শুক্রবার মেটেলির ইংডং চা-বাগানে ঘটল এক অদ্ভুত ঘটনা। এই ঘটনাকে ঘিরে এলাকায় ব্যাপক চাঞ্চল্য ছড়িয়ে পড়ে। মুরগির খোঁজে শ্রমিক মহল্লায় ঢুকে বিপাকে পড়ল এক পূর্ণবয়স্ক চিতাবাঘ। লাফ দিতে গিয়ে সোজা পড়ে গেল কুয়োর জলে। আর সেখানেই প্রায় ১২ ঘণ্টা ধরে হাবুডুবু খেল সে। খবর পেয়ে বনদপ্তর এবং ময়নাগুড়ি রোড পরিবেশপ্রেমী সংগঠনের সদস্যরা রাতভর অভিযান চালিয়ে অবশেষে উদ্ধার করেন বাঘটিকে।
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, টুন্ডু লাইনের বাসিন্দা শুকনাথ গোয়ালার বাড়ির পাশে থাকা কুয়োতেই ধরা পড়ে ওই বিপত্তি ঘটে। রাতের অন্ধকারে মুরগি ধরতে এসে ভুলবশত কুয়োতে পড়ে যায় চিতাবাঘটি। ভোরে বাড়ির লোকজন কুয়োতে তাকাতেই দেখা যায়, জলের মধ্যে থেকে উঠে আসার প্রাণপণ চেষ্টা চালাচ্ছে ওই বন্যপ্রাণীটি। সঙ্গে সঙ্গে খবর দেওয়া হয় বনদপ্তরে।
Advertisement
খুনিয়া রেঞ্জের বনকর্মীরা সকালেই ঘটনাস্থলে পৌঁছে উদ্ধার প্রক্রিয়া শুরু করলেও পরিকাঠামোগত সমস্যা বাধা হয়ে দাঁড়ায়। এরপরেই ডাক পড়ে ময়নাগুড়ি রোড পরিবেশপ্রেমী সংগঠনের। সংগঠনের সদস্যরা প্রয়োজনীয় সরঞ্জাম নিয়ে পৌঁছে জাল এবং দড়ির সাহায্যে চিতাবাঘটিকে জালবন্দি করেন। পরে ঘুমপাড়ানি গুলি করে অচৈতন্য করে দেওয়া হয় বাঘটিকে। এরপর কুয়ো থেকে নিরাপদে তোলা হয় তাকে।
Advertisement
সংগঠনের সম্পাদক নন্দু রায় বলেন, ‘বনদপ্তর খবর দিলে আমরা ঘটনাস্থলে যাই। প্রায় এক ঘণ্টা চেষ্টার পর বাঘটিকে উদ্ধার করতে সক্ষম হই। তারপর সেটিকে নিয়ে আসা হয় গরুমারা জাতীয় উদ্যানের প্রকৃতি পর্যবেক্ষণ কেন্দ্রে।’ বনদপ্তর সূত্রে জানা গিয়েছে, শুক্রবার রাতেই সেখানে প্রাথমিক শারীরিক পরীক্ষা সম্পন্ন করা হয়েছে। সব কিছু ঠিক থাকলে শনিবারই তাকে ফের বনে ছেড়ে দেওয়া হতে পারে।
গরুমারার অতিরিক্ত বিভাগীয় বনাধিকারিক রাজীব দে বলেন, ‘মুরগির লোভেই চিতাবাঘটি কুয়োতে পড়েছিল। ঘুমপাড়ানি গুলি করার পরই তাকে নিরাপদে উদ্ধার করা সম্ভব হয়েছে।’
স্থানীয় বাসিন্দা সুনীতা গোয়ালার কথায়, ‘রাতে কিছু টের পাইনি। সকালে ঘুম থেকে উঠে দেখি কুয়োয় চিতাবাঘ। সম্ভবত আমাদের মুরগির গন্ধ পেয়েই এসেছিল। কিন্তু মুরগি না পেয়ে শেষমেশ কুয়োয় পড়ে গিয়েছিল।’
এই ঘটনার পর এলাকায় আতঙ্ক ছড়ালেও বনদপ্তর জানিয়েছে, বাঘটি সুস্থ রয়েছে এবং তাকে প্রাকৃতিক পরিবেশে ফেরত পাঠানোর সবরকম ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।
Advertisement



