শনিবারের যুবভারতী ক্রীড়াঙ্গন ছিল কানায় কানায় দর্শকে পূর্ণ। ফুটবলপ্রেমী শহরের মানুষ আশা নিয়ে ঢুকেছিলেন স্টেডিয়ামে। কিন্তু সন্ধ্যা নামতেই সেই উন্মাদনা বদলে যায় হতাশা আর ক্ষোভে। প্রিয় তারকার এক ঝলক না দেখেই বহু দর্শককে ফিরতে হয়েছে শূন্য হাতে, শূন্য বুকে। কোথাও কোথাও পরিস্থিতি এতটাই উত্তপ্ত হয়ে ওঠে যে পুলিশকে লাঠিচার্জ করতে বাধ্য হতে হয়। এদিকে এই বিশৃঙ্খলার মধ্যেই মাঠে গেরুয়া পতাকাকে কেন্দ্র করে শুরু হয়ে গিয়েছে রাজনৈতিক চাপানউতোর। ঘটনার দায় কার, তা নিয়ে সরব হয়েছে শাসক তৃণমূল কংগ্রেস এবং বিরোধী বিজেপি— দু’পক্ষই একে অপরের দিকে আঙুল তুলছে।
তৃণমূলের রাজ্য সাধারণ সম্পাদক কুণাল ঘোষ দাবি করেছেন, যুবভারতীর অশান্তির নেপথ্যে পরিকল্পিত উসকানি ছিল। তাঁর বক্তব্য, ‘ক্ষোভ প্রকাশ এক কথা, কিন্তু যাঁরা পরিকল্পিতভাবে অন্য স্লোগান নিয়ে মাঠে ঢুকে ভাঙচুর চালাল, তারা ক্রীড়াপ্রেমী হতে পারে না।’ সামাজিক মাধ্যমে আরও কড়া ভাষায় তিনি বিজেপিকে আক্রমণ করে লেখেন, ‘বাংলা-বিরোধী বিজেপি বাংলাকে বদনাম করতে যেকোনও সীমা ছাড়াতে পারে।’
Advertisement
গেরুয়া পতাকার প্রসঙ্গ টেনে কুণালের অভিযোগ আরও স্পষ্ট। তাঁর দাবি, ‘আজ আমরা দেখেছি বিজেপি-সমর্থিত দুষ্কৃতীরা মাঠে ঢুকে উসকানি দিয়ে অশান্তি সৃষ্টি করার চেষ্টা করেছে। তারা গেরুয়া পতাকা বহন করছিল এবং স্লোগান দিচ্ছিল। দর্শকদের ক্ষোভের সুযোগ নিয়ে এরা বিশৃঙ্খলা করেছে। এটা শকুনের রাজনীতি।’
Advertisement
তবে এই অভিযোগ মানতে নারাজ বিজেপি। পাল্টা তোপ দেগেছেন বঙ্গ বিজেপির প্রাক্তন রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার। তাঁর বক্তব্য, গোটা ঘটনাই তৃণমূলের সাজানো নাটক। সুকান্তের আরও প্রশ্ন, ‘যদি জয় শ্রীরাম স্লোগান দেওয়ারই উদ্দেশ্য থাকত, তাহলে ঘটনা ঘটার আগেই দেওয়া যেত। বিশৃঙ্খলার পর কেন এই স্লোগান উঠল? সবটাই পরিকল্পিত।’
প্রসঙ্গত, যে দিন আনন্দে ভাসার কথা ছিল, সেই দিনই যুবভারতী পরিণত হল রাজনৈতিক তরজার মঞ্চে। নিরাপত্তা, ব্যবস্থাপনা এবং জনতার ক্ষোভ— সব মিলিয়ে যে প্রশ্নগুলো উঠে এসেছে, তার স্পষ্ট উত্তর এখনও অধরা।
Advertisement



