ডিজিটালাইজেশনের সুবাদে বর্তমানে ভারতে, শহর আর গ্রামের সীমারেখা অনেকটাই মুছে গেছে। মানুষ ক্রমশ নাগরিক জীবনশৈলীতে নিজেদের অভ্যস্ত করে ফেলছেন। বৃহস্পতিবার প্রকাশিত আরবিআই-এর মাসিক বুলেটিনে বলা হয়েছে, ২০২৪-২৫ সালের দ্বিতীয় প্রান্তিকে (জুলাই-সেপ্টেম্বর) ভারতীয় অর্থনীতিতে দ্রুত অগ্রগতির লক্ষণ দেখা যাচ্ছে। কারণ কৃষিজাত উৎপাদনের ক্ষেত্রে দৃষ্টিভঙ্গির উন্নতি ঘটেছে। গ্রামীণ জীবনযাপনে উন্নতির ফলে মানুষের ব্যয়ের পরিমাণ বেড়েছে। এনএসএসও-র সাম্প্রতিক মাসিক মাথাপিছু খরচ (এমপিসিই) যা সমীক্ষায় উল্লেখ করা হয়েছে, তা থেকে দেখা যাচ্ছে যে, গ্রামীণ ব্যয় শহুরে অংশকে ছাপিয়ে যাওয়ায়, গ্রাম-শহরের ব্যবধান কমে আসছে।
এর পিছনে রয়েছে ক্রমবর্ধমান আর্থিক লেনদেন।
সম্প্রতি মজুরির হার বৃদ্ধি এবং শহুরে অভিবাসনের কারণে গ্রামীণ পরিবারগুলিতে রেমিট্যান্সের পরিমাণ বৃদ্ধি পেয়েছে। আরবিআই-এর বুলেটিনে আরও বলা হয়েছে যে, এমন কিছু নির্দিষ্ট কারণ রয়েছে যা, গ্রামীণ পরিবারগুলির ব্যয় ক্ষমতা বাড়িয়ে তুলছে। সমীক্ষায় প্রকাশিত হয়েছে যে পরিবহন, চিকিৎসা ব্যয় এবং উপভোক্তা পরিষেবার ব্যয়, গ্রামীণ অঞ্চলে খাদ্যশস্য বাবদ ব্যয়ের চেয়ে বেশি। প্রতিবেদন অনুসারে, এই উন্নয়নগুলি আশা জাগিয়ে তুলেছে এবং গ্রামীণ ভারত ক্রমশ শহরাঞ্চলের জীবনশৈলীর সঙ্গে তাল মিলিয়ে চলেছে।
গ্রামীণ অঞ্চলের মানুষ ভোগ্যপণ্য অর্থাৎ এফএমসিজি-তে ব্যয় বাড়িয়ে দিয়েছেন। এর ফলে এই ধরনের পণ্য সংস্থাগুলি এর সুফল পাচ্ছে, যা আয়ের আপগ্রেড স্টক মূল্যায়নকে বাড়িয়ে তুলছে। এই ধরনের পণ্য বিক্রির পরিমাণে উন্নতির ফলে মুদ্রাস্ফীতি সময় নিয়ে কমছে।
ভারতকে বৈশ্বিক উৎপাদন কেন্দ্র হিসাবে প্রতিষ্ঠিত করতে হলে, জিডিপির ২০-২৫ শতাংশে পৌঁছনো প্রয়োজন। উন্নয়নের শীর্ষে পৌঁছনোর পথ হল উৎপাদন বৃদ্ধি করা। এটি বৈদ্যুতিন, ফার্মাসিউটিক্যালস, টেক্সটাইল এবং অটোমোবাইলের মতো গুরুত্বপূর্ণ ক্ষেত্রে কর্মসংস্থান বাড়িয়ে তুলবে এবং ভারতীয় পণ্যগুলিকে আন্তর্জাতিকভাবে প্রতিযোগিতামূলক মানে পৌঁছে দেবে।
বুলেটিনে আরও বলা হয়েছে যে, উন্নত অর্থনীতি এবং উদীয়মান বাজার অর্থনীতিতে, বৈশ্বিক অর্থনৈতিক কার্যকলাপ গুরুত্বপূর্ণ। পণ্য ও পরিষেবার ক্ষেত্রে বৈশ্বিক বাণিজ্য গতি অর্জন করার বিষয়টি ভারতের রপ্তানির জন্য আশাব্যাঞ্জক। ২০২৩-২৪ সালে প্রায় ৭৮০ বিলিয়ন মার্কিন ডলারের রপ্তানি হয় এবং প্রথম প্রান্তিকে ১০.২ শতাংশ বৃদ্ধির সুফল পাওয়া গিয়েছিল। ভারত নতুন বছরে অর্থাৎ ২০২৪-২৫ সালে ৮০০ বিলিয়ন মার্কিন ডলারের বেশি রপ্তানি অর্জনের লক্ষ্যের জন্য আরও ভালোভাবে প্রস্তুতি নিচ্ছে।