কোন রাস্তায় কত গাছ? কোন পার্কে কোন প্রজাতির বৃক্ষ? এতদিন এই প্রশ্নের উত্তর পাওয়া যেত আন্দাজে। কিন্তু এবার সেই যুগের অবসান। কলকাতার সবুজকে আরও সুরক্ষিত ও নথিভুক্ত রাখতে এক নতুন পদক্ষেপ নিতে চলেছে কলকাতা পুরসভা। শহরে প্রথমবার শুরু হচ্ছে ‘ডিজিটাল ট্রি ম্যাপিং প্রকল্প’। যেখানে প্রযুক্তির মাধ্যমে গাছের প্রতিটি তথ্য থাকবে নাগরিকদের হাতের মুঠোয়।
পুরসভা সূত্রে খবর, এই প্রকল্পের জন্য খুব শীঘ্রই দরপত্র ডাকা হবে। মাঠপর্যায়ে সমীক্ষা চালিয়ে প্রতিটি গাছের অবস্থান, প্রজাতি, উচ্চতা, বয়স ও স্বাস্থ্য সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য সংগ্রহ করা হবে। সেই সমস্ত তথ্য পরে আপলোড করা হবে পুরসভার নির্দিষ্ট ওয়েবসাইট ও অ্যাপে। ফলে যে কেউ মোবাইল বা কম্পিউটারের মাধ্যমে জানতে পারবেন কোন রাস্তায় কতগুলি গাছ রয়েছে, কোন গাছ সুস্থ, কোনটি অসুস্থ কিংবা রক্ষণাবেক্ষণের প্রয়োজন।
পুরসভার এক আধিকারিক জানান, ‘আমরা নিউ ইয়র্ক সিটির একটি অ্যাপ থেকে অনুপ্রাণিত হয়েছি। সেখানে গোটা শহরের গাছের ডিজিটাল ম্যাপ দেখা যায়।
Advertisement
কলকাতাতেও তেমনই একটি সিস্টেম চালু করার লক্ষ্য নিয়েই এগোচ্ছি।’ বর্তমানে পুরসভার কাছে শহরের মোট গাছের কোনও নির্দিষ্ট পরিসংখ্যান নেই। উদ্যান দপ্তরের অনুমান, রাস্তা ও পার্ক মিলিয়ে প্রায় সাড়ে তিন লক্ষ গাছ থাকতে পারে। কিন্তু এবার সেই অনুমান নয়, বাস্তব পরিসংখ্যানই তুলে আনবে ‘ফিল্ড সার্ভে’। প্রয়োজনে ড্রোনের সাহায্যেও করা হবে সমীক্ষা।
Advertisement
উদ্যান বিভাগের মেয়র পরিষদ দেবাশিস কুমার বলেন, ‘শহরের সবুজের পূর্ণাঙ্গ সমীক্ষা শুরু হয়েছে। নাগরিকরা ডিজিটাল মাধ্যমে শহরের গাছ সম্পর্কিত সব তথ্য দেখতে পারবেন। এতে গাছের যত্ন ও সংরক্ষণ আরও সহজ হবে।’ উল্লেখ্য, ২০২০ সালের ঘূর্ণিঝড় ‘আমফান’-এর তাণ্ডবে কলকাতায় অসংখ্য গাছ উপড়ে পড়েছিল। পরে পুরসভা দাবি করে, এক লক্ষেরও বেশি নতুন গাছ রোপণ করা হয়েছে।
তবুও প্রতিবছরই ঝড়-বাদলে বহু গাছ ভেঙে পড়ে। এই পরিস্থিতিতে চলতি বছরে গাছের স্বাস্থ্য পরীক্ষা শুরু হয় মেয়রের নির্দেশে। সেই সমীক্ষায় শতাধিক গাছকে ‘অসুস্থ’ বলে চিহ্নিত করা হয়েছে। ঠিক তখনই নিউ ইয়র্কের ডিজিটাল ট্রি ম্যাপের মডেল পুরসভার নজরে আসে। সেই ভাবনা থেকেই কলকাতার জন্য তৈরি হচ্ছে এক আধুনিক ডিজিটাল সবুজ ডেটাবেস।
Advertisement



