এবার রােজভ্যালি সিবিআই নােটিশ রাজীব কুমারকে

রােজভ্যালি কাণ্ডেও রাজীব কুমারকে নােটিশ করা হয়। এদিন এডিজি সিআইডি রাজীব কুমারকে নােটিশ করা হয়।

Written by SNS Kolkata | September 23, 2019 6:53 pm

রাজীব কুমার (File Photo: IANS)

বিগত কয়েক দিন ধরে রাজ্যের গােয়েন্দা প্রধানের খোঁজে শহর থেকে শহরতলি এমনকি ভিন রাজ্যে যে তল্লাশি অভিযান চালাচ্ছে কেন্দ্রীয় তদন্তকারি সংস্থা তা রবিবারও জারি থাকল। বরং এদিন সিবিআই আরও জোর কদমে প্রাক্তন পুলিশ কমিশনার বর্তমানে রাজ্যের গােয়েন্দা প্রধান রাজীব কুমারের খােঁজে গভীর রাত পর্যন্ত তল্লাশি চালালাে।

এরই মধ্যে রােজভ্যালি কাণ্ডেও রাজীব কুমারকে নােটিশ করা হয়। এদিন এডিজি সিআইডি রাজীব কুমারকে নােটিশ করা হয়। এদিন এডিজি সিআইডি রাজীব কুমারের কোয়ার্টারে গিয়ে নােটিশ দিয়ে আসা হয়। প্রসঙ্গত, শনিবারই আলিপুর আদালত রাজীব কুমারের জামিনের আর্জি খারিজ করে দেওয়ার পর এদিন সকাল হতেই সিবিআইয়ের বিশেষ দল শহরের পাঁচ জায়গায় এক সাথে তল্লাশি অভিযান চালায় রাজীবের সন্ধানে। কিন্তু খালি হাতেই ফিরতে হয় তাদের। এরপর সন্ধ্যা হতেই ফের বেরিয়ে পড়ে সিবিআইয়ের বিশেষ দল। তারা সােজা গিয়ে ওঠে কালীঘাটে।

এদিন সন্ধ্যায় সল্টলেকের সিজিও কমপ্লেক্স থেকে সিবিআইয়ের একটি টিম বেরিয়ে সরাসরি পৌঁছে যায় কালীঘাট। সল্টলেক থেকে বেরিয়ে বাইপাশ ধরে আলিপুর ও হাজরা হয়ে কালীঘাট পৌঁছায় সিবিআইয়ের টিম। সিবিআইয়ের বেশ কয়েকটি টিম কলকাতার বিভিন্ন জায়গায় তল্লাশি করে। প্রাক্তন পুলিশ কমিশনার তথা এডিজি সিআইডি রাজীব কুমারের সরকারি বাসভবন পার্ক স্ট্রিট, আলিপুর ও লেকটাউন সহ আরও দু জায়গায় হানা দেয় সিবিআই। কিন্তু কোথাও রাজীব কুমারকে তারা খোঁজ পায়নি। এদিন দুপুরে ৩৪ পার্ক স্ট্রিটের কোয়ার্টে ফের হানা দেয় সিবিআই দল। প্রায় পনেরাে মিনিট ধরে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয় রাজীবের স্ত্রী সঞ্চিতা কুমারকে।

সূত্রের খবর, সেখানেই রােজভ্যালি কাণ্ডে আইপিএস অফিসারকে নােটিশ দেওয়া হয়। সুত্রের আরও খবর, নােটিশে আজ সােমবারের মধ্যে তাকে হাজিরা দিতে বলা হয়েছে। এরপর সেখান থেকে বেরিয়ে মা ফ্লাইওভার ধরে সল্টলেকের দিকে রওনা হয় ওই দল। অন্যদিকে আলিপুরের বডিগার্ড লাইনেও চলে খানাতল্লাসি। এছাড়াও লেকটাউনের গেস্ট হাউসেও চলে তল্লাশি। এই অভিযানের মধ্যেই এদিন সিজিওতে রাজীব ঘনিষ্ঠদের জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়।

