জেলা পরিষদের ক্ষমতা ও ভাতা দুই-ই বৃদ্ধি করলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়

সংগঠনের তৃণমূল স্তর থেকে অসন্তোষ মেটাতে জেলা পরিষদের ক্ষমতা ও ভাতা দুই-ই বৃদ্ধি করলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।

Written by SNS Kolkata | July 23, 2019 4:30 pm

মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (File Photo: Kuntal Chakrabarty/IANS)

সংগঠনের তৃণমূল স্তর থেকে অসন্তোষ মেটাতে জেলা পরিষদের ক্ষমতা ও ভাতা দুই-ই বৃদ্ধি করলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সােমবার নবান্নে বিভিন্ন জেলা পরিষদের প্রায় আটশ জন সদস্যকে নিয়ে বৈঠকে বসেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ।

পঞ্চায়েতের প্রতিটি স্তরের সদস্যরাই যাতে ভালােভাবে কাজ করতে পারেন, সে বিষয়ে তালিম দিতেই জেলা পরিষদের সদস্যদের ডেকে পাঠিয়েছিলেন মমতা।

এদিনের বৈঠকে জেলা পরিষদের সদস্যদের শুধু ভাতাই বৃদ্ধি করা হয়নি, তাদের কাজকর্মের ক্ষমতাও বৃদ্ধি করা হয়েছে। এখন থেকে কোনও প্রকল্পের কাজ বাস্তবায়িত করার জন্য আর বিধায়কদের মুখাপেক্ষী হয়ে থাকতে হবে না। এর ফলে হয়তাে বিধায়কদের ডানা ছাটা হল।

বিরােধীরা অবশ্য বলছেন, ভাতা ও ক্ষমতা বৃদ্ধি করে দলের ভাঙন রােধ করতে চাইছেন মমতা। সােমবার মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নবান্নে বলেন, জেলা পরিষদের সদস্যরা কাজের দিক থেকে হাফ এমএলএর সমতুল্য। তাদের হাতে ক্ষমতা দিলে উন্নয়নের কাজে গতি আসবে। সেই সঙ্গে জেলা পরিষদের সদস্যদের ভাতাও বৃদ্ধি করার সিদ্ধান্ত নিলেন মমতা।

জেলা পরিষদের সভাপতির ভাতা ৬,৬০০ টাকা থেকে বেড়ে ৯০০০ টাকা করা হল। সহ সভাধিপতির ভাতা ৫০০০ থেকে ৮০০০ টাকা। দাঁড়াল। বাড়ল জেলা পরিষদের কর্মাধ্যক্ষেরও ভাতা। ৪০০০ টাকা ৭০০০ টাকায় দাঁড়াল তাদের ভাতা। জেলা পরিষদের সদস্যদেরও ভাতা বাড়িয়ে ১৫০০ থেকে ৫০০০ টাকা করা হল।

কিছুজিন আগে পর্যন্ত জেলা পরিষদের সদস্যরা কিছুই পেতেন না। লােকসভা নির্বাচনের কিছুদিন আগে তাদের ভাতা দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। জেলা পরিষদের সর্বস্তরে ভাতা বৃদ্ধির জন্য রাজ্য সরকারের মােট ২২০ কোটি থেকে ২২৫ কোটি টাকার মতাে খরচ হবে। এরপর পঞ্চায়েতের বিভিন্ন স্তরেও ভাতা বৃদ্ধি করার কথা বলেছেন মুখমন্ত্রী।

মমতা এদিন বলেন, আমরা সবাই পঞ্চায়েতের কর্মীদের দোষ দিই। কিন্তু ভাবি না ওরা কীভাবে কাজ করে। অনেকের গাড়িভাড়াটুকুও থাকে না। তবে মমতার এই যুক্তি মানতে নারাজ বিরােধীরা।

বামফ্রন্টের সুজন চক্রবর্তী বলেন, পঞ্চায়েতের ৩৪ শতাংশ আসনেই তাে তৃণমূল বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জিতেছে। সেই কারণেই ভাতা বৃদ্ধি করা হলে আখেরে তৃণমূল লাভ হবে। তবে সুজনবাবুর মতে এত করেও দলের লােকেদের কাটমানি খাওয়া রােখা সম্ভব হবে না মমতা ব্যানার্জির পক্ষে।

বিজেপির পক্ষে সায়ন্তন বসু বলেছেন, কিছু না পেলে তৃণমূলের লােকজন দলে থাকবে কেন? তাই বাধ্য হয়ে দলের ভাঙন রুখতেই জেলা পরিষদের সদস্যদের ভাতা বৃদ্ধি করা হল।

কিছুদিন আগেই অবশ্য মন্ত্রী এবং বিধায়কদের হাজিরা ভাতা বৃদ্ধি করা হয়েছিল। তবে এবার বিধায়কদের ক্ষমতায় কিছুটা কাটছাঁট করলেন মমতা।

এর আগে কোনও প্রকল্পের জন্য টাকা খরচ করার আগে বিধায়কদের মুখাপেক্ষী হয়ে থাকতে হত জেলা পরিষদকে। সেই ব্যবস্থায় এবার পরিবর্তন হল। পঞ্চায়েত সমিতি বা গ্রাম সভা থেকে এবার কোনও প্রকল্প এলে তা বাস্তবায়নের জন্য সিদ্ধান্ত জেলা পরিষদের সভাপতিও নিতে পারেন। অবশ্য এক্ষেত্রে তিনি বিধায়কের সঙ্গে পরামর্শ সেরে নিতে পারেন।

উল্লেখ্য, আগে নির্বাচনের টিকিট বিলি করার ক্ষেত্রে শুধুমাত্র বিধায়করাই সিদ্ধান্ত নিতে পারতেন। এখন থেকে সেই ব্যবস্থায় পরিবর্তন এল। এখন থেকে টিকিট বিলি করতে হলে জেলা পরিষদের সদস্যদেরও মতামত নিতে হবে।

মুখ্যমন্ত্রী বলেন, তৃণমূল স্তরে বিধায়কদের থেকে অনেক বেশি কাজ করে থাকেন জেলা পরিষদের সদস্যরাই। তাই তাদের ক্ষমতাবৃদ্ধি করা হল।