায় উদ্যোগ নিতে হবে। কিন্তু তালিবানরা এপর্যন্ত তাদের মৌলবাদী আচরণে কোনও পরিবর্তন করেনি এবং সভ্যসমাজের আধুনিকীকরণ ও সকলের সমানাধিকার নিয়ে কোনও উদ্যোগ দেখায়নি। তালিবানদের রাজনৈতিক আদর্শ প্রচলিত নীতি যুক্তি থেকে অনেকটাই দূরে রয়েছে।

আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রে তালিবানদের স্বীকৃতি আদায়ে যত্নবান হতে পুনরায় সকল দেশের কূটনৈতিক প্রতিনিধিদের সাদর আহ্বান জানাতে হবে। তালিবানদের দাবি তাদের নগদ অর্থ যা নাকি মার্কিন দেশে গচ্ছিত রয়েছে তা দেশে ফিরিয়ে দিতে হবে। আমেরিকায় নাকি আফগানিস্তানের বিপুল সম্পদ আটকে রাখা হয়েছে।

ইরানের সঙ্গে তালিবান সরকারের প্রতিনিধিদের বৈঠকে দুই দেশের বাণিজ্য চুক্তি আবার সচল হওয়ার সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে। দুই দেশই ইয়ালাম কালা সীমান্ত দিয়ে বাণিজ্য কর্মের সময় সীমা আট ঘন্টা থেকে চব্বিশ ঘন্টা করার দিকেই এগোচ্ছে। এছাড়া সড়ক যোগাযোগ ও টোল ট্যাক্স আদায়ের মাধ্যমে সরকারি রাজস্ব বৃদ্ধির দিকেও তারা নজর দিচ্ছে।