• facebook
  • twitter
Wednesday, 19 March, 2025

ভারতের বৈদ্যুতিন ক্ষেত্রে ১ কোটি ২০ লক্ষ কর্মসংস্থান হতে চলেছে

‘বিশ্বব্যাপী গবেষণা ও উন্নয়ন কেন্দ্র এবং বিশ্বের তৃতীয় বৃহত্তম স্টার্টআপ ইকোসিস্টেম হিসাবে ভারতের উত্থানের বিষয়টি এই মুহূর্তে খুবই গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেছে। আগামী দিনে অত্যন্ত দক্ষ কর্মীদের প্রয়োজন সামলাবে আমাদের দেশের পেশাদাররা।’

প্রতীকী চিত্র

ভারতের ইলেকট্রনিক্স শিল্প অভূতপূর্ব প্রবৃদ্ধির সাক্ষী হতে চলেছে। এটি ২৫-৩০ শতাংশের যৌগিক বার্ষিক বৃদ্ধির হারে (সিএজিআর) ১২ মিলিয়ন (১.২ কোটি) কর্মসংস্থান তৈরি করতে প্রস্তুত। সোমবার এক প্রতিবেদনে এ কথা বলা হয়েছে। টিমলিজ ডিগ্রি শিক্ষানবিশদের একটি প্রতিবেদন অনুসারে প্রায় ১ কোটি ২০ লক্ষ পেশাদার কর্মীর কর্মসংস্থান সৃষ্টির ইঙ্গিত মিলেছে, যার মধ্যে ৩ মিলিয়নের প্রত্যক্ষ এবং ৯ মিলিয়ন কর্মীর পরোক্ষ ভূমিকা রয়েছে।

তবে, এক কোটি প্রশিক্ষিত পেশাদারদের ঘাটতি পূরণ করার এই লক্ষ অত্যন্ত যুক্তিসঙ্গত। ইলেকট্রনিক্স -এর ক্ষেত্রে ভারতের প্রবৃদ্ধিকে বজায় রাখতে এবং প্রশস্ত করতে এই ঘাটতি পূরণ করা জরুরি। এই বিষটির উপর জোর দেয় এই প্রতিবেদন।

২০৩০ সালের মধ্যে দেশকে ৫০০ বিলিয়ন ডলারের ইলেকট্রনিক্স উৎপাদন কেন্দ্রে পরিণত করার যে-পরিকল্পনা প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী গ্রহণ করেছেন, সেই দৃষ্টিভঙ্গিতে অনুপ্রাণিত হয়ে বৈদ্যুতিন উৎপাদন শিল্প বৃদ্ধি পাচ্ছে। এই শিল্পটি যোগাযোগ ও সম্প্রচার সংক্রান্ত ইলেকট্রনিক্স, উপভোক্তা সম্পর্কিত ইলেকট্রনিক্স, শিল্পভিত্তিক ইলেকট্রনিক্স এবং মহাকাশ ও প্রতিরক্ষা বিষয়ক ইলেকট্রনিক্সের মতো ক্ষেত্রের প্রসারতায় সহায়ক হবে। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে এই ক্ষেত্রগুলিতে বিশেষ দক্ষতার চাহিদা বেড়েছে।

সেমিকন্ডাক্টর এবং ইলেক্ট্রোমেকানিকাল অংশগুলির মতো উপাদানকে ঘিরে ক্রমবর্ধমান প্রয়োজনীয়তা, প্রসারের ক্ষেত্রে চ্যালেঞ্জকে আরও তীব্র করে তোলে। মোবাইল ফোন (৪৩ শতাংশ), কনজিউমার ইলেকট্রনিক্স (১২ শতাংশ), ইন্ডাস্ট্রিয়াল ইলেকট্রনিক্স (১২ শতাংশ) এবং অটো ইলেকট্রনিক্স (8 শতাংশ)-এর মতো উৎপাদনের বিভাগগুলি দ্বারা চালিত হয়ে, ভারত বৈদ্যুতিন সামগ্রী উৎপাদনের বিশ্বে অগ্রণী হওয়ার দ্বারপ্রান্তে দাঁড়িয়ে রয়েছে।