সুত্রের খবর, সিবিআই-রাজীব কুমার দড়ি টানাটানির মধ্যে গােয়েন্দাদের কাছে নতুন তথ্য আসে। কেন্দ্রীয় তদন্তকারি সংস্থার গােয়েন্দারা জানতে পারেন রাজীব কুমারকে গা ঢাকা দিতে সাহায্য করছেন শহরের বেশ কয়েকজন প্রভাবশালী ব্যবসায়ী। সূত্রের খবর, কয়েকদিন ধরেই রাজীব কুমারকে খুঁজে চলেছে সিবিআই। পাশাপাশি রাজীব কুমারকে খুঁজতে রাজ্যের বিভিন্ন জায়গায় তল্লাশি চালানাে হচ্ছে। এক্ষেত্রে গােয়েন্দাদের মনে প্রশ্ন জাগে, এতদিন ধরে যিনি নিখোঁজ তাকে টাকা জোগাচ্ছে কে? পাশাপাশি এই আইনি লড়াইয়ে। প্রয়ােজনীয় অর্থ আসছে কোথা থেকে। ওইসব বিষয়গুলি নিয়ে নাড়াচাড়া করার সময়ে গােয়েন্দারা জানাতে পারেন, শহরের কিছু প্রভাবশালী ব্যবসায়ী সাহায্য করছেন রাজীব কুমারকে। এরাই রাজীব কুমারকে গা ঢাকা দিতে বা পালিয়ে বেড়াতে সাহায্য করছেন। সিবিআই তার প্রযুক্তি ব্যবহার করে ওইসব ব্যবসায়ীদের খোঁজ পায়। তাদের মধ্যে কয়েকজনকে ডেকে এদিন জিজ্ঞাসাবাদ করা হয় তাদের মধ্যে একজন ট্রাভেল এজেন্টও রয়েছে। যিনি রাজীবকে পালিয়ে বেড়াতে লজিস্টিক সাপোর্ট যােগাচ্ছে বলে কেন্দ্রীয় তদন্তকারি সংস্থার গােয়েন্দারা জানাতে পেরেছে বলে সূত্রের খবর। এছাড়াও রাজীব ঘনিষ্ঠদেরও জিজ্ঞাসাবাদ করা হয় বলে সূত্রের খবর।

এদিন এক রাজীব ঘনিষ্ঠ সিজিও থেকে বেরােনাের সময় সংবাদ মাধ্যমের ক্যামেরা দেখেই দৌড়ে পালিয়ে যান। সুত্রের খবর, ওই ব্যক্তি রাজীবের অত্যন্ত ঘনিষ্ঠ। রাজীবের সন্ধানের মধ্যেই সিবিআই রাডারে আরও এক পুলিশ কর্তা। সুত্রের খবর, সারদা কাণ্ডের তদন্তে ডিসি পাের্ট ওয়াকার রেজাকে ননাটিশ পাঠিয়েছে সিবিআই। সুত্রের আরও খবর, শনিবার এই। আইপিএস অফিসারকে নােটিশ পাঠান হয়েছে। কয়েক বছর আগে শুল্ক দফতরের সঙ্গে সিআইডি’র যে বৈঠক হয়েছিল, সেই নির্দিষ্ট বৈঠকের ফাইল চেয়ে পাঠিয়েছে সিবিআইয়ের তদন্তকারীরা। পাশাপাশি চাওয়া হয়েছে আরও কিছু ফাইল।

সিবিআই সূত্রে খবর, চিটফান্ড মামলার তদন্তে গঠিত স্পেশাল ইনভেস্টিগেশন টিমে ছিলেন ওয়াকার রেজা। সেই সময় তিনি ছিলেন সিআইডির স্পেশাল সুপার। সূত্রের খবর, শনিবার সিবিআইয়ের পক্ষ থেকে একটি চিঠি দেওয়া হয়েছে ডিসি পাের্ট মিরওয়াকার রেজাকে। ওই চিঠিতে জানতে চাওয়া হয়েছে, বছর তিনেক আগে তিনি যখন সিআইডির স্পেশাল সুপার ছিলেন তখন তার সঙ্গে শুল্ক দফতরের একটি বৈঠক হয়। সেই বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন রাজীব কুমারও। সেই মিটিং আলােচনার বিস্তারিত নথি চাওয়া হয়েছে মির ওয়াকার রেজার কাছ থেকে।

শনিবার সল্টলেকের সিজও কমপ্লেক্স থেকে মেইল করে ওয়াকার রেজাকে ওই চিঠি দেওয়া হয়েছে। আগামী ৭ দিনের মধ্যে প্রয়ােজনীয় নথি সিবিআইয়ের কাছে জমা দিতে বলা হয়েছে। তবে ওয়াকার রেজা ওই ধরনের কোনও চিঠি পাওয়ার কথা অস্বীকার করেছেন। বরং তিনি জানান, বর্তমানে ছুটিতে রয়েছেন। সিবিআইয়ের কোনও নােটিশ পাননি। এবং যে বৈঠকের কথা বলা হচ্ছে, সেই বৈঠকের বিষয়েও কিছু জানেন না। সিবিআই সূত্রে খবর, কলকাতা পুলিশের কমিশনার থাকাকালীন বেশ কয়েকজন ম্যাকলে কয়েকজন আইপিএস অফিসারের সঙ্গে ঘনিষ্ঠতা ছিল রাজীব কুমারের। তাদের মধ্যে রয়েছেন এই ওয়াকার রেজাও। তিনি রাজীবের খুবই কাছের মানুষ ছিলেন বলে জানা যাচ্ছে।