শিল্পী ইমন চক্রবর্তী এবার অস্কারের দৌড়ে। ইন্দিরা ধর মুখোপাধ্যায়ের ‘পুতুল’ ছবিতে গাওয়া ইমনের ‘ইতি মা’-র মৌলিক গান এবং মৌলিক ব্যাকগ্রাউন্ড স্কোর নমিনেশন পেয়েছে। অনির্বাণ ভট্টাচার্যের কথায় এই গানটিতে কণ্ঠ দিয়েছেন ইমন চক্রবর্তী, সুর করেছেন সায়ন গঙ্গোপাধ্যায়।
এই ঘটনার পর উচ্ছ্বসিত ছবির পরিচালক ইন্দিরা ধর মুখোপাধ্যায়। তিনি ছবির অস্কার নমিনেশনের খবরের লিংক সামাজিক মাধ্যমে শেয়ার করেছেন। উচ্ছ্বাস প্রকাশ করেছেন জাতীয় পুরস্কার জয়ী গায়িকা ইমন চক্রবর্তীও। তিনি বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যমে প্রতিক্রিয়া দেওয়ার সময় বিষয়টি জানিয়েছেন। ইমন জানিয়েছেন, সকাল থেকে প্রচুর শুভেচ্ছাবার্তা পেলেও খবরটা কিছুতেই বিশ্বাস করতে পারছিলেন না।
আবার গানের সুরকার সায়ন গঙ্গোপাধ্যায় বলেন, ‘এতদিন যেসব গানে সুর করেছি, তার বেশির ভাগ জড়িয়ে রয়েছে খুনখারাপি, মার্ডার, রাহাজানি। এই প্রথম কোনও সাদামাটা কাজ করলাম। এক কথায় এই ছবির গান কিংবা স্কোর, দুটোই একেবারে সহজ। যা বাদ্যযন্ত্র ব্যবহার হয়েছে, তা মৌলিক। উচ্চকিত কোনও শব্দ নেই।’
উল্লেখ্য, পরিচালক ইন্দিরা ধর মুখোপাধ্যায় পরিচালিত ‘পুতুল’ ছবিটি মূলত পথ শিশুদের নিয়ে নির্মিত হয়েছে। সেখানে তুলে ধরা হয়েছে অভুক্ত থাকা শিশুরা রাস্তায় দাঁড়িয়ে কিভাবে ভিক্ষা করছে। শহরের ট্রাফিক সিগন্যালে যারা হাত পাতে, তাদের কথা তুলে ধরা হয়েছে। এইসব খেতে না পাওয়া শিশুদের প্রতি আমাদের সামাজিক দায়িত্ববোধ সম্পর্কে সজাগ করে তোলা হয়েছে ছবিতে।
কথা প্রসঙ্গে সায়ন জানিয়েছেন, গানের পরিচালকের নির্দেশ ছিল সুরে আর্তি আনতে হবে। সেজন্য প্রস্তুতি হিসেবে সেতার, বাঁশি, বেহালার উপরে কাজ শুরু করতে হয় তাঁকে। এভাবে ২২ বছর ধরে শেখা ক্লাসিক্যাল সঙ্গীতের চর্চার কাজে ফের নিজেকে সঁপে দেন। এই কাজ করে তিনি একটা আত্মতৃপ্তি অনুভব করছেন বলে দাবি করেছেন।
এদিকে এই গানের গীতিকার অনির্বাণ ভট্টাচার্য গানটি লেখার সময়ের অভিজ্ঞতার কথা শেয়ার করেছেন। জানা গিয়েছে, তাঁকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল, অ্যান্থেমের মতো কিছু একটা করতে। মানে মুখে মুখে ছড়াবে এরকম একটা গান লেখার নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল তাঁকে। যেটাকে তিনি একটা বড় চ্যালেঞ্জ বলেই মনে করেছিলেন। যদিও তিনি জানিয়েছেন, প্রথমে ঠিক করে উঠতে পারছিলেন না, গানটি কঠিন করে লিখবেন, নাকি সহজ করে। অবশেষে নিজের মেয়ের ইমোশন কাজে লাগিয়ে গানটি সমাপ্ত করেছেন।
প্রসঙ্গত অনির্বাণ ভট্টাচার্য বংশ সূত্রে বাণীকুমারের নাতি। আবার সম্পর্কে চন্দ্রিল ভট্টাচার্যের ভাই। তাঁদের কৃতিত্বের কাছে নিজেকে খুবই নগণ্য বলে মনে করেন। কাজেই গানটি অস্কার মনোনীত হওয়ার খবর শুনে তাঁর মনে হয়েছিল, তিনি এর যোগ্য নন।