টিমলিজ ডিগ্রি শিক্ষানবিশদের সিইও বলেন ‘২০২৭-২০২৮ অর্থবর্ষের মধ্যে এই শিল্পে ১২ মিলিয়ন পেশাদারের প্রয়োজন হবে। প্রত্যক্ষ ভূমিকায় ৩ মিলিয়ন এবং পরোক্ষ ভূমিকায় ৯ মিলিয়ন। তারপরও এক কোটি দক্ষ পেশাদারের প্রয়োজন অব্যাহত থাকবে। এই প্রয়োজন পূরণ করার জন্য দক্ষতা বিকাশের উপর জোর দেওয়া যেমন দরকার, তেমনই একটি নির্দিষ্ট ফোকাস রাখা প্রয়োজন। শিক্ষানবিশদের মাধ্যমে হাতেকলমে প্রশিক্ষণের সঙ্গে সঙ্গে থিয়োরিটিকাল স্টাডিরও প্রয়োজন আছে। শিক্ষানবিশ ইকোসিস্টেমের স্কেলিং, বর্তমানে ৫৫ শতাংশ সিএজিআর-এ বৃদ্ধি পাচ্ছে। ২০২৭ সালের মধ্যে ১ মিলিয়ন শিক্ষানবিশ বেড়ে ২ মিলিয়ন শিক্ষানবিশ হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে, যা শিল্পের চাহিদা পূরণে একটি স্থিতিশীল সমাধান তৈরি করতে পারে।’

প্রতিবেদনে আরও বলা হয়েছে, শিল্প-একাডেমিয়ার সহযোগিতা জোরদার করা জরুরি যাতে ২০২৭-২০২৮ অর্থবর্ষের মধ্যে প্রতিবছর কর্মক্ষেত্রে প্রবেশকারী দুই মিলিয়ন স্নাতকের সংখ্যা বেড়ে দ্বিগুন হয়। এই সংখ্যা চার মিলিয়ন করা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। পিএলআই স্কিমের মতো নীতিগুলি, যা বৈদ্যুতিন-সহ ১৪টি মূল খাতে বিনিয়োগের ক্ষেত্রে ১.৯৭ লক্ষ কোটি টাকা টার্গেট করেছে এবং কর্মসংস্থান সম্পর্কিত শাখা (ইএলআই), কর্মসংস্থান সৃষ্টির জন্য ডিজাইন করা হয়েছে, সেখানে এই সংখ্যাবৃদ্ধির বিষয়টি একটি শক্তিশালী ভিত্তি স্থাপন করবে।

টিমলিজ ডিগ্রি অ্যাপ্রেন্টিসশিপের চিফ স্ট্র্যাটেজি অফিসার সুমিত কুমার বলেন, ‘সেমিকন্ডাক্টর, ড্রোন, বৈদ্যুতিক যানবাহন, সৌর প্যানেল, আইটি ও টেলিকম হার্ডওয়্যার, কনজিউমার ইলেকট্রনিক্স এবং ইন্ডাস্ট্রিয়াল ইলেকট্রনিক্সের মতো উচ্চ-বৃদ্ধির ক্ষেত্রগুলিতে ক্রমবর্ধমান চাহিদা দেখা গেছে। বিশ্বব্যাপী গবেষণা ও উন্নয়ন কেন্দ্র এবং বিশ্বের তৃতীয় বৃহত্তম স্টার্টআপ ইকোসিস্টেম হিসাবে, ভারতের উত্থানের বিষয়টি খুবই গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেছে। আগামী দিনে দক্ষ কর্মীদের প্রয়োজন সামলাবে আমাদের দেশের পেশাদাররা।’