করোনার থেকেও ভয়ানক সাম্প্রদায়িকতার ভাইরাস, অবস্থান বিক্ষোভ নিয়ে পার্ক সার্কাসের জেদি মনোভাব নিয়ে উঠছে প্রশ্ন

করোনার জন্যও এনআরসি প্রত্যাহারের দাবিতে শুরু হওয়া অবস্থান বিক্ষোভের সিদ্ধান্ত থেকে এক ইঞ্চি সরতে নারাজ পার্ক সার্কাসের বিক্ষোভকারীরা।

Written by Tunina Mondal Kolkata | March 22, 2020 6:12 pm

পার্ক সার্কাসের গণ অবস্থান। (File Photo: IANS)

লড়াইটা করোনার সঙ্গে, বলা যেতে পারে মানব জাতির ধ্বংসের সঙ্গে। কিন্তু করোনার জন্যও এনআরসি প্রত্যাহারের দাবিতে শুরু হওয়া অবস্থান বিক্ষোভের সিদ্ধান্ত থেকে এক ইঞ্চি সরতে নারাজ পার্ক সার্কাসের বিক্ষোভকারীরা। শনিবার তারা জানান, করোনাভাইরাসের থেকেও ভয়ানক সাম্প্রদায়িকতার ভাইরাস। তাই প্রধানমন্ত্রীর জনতার কারফিউ মানছেন না তারা। 

বিক্ষোভকারীদের দাবি নিয়ে নয়, প্রশ্ন উঠছে বিক্ষোভকারীদের পন্থা নিয়ে। নিজেদের বিক্ষোভ জারি রাখতে শহরবাসীকে কি বিপদের মুখে ঠেলে দিচ্ছেন তারা? উঠছে প্রশ্ন। 

এনআরসি এবং সিএএ’র প্রদি উত্তাল হয়েছিল সারা দেশ। এনআরসি সিদ্ধান্ত প্রত্যাহারের দাবিতে সেই সময়ই কলকাতার পার্কসার্কাস ময়দানে শুরু হয়েছিল অবস্থান বিক্ষোভ। কিন্তু বর্তমানে করোনা আতঙ্কে কাঁপছে কলকাতা। এই রাজ্যে মাত্র তিনদিনে আক্রান্তের সংখ্যা ৫ জন। 

এই পরিস্থিতিতে সামাজিক দুরত্ব বজায় রাখার জন্য আবেদন করছেন প্রধানমন্ত্রী থেকে মুখ্যমন্ত্রী। রবিবার দেশজুড়ে ‘জনতার কার্ফু’ জারি করেছেন প্রধানমন্ত্রী। কিন্তু এই সিদ্ধান্ত মেনে নিতে নারাজ পার্ক সার্কাসের বিক্ষোভকারীরা। তাদের পক্ষ থেকে উত্মা আলম জানান, প্রয়োজন হলে ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে মরবো। কিন্তু ডিটেনশন ক্যাম্পে ধুকে ধুকে মরার থেকে এই মৃত্যু ভাল।

রবিবার অন্যান্য দিনের মতো পার্ক সার্কাসে তাদের অবস্থান বিক্ষোভ চলবে বলেও জানান তিনি। আর এই সিদ্ধান্ত নিয়ে উঠছে প্রশ্ন। বিক্ষোভকারীদের মধ্যে যদি করোনাভাইরাস সংক্রমিত হয় সে ক্ষেত্রে সেই সংক্রমণ প্রসারিত হওয়ার আশঙ্কা উড়িয়ে দিচ্ছেন না প্রশাসন। 

শনিবার কলকাতার মেয়র ফিরহাদ হাকিম জানান, সিএএ এবং এনআরসির বিরুদ্ধে লড়াইটা চলবে। এই লড়াইটা মানুষকে বাঁচানোর লড়াই। অন্যায়ের বিরুদ্ধে লড়াই। কিন্তু মানুষের জন্য লড়তে হলেও মানুষকে সুরক্ষিত রাখা সবার আগে প্রয়োজন। 

সেই জন্য আগামী দু-সপ্তাহ সমস্ত ধরনের আন্দোলন স্থগিত রেখে সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখা উচিত বলেও মন্তব্য করেন ফিরহাদ হাকিম। স্পষ্টভাবে উল্লেখ না করলেও রাজ্যজুড়ে যখন করোনা পরিস্থিতি জটিল হচ্ছে দিন প্রতিদিন তখন পার্ক সার্কাস ময়দানে অবস্থান স্থগিত রাখার পক্ষে মত দিয়েছেন কলকাতার মেয়র। কিন্তু সেই পথে হাঁটতে নারাজ আন্দোলনকারীরা। 

এখন প্রশ্ন, আন্দোলনকারীদের সুরক্ষার দায়িত্ব প্রশাসনেরই। সেক্ষেত্রে সার্বিক স্বার্থে আন্দোলন প্রত্যাহারের জন্য প্রশাসনের তরফে আন্দোলনকারীদের কাছে কোনও আবেদন জানানো হবে কিনা।