• facebook
  • twitter
Sunday, 4 May, 2025

৪০ ঘণ্টা পর ঘেরাওমুক্ত এসএসসি চেয়ারম্যান

আন্দোলনকারীরা জানিয়েছেন, মঙ্গলবার রাতে ও বুধবার সকালে বারবার এসএসসির চেয়ারম্যানের পক্ষ থেকে তাঁকে ছেড়ে দেওয়ার আবেদন এসেছিল।

ফাইল চিত্র

প্রায় ৪০ ঘণ্টা পর ঘেরাও মুক্ত হয়েছেন স্কুল সার্ভিস কমিশন (এসএসসি)–র চেয়ারম্যান সিদ্ধার্থ মজুমদার। বুধবার কলকাতা হাইকোর্টে আদালত অবমাননা সংক্রান্ত মামলার শুনানি ছিল। সেই শুনানিতে সশরীরে হাজির থাকার নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল এসএসসির চেয়ারম্যানকে। সেই কারণেই প্রায় দুই দিন নিজের দপ্তরে আটকে থাকার পর অবশেষে সেখান থেকে বেরিয়েছেন সিদ্ধার্থ মজুমদার। তবে আন্দোলনকারীরা সাফ জানিয়ে দিয়েছেন, যাই হয়ে যাক, কোনওভাবেই অবস্থান উঠছে না। অন্যদিকে, বুধবার আদালত অবমাননা সংক্রান্ত মামলার শুনানিতে সাময়িক স্বস্তি পেয়েছে এসএসসি ও শিক্ষা দপ্তর।

আন্দোলনকারীরা জানিয়েছেন, মঙ্গলবার রাতে ও বুধবার সকালে বারবার এসএসসির চেয়ারম্যানের পক্ষ থেকে তাঁকে ছেড়ে দেওয়ার আবেদন এসেছিল। কারণ হিসেবে হাইকোর্টে হাজিরা দেওয়ার বিষয়টি জানানো হয়েছিল। সেই কারণে এ দিন তাঁকে ছাড়া হয়েছে। নির্দেশ মতো আদালত অবমাননা সংক্রান্ত মামলার শুনানি চলাকালীন হাইকোর্টে হাজিরাও দিয়েছিলেন এসএসসির চেয়ারম্যান।

সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে এসএসসির ২০১৬ সালের সম্পূর্ণ প্যানেল বাতিল হয়েছে। এই মামলায় হাইকোর্টের নির্দেশই বহাল রাখে শীর্ষ আদালত। এর জেরে চাকরি হারিয়েছেন প্রায় ২৬ হাজার শিক্ষক শিক্ষিকা ও শিক্ষাকর্মী। সুপ্রিম কোর্ট নিজের রায়ে জানিয়েছিল, অযোগ্যদের বেতন ফেরত দিতে হবে। কিন্তু এখনও পর্যন্ত সেই সংক্রান্ত কোনও পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়নি। এই নিয়ে কলকাতা হাইকোর্টে আদালত অবমাননার মামলা হয়। বুধবার কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি দেবাংশু বসাক এবং বিচারপতি মহম্মদ শব্বর রসিদির ডিভিশন বেঞ্চে এই মামলার শুনানি ছিল।

মামলাকারীর প্রশ্ন ছিল, সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ সত্ত্বেও এখনও অযোগ্য চাকরিহারাদের কাছ থেকে কেন বেতন ফেরত নেওয়ার প্রক্রিয়া শুরু করা হয়নি? কেন এই নির্দেশ কার্যকর হয়নি তা বুধবারের শুনানিতে এসএসসি ও মধ্যশিক্ষা পর্ষদকে জানাতে বলে হাইকোর্ট। পাশাপাশি ওএমআর শিট প্রকাশের বিষয়টিও জানাতে বলা হয়েছিল। কিন্তু বুধবার এসএসসি ও পর্ষদ এই মামলার গ্রহণযোগ্যতা নিয়ে প্রশ্ন তোলে। পাশাপাশি বলা হয়, সুপ্রিম কোর্ট হাই কোর্টের নির্দেশ বহাল রাখলেও রায়ের বেশ কয়েকটি জায়গায় পরিবর্তন করেছে। তাই এই সংক্রান্ত মামলা শুধুমাত্র শীর্ষ আদালতেরই শোনার এক্রিয়ার আছে। অন্যদিকে, মামলাকারীদের আইনজীবীর বক্তব্য, আদালতের অবমাননার মামলা শোনার নিজস্ব ক্ষমতা রয়েছে। এরপরই এই মামলার শুনানি সোমবার পর্যন্ত পিছিয়ে দেয় হাইকোর্ট।

প্রসঙ্গত, সোমবার থেকে এসএসসি দপ্তরের সামনে অবস্থানে বসে রয়েছেন চাকরিহারারা। তাঁদের বিক্ষোভের কারণে অফিসের ভিতরেই দুই দিন ধরে আটকে ছিলেন এসএসসির চেয়ারম্যান সিদ্ধার্থ মজুমদার ও অফিসের ২৪ জন কর্মী। এ দিন হাইকোর্টে হাজিরার জন্য এসএসসির চেয়ারম্যানকে ছাড়া হলেও বাকি কর্মীদের ঘেরাও মুক্ত করেননি আন্দোলনকারীরা।

অন্যদিকে, শিক্ষা দপ্তরে ইতিমধ্যেই যোগ্য শিক্ষকদের একটি তালিকা পাঠিয়েছে এসএসসি। সেই তালিকা স্কুল জেলা পরিদর্শকদের হাতে পৌঁছে গিয়েছে। জানা গিয়েছে, সেই তালিকায় ১৫ হাজার ৪০৩ জনকে ‘অযোগ্য নয়’ হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে। কিন্তু এতে পুরোপুরি সন্তুষ্ট হতে পারছেন না আন্দোলনরত চাকরিহারারা। তাঁরা ওএমআর শিটের মিরর ইমেজ প্রকাশ করার দাবিতে অনড় রয়েছেন। পাশাপাশি ১৭ হাজার ২০৬ জনের যে তালিকা বিকাশ ভবন দিয়েছিল সেই তালিকায় যারা অযোগ্য রয়েছেন তাঁদের চাকরি থেকে বরখাস্ত করা হচ্ছে না কেন সেই প্রশ্নও তোলা হয়েছে। এই সকল অভিযোগ তুলে এসএসসি দপ্তরের সামনে অবস্থান চালিয়ে যাওয়ার হুঁশিয়ারি দিয়েছেন চাকরিহারারা।