বিশ্ববঙ্গ বাণিজ্য সম্মেলনের মধ্যেই মিলল আরও একটি সুখবর। কলকাতা ইউরোপ সরাসরি বিমান পরিষেবা চালুর পরিকল্পনা। এ বিষয়ে টাটা সন্সের কর্ণধারের সঙ্গে ফোনে কথা বলেছেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
এদিন মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘টাটা সন্সের এখন যিনি দায়িত্বে রয়েছেন, সেই রাজশেখরনজির সঙ্গে আমার ফোনে কথা হয়েছে। তিনি জানিয়েছেন, বিশেষ কারণে তিনি বিজিবিএস-এ আসতে পারছেন না। তবে সিইও স্তরের কর্তাদের তাঁরা পাঠিয়েছেন। টাটারা বাংলার জন্য অনেক কিছু করতে চায়। আমি ওঁকে অনুরোধ করেছি। টাটারা এয়ার ইন্ডিয়া নিয়েছে। তাই বলেছি, কলকাতা থেকে যাতে সরাসরি ইউরোপের বিমান পরিষেবা চালু করার বিষয়টি তিনি দেখেন।’
এবারের বিশ্ববঙ্গ বাণিজ্য সম্মেলনের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে রিলায়্যান্স, জিন্দল, আরপিএসজি-সহ দেশের প্রথম সারির শিল্পগোষ্ঠীর কর্তারা উপস্থিত থাকলেও টাটা সন্সের পক্ষ থেকে কেউ আসেন নি। বিশ্ব বঙ্গ বাণিজ্য সম্মেলনে নিজের বক্তৃতার একেবারে শেষের দিকে সেই প্রসঙ্গ উল্লেখ করেন মমতা। তিনি জানান, মঙ্গলবার টাটা সন্সের কর্ণধার রাজশেখরনের সঙ্গে তাঁর ফোনে কথা হয়েছে। মুখ্যমন্ত্রী তাঁকে কলকাতায় আসার আহ্বান জানাতেই রাজশেখরন বলেছেন, সুযোগ পেলেই কলকাতায় এসে মমতার সঙ্গে দেখা করবেন। ফোনে মমতা তাঁকে কলকাতা ইউরোপ সরাসরি বিমান পরিষেবা চালুর অনুরোধ জানিয়েছেন।
প্রসঙ্গত সিঙ্গুরে জোর করে কৃষকদের জমি দখলের অভিযোগকে কেন্দ্র করে এক সময়ে টাটার ‘ন্যানো’ কারখানার বিরোধিতা করেছিলেন রাজ্যের বর্তমান মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। যা নিয়ে তোলপাড় হয়েছিল রাজ্য রাজনীতি। মমতার নেতৃত্বে জমি আন্দোলনের জেরে টাটারা সিঙ্গুরে ‘ন্যানো’ কারখানার পাততাড়ি গোটাতে বাধ্য হয়েছিল। আর এই ঘটনায় রাজ্যে মমতার ক্ষমতায় আসার ক্ষেত্রে মূল চাবিকাঠি হিসেবে কাজ করেছে বলে ধরা হয়।
কিন্তু সে সব এখন ইতিহাস। ২০১১ সালের পালাবদলের পর প্রায় ১৪ বছর ধরে মমতা রাজ্যের ক্ষমতায়। এবার তিনি নিজেই রাজ্যে শিল্প আনার জন্য প্রতি বছর বিশ্ববঙ্গ বাণিজ্য সম্মেলন করে যাচ্ছেন। সেই সম্মেলনে এবার অন্যান্য শিল্পপতিদের মতো টাটাদেরও আহবান জানিয়েছেন মমতা। যদিও মমতা অতীতে একাধিক বার বলেছেন, তাঁরা কখনওই টাটার বিরুদ্ধে নন। তৎকালীন বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যের নেতৃত্বাধীন সরকার যে কায়দায় জোর করে জমি দখল করেছিল, তিনি তাঁর বিরুদ্ধে আন্দোলন করেছিলেন। টাটা কিম্বা শিল্পের বিরুদ্ধে নয়।