অযোধ্যায় ভূমিপুজোর দিনে টুইট মুখ্যমন্ত্রী রাজ্যপাল যুদ্ধে

ভূমিপুজোর দিন সকালে টুইট বার্তায় রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী লেখেন হিন্দু-মুসলিম-শিখ-খ্রিস্টান একে অপরের ভাই ভাই। আমার ভারত মহান। মহান আমাদের হিন্দুস্তান।

Written by SNS Kolkata | August 6, 2020 11:00 am

মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (File Photo: IANS)

অযোধ্যায় ভূমিপুজোর দিনেও জমে উঠেছে মুখ্যমন্ত্রী ও রাজ্যপালের ভার্চুয়াল যুদ্ধ। ভূমিপুজোর দিন সকালে টুইট বার্তায় রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী লেখেন হিন্দু-মুসলিম-শিখ-খ্রিস্টান একে অপরের ভাই ভাই। আমার ভারত মহান। মহান আমাদের হিন্দুস্তান। দেশ তার চিরায়ত বৈচিত্রের মধ্যে ঐক্যের ঐতিহ্যকে বহন করে চলেছে। মুখ্যমন্ত্রী এদিন টুইটে স্পষ্ট করে জানিয়ে দেন, ভারতীয় সংস্কৃতির মূল বৈশিষ্ট্য, বৈচিত্র্যের মধ্যে ঐক্য রক্ষার জন্য তিনি শেষ নিঃশ্বাস পর্যন্ত লড়বেন। এদিন ভূমিপুজোর প্রসঙ্গই উচ্চারণ করেননি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।

অন্যদিকে রাজ্যপালের মতে ভারতীয় সংস্কৃতির মূলে রয়েছেন শ্রীরামচন্দ্র। এদিন তিনি মমতার বিরুদ্ধে ধর্মীয় তোষণের অভিযোগ আনেন। টুইটে রাজ্যপালের মন্তব্য তোষণের পাকে চক্করে পড়েই রামমন্দির নীরব হয়ে রয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। অথাৎ রাম রহিমের নাম না করলেও রাম ভজনা ও রহিম তোষণা নিয়ে পারস্পারিক কটাক্ষের তীর ছোঁড়াছুড়ি চলল রাজ্যের প্রশাসনিক প্রধান আর সাংবিধানিক প্রধানের মধ্যে।

শুধু তা-ই নয়, ভূমিপুজোকে উপলক্ষ করে রাজ্য ও রাজ্যপালের মধ্যে দ্বন্দ্ব একেবারে মোড়কহীনভাবে সামনে চলে এল। ভূমিপুজোর যে দিনটাতে রাজ্যকে লকডাউনের শৃঙ্খলে বেঁধে ফেলতে তৎপর হয়েছে নবান্ন। ঠিক সেই দিনটাকে জাঁকজমকের সঙ্গে পালন করার জন্য রাজ্যবাসীকে আবেদন জানিয়েছেন রাজ্যপাল জগদীপ ধনকড়। এমনকী বুধবার সন্ধেবেলা তিনি ভূমপুজো উদযাপন করতে প্রদীপ জ্বালালেন। নিমন্ত্রণ করলেন সাংবাদিকদেরও। কারণ জগদীপ ধনকড়ের কাছে এই দিনটি স্বাভিমানের।

এর আগে ভূমিপুজোর দিনটায় লকডাউন ঘোষণা করা নিয়ে বিজেপির রাজ্য নেতৃত্ব কঠোর সমালোচনা করেছিল মুখ্যমন্ত্রীর। কিন্তু এদিন ভূমিপুজো নিয়ে রাজ্যপালের উদ্দীপনা রাজ্যে উত্তেজনার আবহ তৈরি করার জন্য যথেষ্ট বলে মনে করছেন তৃণমূল নেতারা।

তাঁদের অনেকের মতে রাজ্যপাল এতদিন মুরলিধর সেন লেনের রাজ্য বিজেপির সদর দফতরের নেতাদের ভাষায় কথা বলতেন। কিন্তু এদিন তিনি আরএসএস-এর কেশব ভবনের নেতাদের মতো কথা বলছেন। অযোধ্যায় রামমন্দিরের ভুমিপুজোর দিনের মাহাত্ম্য নিয়ে রাজ্যপাল ট্যুইটে লেখেন, আজকের এই দিনটির জন্য দীর্ঘ সময় অপেক্ষা করতে হয়েছে। বিচারব্যবস্থাকে এমন ঐতিহাসিক রায়ের জন্য ধন্যবাদ।

অন্য একটি টুইটে ভারতীয় সংবিধানের মধ্যে থাকা রাম-সীতার ছবিও শেয়ার করেছেন। যার মাধ্যমে তিনি ভারতীয় রাজনীতি ও সংস্কৃতির সঙ্গে রামের যোগাযোগের কথা বোঝাতে চেয়েছেন। রাজ্যপাল প্রশ্ন তুলেছেন এদিন রামমন্দির নির্মাণ নিয়ে মুখ্যমন্ত্রীর চুপ থাকা নিয়ে। ধনকড়ের মতে ধর্মীয় তোষণের জন্যই মুখ্যমন্ত্রী রাম-এর নাম উচ্চারণ করেননি। এই নীরবতার প্রসঙ্গ টেনে ধনকড় ট্যুইটে লিখেছেন- আপনি রাজ্যবাসীকে নিজের অবস্থান জানান।

অন্যদিকে ওয়াকিবহাল মহলের মতে, অযোধ্যা নিয়ে মুখ্যমন্ত্রীকে মন্তব্য করতেই হবে, এমন কথা কোথায় লেখা রয়েছে। বরং রাম মন্দির নিয়ে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীকে রাজ্যপালের এহেন আক্রমণ বেনজির।