ইন্টারন্যাশনাল কলকাতা শর্ট ফিল্ম ফেস্টিভ্যাল (আইকেএসএফএফ) দেখতে দেখতে পাঁচ বছরে পা দিল। পাঁচ বছরেই কলেবরে অনেকটা বড় হয়েছে এই ছোট ছবির উৎসব। ফেস্টিভ্যালের ট্যাগ লাইনও তাই ‘ছোট ছবির বড় উৎসব’। ২১ থেকে ২৬ জানুয়ারি এই ছয় দিন ধরে চলল এই উৎসব। আমেরিকা, চীন, সুইজারল্যান্ড, নরওয়ে সহ প্রায় ৩০টি দেশ থেকে ২৫০ টি ছবি এই উৎসবে দেখানো হয়েছে। শিশুকেন্দ্রিক ছবি, নারীকেন্দ্রিক ছবি, (এলজিবিটিকিউ), সমকালীন সামাজিক সমস্যাকেন্দ্রিক ছবি দেখার সুযোগ ছিল এবারের উৎসবে। অনলাইন এবং ফিজিক্যাল দুই ভাবেই ছবি দেখার সুযোগ ছিল।
এদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য, কমলেশ্বর মুখোপাধ্যায় অভিনীত ‘আম আটির পাঁচালি’, লিলেট দুবে অভিনীত ‘দ্য লাইম গ্রীন শার্ট’, রত্না শাহ অভিনীত ‘এ নাইট আফটার অল’, শ্রীলেখা মুখোপাধ্যায় পরিচালিত ‘অনলাইন’, চন্দন সেন পরিচালিত একটি ছবিও ছিল উৎসবের প্রদর্শনীতে। ২৪ থেকে ২৬ জানুয়ারি রোটারি সদনে ছবিগুলি দেখানো হয়। উৎসবের সমাপ্তির দিন উপস্থিত ছিলেন বাংলা চলচ্চিত্র এবং সঙ্গীত জগতের বহু গুনীজনেরা। এসেছিলেন অনির্বাণ ভট্টাচার্য, মনামী ঘোষ, অনুরাধা মুখার্জি, ফাল্গুনী চট্টোপাধ্যায়, জয়া শীল, বৌদ্ধয়ন মুখোপাধ্যায়, নবারুণ এবং আরও অনেকে।
Advertisement
এবারের উৎসবে ‘জীবনকৃতি’ পুরস্কার পেলেন বিশিষ্ট অভিনেতা পরান বন্দ্যোপাধ্যায়। ‘জীবনকৃতি’ পুরস্কার নিয়ে উনি বলেন, ‘এই দর্শকই আমার শিক্ষক-দেবতা। আমি যেমন দর্শকের কাছ থেকে শিখি, তেমনি অভিনয় দিয়ে দর্শকের জন্য পুজোর অর্ঘ্য সাজাই।’ এবারে জীবন গুহ মেমোরিয়াল পুরস্কার পেলেন অভিনেত্রী অনুরাধা মুখোপাধ্যায়।
Advertisement
এই বছর উৎসবের প্রতিযোগিতায় ছিল মিউজিক ভিডিও। ‘মানিকবাবুর মেঘ’ ছবির মিউজিক ভিডিওর জন্য সেরা গায়কের পুরস্কার পেলেন অভিনেতা অনির্বাণ ভট্টাচার্য। পুরস্কার নিয়ে তিনি বলেন, ‘গান আমি কোনও দিন প্রথাগতভাবে শিখিনি, অভিনয়টা আমি শিখেছি। তাই সেরা গায়কের পুরস্কার নিতে আমার বেশ লজ্জাই লাগে। তবু মানুষের যে আমার গাওয়া গান ভাল লেগেছে, আমি খুশি।’ এই বছর সেরা ছোট ছবি নির্বাচিত হয়েছে ভারত থেকে ‘রঙ’ এবং চিন থেকে ‘নর্থ’।
এই ছোট ছবির উৎসবে ছবি দেখানোর পাশাপাশি এবারে ছিল ‘মাস্টার ক্লাস’ ও ‘সেমিনার’। চলচ্চিত্র তাত্ত্বিক সঞ্জয় মুখোপাধ্যায়ের ‘সিনেমা কেমন ভাবে দেখবেন’ নিয়ে ছিল একটি গুরুত্বপূর্ণ আলোচনা। বিভিন্ন সেমিনারে উপস্থিত ছিলেন পরিচালক অর্জুন দত্ত, অপরাজিতা ঘোষ, প্রখ্যাত নৃত্যশিল্পী সুদর্শন চক্রবর্তী, পরিচালক পার্থ চক্রবর্তী, সুমন মৈত্র এবং আরও অনেকে।
উৎসবের চেয়ারম্যান সৌরভ চক্রবর্তীর কথায়, ‘শর্ট ফিল্ম নিয়ে আমরা একটা বিশ্বমানের মঞ্চ তৈরি করার চেষ্টা করছি। নতুন যাঁরা পরিচালক, তাঁদের একটা প্ল্যাটফর্ম দেওয়ার চেষ্টা আমাদের। সঙ্গে থাকছে সমস্ত দেশের বিশিষ্ট পরিচালকদের ছবি দেখার সুযোগ।’ উৎসবের ডিরেক্টর শাশ্বতী গুহ চক্রবর্তীর কথায়,’এই বছর ছোট ছবির পাশাপাশি বিভিন্ন দেশের মিউজিক ভিডিও দেখার সুযোগ ছিল এবার। প্রতি বছরের মতো এবছরও দারুন সাড়া পেয়ে আমরা আপ্লুত।’
Advertisement



