কেন্দ্রীয় সরকারের সব দপ্তরে ই-মেল পরিষেবার প্ল্যাটফর্ম বদলানো নিয়ে সংসদে প্রশ্নের ঝড় উঠেছে। দাবি করা হচ্ছে, বিদেশি সংস্থার পরিষেবা ছেড়ে দেশজ জোহো ব্যবহারের ফলে খরচ কমেছে। কিন্তু আসল প্রশ্ন, এই পরিবর্তন করতে কত খরচ হয়েছে? তৃণমূল সাংসদ অভিষেকের সেই প্রশ্নের উত্তরই দিচ্ছে না কেন্দ্রের মোদী সরকার।
এ প্রসঙ্গে কেন্দ্রীয় ইলেকট্রনিক্স এবং তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রী জিতিন প্রসাদ সংসদে জানিয়েছেন, গত কয়েক মাসে দেশের ১২ লক্ষ ৬৮ হাজার সরকারি ই-মেল অ্যাকাউন্ট জোহো প্ল্যাটফর্মে নিয়ে আসা হয়েছে। এর মধ্যে সরকারি কর্মীদের অ্যাকাউন্টই ৭ লক্ষ ৪৫ হাজার। ডিজিটাল ইন্ডিয়া রোডম্যাপের অংশ হিসেবেই এই সিদ্ধান্ত বলে দাবি মোদী সরকারের। সেই সঙ্গে বলা হয়েছিল, ‘দেশজ’ পরিকাঠামোর উপর ভরসা রাখলে খরচ কমবে, তথ্যও থাকবে দেশের মধ্যেই।’
Advertisement
কিন্তু তৃণমূল সাংসদ অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় যে গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন তুলেছেন, তার কোনও উত্তর মেলেনি। তিনি জানতে চেয়েছিলেন, ‘আগের প্ল্যাটফর্ম থেকে জোহোতে আসতে সফটওয়্যার-লাইসেন্স বাবদ কত খরচ হয়েছে?’ ‘নতুন ডিজিটাল পরিকাঠামো গড়তে কত টাকা লেগেছে?’
‘প্রশিক্ষণের জন্য বা কার্যকারিতা বাড়াতে কত ব্যয় হয়েছে?’ এসব প্রশ্ন সম্পূর্ণ এড়িয়ে গিয়েছে কেন্দ্র।
Advertisement
এ ব্যাপারে জিতিন প্রসাদ লিখিত জবাবে জানিয়েছেন, জোহো কেন বাছাই করা হয়েছে, কোন শর্ত মানতে হবে, কী পরিষেবা দিচ্ছে তারা, সমস্যা হলে বিকল্প কী— এসব তথ্যই মূলত দেওয়া হয়েছে। এমনকী জোহোর বিভিন্ন সাবস্ক্রিপশন প্ল্যানও উল্লেখ করা হয়েছে। কিন্তু এই পরিবর্তনে ব্যয়ের অঙ্ক নিয়ে একটি শব্দও খরচ করেনি মোদী সরকার।
বিষয়টি নিয়ে আরও প্রশ্ন উঠছে। কারণ কয়েক মাস আগে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ থেকে রেলমন্ত্রী অশ্বিনী বৈষ্ণব— অনেকেই প্রকাশ্যে জানিয়েছেন যে, তাঁদের ই–মেল অ্যাকাউন্ট ইতিমধ্যেই জোহোতে চলে গিয়েছে। সরকার এটিকে ‘দেশজ প্রযুক্তির সাফল্য’ হিসেবে তুলে ধরেছে।
কিন্তু এই বিপুল পরিবর্তনের জন্য কত খরচ হয়েছে, সরকার সেটা যেমন এড়িয়ে গিয়েছে, তেমনই অমীমাংসিত রয়ে গিয়েছে নতুন প্ল্যাটফর্মে দক্ষতা বাড়াতে কী প্রশিক্ষণ দেওয়া হচ্ছে, সেটা নিয়েও।
তৃণমূলের অভিযোগ, সরকার কি কিছু চেপে যেতে চাইছে? খরচ ও প্রশিক্ষণ সংক্রান্ত প্রশ্ন এড়িয়ে যাওয়াই কি তার ইঙ্গিত? সংসদে সরকারের এই নীরবতা নিয়ে নতুন করে রাজনৈতিক জল্পনা বাড়িয়েছে।
Advertisement



